মক্কার রুপসি নারী প্রেমের প্রস্তাব করলো ওবায়েদ ইবনে ওমায়ের (র) কে.. অতপর

Yorumlar · 1650 Görüntüler

আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তোমাকে কয়েকটি প্রশ্ন করব। যদি ঠিক ঠিক উত্তর দিতে পারো, তবে আমি তোমার বিষয়টি ভেবে দেখব

এক রূপসী – সুন্দরী নারী। মক্কার বাসিন্দা। স্বামী আছে। সংসার আছে। আছে সবকিছু। সৌন্দর্যের এক অপার্থিব দয়ুতি সর্বদা খেলা করে তাঁর দেহে। কিন্তু তাঁর মধ্যে দীনদারী ছিল না। ছিল না তাকওয়া – পরহেজগারী।

সৌন্দর্যের মূর্ত প্রতীক এই নারী নিজের রূপ-সৌন্দর্যকে আরো বহুগুণে বাড়িয়ে তোলার জন্য নিয়মিত রূপচর্চা করে। সাজসজ্জা করে। দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজকর্মের মধ্যে কারণে অকারণে হয়তো কোনো কোনো কাজ তাঁর বাদ যায়, কিন্তু যে কাজটি তাঁর কোনোদিন বাদ যায় না তা হলো-রূপচর্চা। এই রূপচর্চার জন্য সে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করে।

একদিন সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রূপচর্চা করছিল। আর নিজের সৌন্দর্যে নিজেই বিমোহিত হচ্ছিল। পাশেই বসা ছিল স্বামী। আর পুলক অনুভব করছিলের রূপের রাণীকে দেখে।

এক পর্যায়ে মেয়েটি তাঁর স্বামীকে বলল, এ চেহারা দেখে কে না আসক্ত হবে? কার না হৃদয়বীণায় ঝংকার উঠবে? কে না আমাকে পেতে চাইবে?
স্বামী বললেন, ঠিক বলেছ!

স্ত্রী বলল, বলতো মক্কার কে কে আসক্ত হতে পারে আমাকে দেখে?
সবাই! এমনকি ওবায়েদ ইবনে ওমায়েরও । সারাক্ষণ যিনি কাবার আঙ্গিনায় ইবাদতে মশগুল থাকেন।

স্ত্রী এবার বলল, আচ্ছা, আমি যদি তাঁকে আমার নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে আমার চেহারা তাঁর সামনে মেলে ধরি, তবে কি তুমি অনুমতি দেবে?
হ্যাঁ, পারলে করো।

মেয়েটি তখন মাসআলা জিজ্ঞেস করার ছুতায় মসজিদুলে হারামের এক কোণে ওবায়েদ ইবনে ওমায়ের (রহঃ)-এর সাথে দেখা করল এবং এক সুযোগে হঠাৎ তাঁর সামনে নিজের চেহারার নেকাব খুলে ফেলল। মনে হলো, ঘণ মেঘের আড়াল থেকে চতুর্দশীর চাঁদ যেন বেরিয়ে এল।

হযরত ওবায়েদ ইবনে ওমায়ের (রহঃ) সঙ্গে সঙ্গে স্বীয় দৃষ্টি নীচু করলেন। বললেন, হে আল্লাহর বান্দী! আল্লাহকে ভয় করো। চেহারা আবৃত করো।

মেয়েটি বলল, আমি আপনার সৌন্দর্যে মুগ্ধ! আমি আপনার প্রেমে পড়েছি!!

তাই?!

আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তোমাকে কয়েকটি প্রশ্ন করব। যদি ঠিক ঠিক উত্তর দিতে পারো, তবে আমি তোমার বিষয়টি ভেবে দেখব।

মেয়েটি বলল, বলুন।

আমার প্রথম প্রশ্ন হলো, যদি তোমার রূহ কবয করার জন্য আযরাইল এসে উপস্থিত হয়, তবে কি এ অবস্থায় তুমি চাইতে যে, আমি তোমার প্রেমের ডাকে সাড়া দেই?

