পিঁপড়া

Comments · 458 Views

পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান বইয়ের দশম অধ্যায়ে ‘পিঁপড়া’র কথা উল্লেখ আছে।

পিঁপড়া (Ant) Hymenoptera বর্গের অন্তর্ভুক্ত Formicidae পরিবারের সদস্যদের জন্য ব্যবহৃত একটি সাধারণ নাম। এরা এক ধরনের সামাজিক কীট বা পোকা। এদের পিপীলিকাও বলা হয়। জীবাশ্মের রেকর্ড মতে, ১৫ কোটি বছর আগে অর্থাৎ জুরাসিক যুগের শেষ দিকেও এদের অস্তিত্ব ছিল। এখন পর্যন্ত জানা প্রায় ২২ হাজার পিপীলিকার প্রজাতির মধ্যে ১২ হাজার ৫০০টির শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রায় আট হাজার প্রজাতির পিঁপডার বর্ণনা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২৫০ প্রজাতির পিঁপড়ার কথা জানা যায়। এর মধ্যে অধিক পরিচিত জাতগুলোকে সাধারণভাবে লাল পিঁপড়া, কালো পিঁপড়া, ডেয়ো পিঁপড়া, বিষ পিঁপড়া, খুদে পিঁপড়া ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। সব ধরনের পিঁপড়াই মৌমাছি, বোলতা ও উইপোকার মতো সমাজবদ্ধ অর্থাৎ কলোনি করে থাকে। প্রতিটি কলোনিতে রানি, শ্রমিক ও পুরুষ—এই তিন জাতের সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়। একেকটি কলোনিতে কয়েক ডজন থেকে বহু হাজার সদস্য থাকতে পারে। সাধারণত বন্ধ্যা স্ত্রী পিঁপড়াগুলো  শ্রমিক পিঁপড়া হয়। একটি রানি পিঁপড়া লক্ষাধিক বাচ্চা দিতে পারে। অন্যান্য পিঁপড়ার পাখা না থাকলেও রানিদের পাখা গজায়। বেশির ভাগ পিঁপড়া লাল ও কালো রঙের হয়; কিন্তু অনেক স্থানে সবুজ পিঁপড়ারও সন্ধান পাওয়া যায়।  

পিঁপড়া প্রায় সবই খায়। তবে চিনিযুক্ত খাবার, যেমন ফল-ফুলের রস, পচনশীল মৃত প্রাণী, উদ্ভিদভোজী কীটপতঙ্গের দেহ নিঃসৃত মিষ্টি রস ইত্যাদি পিঁপড়ার পছন্দের খাবার। এদের কান নেই। হাঁটু ও পায়ে আছে বিশেষ এক ধরনের সেনসিং ভাইব্রেশন, যার মাধ্যমে আশপাশের পরিস্থিতি বুঝতে পারে। পোকামাকড়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী এরা এবং শরীরের ওজনের চেয়েও ২০ গুণ বেশি ওজন বহন করতে পারে। পিঁপড়া কখনোই ঘুমায় না। এরা পানির তলদেশে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাঁচতে পারে। পিঁপড়ের পেট দুটি। একটিতে নিজের জন্য খাদ্য জমা রাখে, অন্যটিতে অন্যের জন্য!

পিঁপড়া সর্বদা একই রেখায় চলে। চলার পথে প্রতিটি পিঁপড়াই এক ধরনের তরল পদার্থ ফেরোমন নির্গত করে। ফলে পেছনে থাকা পিঁপড়াগুলো সামনেরগুলোকে অনুসরণ করতে পারে। পিঁপড়ার ফুসফুস নেই। তবে শরীরে অনেক সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ছিদ্র থাকে, যার মাধ্যমে শরীরের ভেতর ও বাইরে অক্সিজেন চলাচল করে। এদের শরীরের গঠন এমন, উড়ন্ত উড়োজাহাজ থেকে ফেলে দিলেও সামান্যতম ব্যথা পাবে না। এরা পরিশ্রমী ও দূরদর্শী। শীতকালে খাবার সংগ্রহ করতে কষ্ট হবে বলে এরা গ্রীষ্মকালেই শীতকালের খাবার মজুদ করে রাখে।                         

Comments

সহজ এফিলিয়েট

ঘরে বসে সহজ আয়

ফেসবুক চালাতে পারলেই আয় করতে পারবেন

এখনি শুরু করুন