না। মেয়েটি বলল।

আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, যদি তোমাকে মুনকার-নাকীর ফেরেশতাদ্বয়ের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য বসানো হয়, তবে কি এ অবস্থায় তুমি চাইতে যে, আমি তোমার ভালোবাসার আহবানে সারা দেই?

অসম্বভ।

আমার তৃতীয় প্রশ্ন হলো, হাশরের ময়দানে যখন মানুষের আমলনামা দেওয়া হবে, তখন অন্যান্য মানুষের মতো তোমারও জানা থাকবে না যে, তুমি কোন হাতে আমল নামা পাবে-ডান হাতে না বাম হাতে। এই কঠিন অবস্থায় কি তুমি আমার ভালোবাসার পয়গাম শোনাতে পারতে?

না।

আমার চতুর্থ প্রশ্ন হলো, যখন পাপ –পুন্য ওজন করা হবে, আর তোমার জানা থাকব না যে, তোমার নেকীর পাল্লা ভারী হবে না হালকা হবে তখন কি তুমি রূপের যাদু দিয়ে আমাকে কাবু করতে আসতে পারতে?

কল্পনায়ই করা যায় না।

আমার পঞ্চম হলো, কিয়ামতের মাঠে তুমি যদি আল্লাহ পাকের সামনে গোটা জিন্দেগীর হিসেব দিতে দণ্ডায়মান হতে, অথচ তোমার জানা নেই যে, আল্লাহ পাক তোমার জন্য কী ফয়সালা করেন, তবে কি এমতাবস্থায় তুমি তোমার প্রেমের প্রস্তাবটি আমার সামনে পেশ করতে পারতে?

তা কি করে হয়!

এবার হযরত ওবায়েদ (রাহঃ) বললেন, তাহলে হে আল্লাহর বান্দী! আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ পাক তোমাকে রূপের নেয়ামতসহ যেসব নেয়ামত দিয়েছেন, সেগুলোর শোকর আদায় করো। অকৃতজ্ঞ হয়ো না।

মেয়েটি জ্বী আচ্ছা বলে স্বামীর কাছে ফিরে এল। স্বামী তাঁকে দেখেই জিজ্ঞেস করল, কী করে এলে?

মেয়েটি বলল, সেখানে গিয়ে আমার চোখ খুলে গেছে। আমি বুঝতে পেরেছি যে, আমি আমার জীবন যেভাবে পরিচালনা সেভাবে পরিচালনা করলে আখেরাতে আমার জন্য কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। সুতরাং আমি আর আগের মতো ইবাদতহীন অবস্থায় নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকতে পারি না। অতীতের পাপ কর্মের জন্য তাওবা করে যে কোনো মূল্যে অবশ্যই আমাকে আখেরাতে কঠিন সফরের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে।

এরপর থেকে সত্যি সত্যি মেয়েটির জীবন পরিবর্তন হয়ে গেল। ইবাদত বন্দেগী শুরু হলো। তাঁকে এখন দেখা যায়, কখনো নামাযে, কখনো তিলাওয়াতে আবার কখনো জিকিরে মগ্ন। কখনো বা সিয়াম সাধনায় কেটে যাচ্ছে দিনের পর দিন। সেই সাথে বেড়ে গেছে, স্বামীর মন খুশি করার বিরামহীন অধ্যাবসায়। কেননা সে শুনেছে যে, একদা নবীজি (সাঃ) এক মহিলা সাহাবীকে বলেছেন, ওহে মহিলা! স্বামী হলো তোমার জান্নাত কিংবা জাহান্নাম। অর্থাৎ স্বামীর মন খুশি করে তুমি যেমন জান্নাত লাভ করতে পারো, তেমনি তাঁকে নাখোশ করে তুমি জাহান্নামের ভাগীও হতে পারো।

প্রিয় মা ও বোনেরা! এই ঘটনা পাঠ করে আপনারাও কি নিজকে পূর্ণ রূপে আল্লাহর পথে সঁপে দেওয়ার ইরাদা করতে পারেন না? হ্যাঁ, আমার বিশ্বাস, আপনারা পারবেন। আল্লাহ পাক আপনাদের তাওফীক দিন। আমীন।।

বেশি বেশি শেয়ার করুন।

Yorumlar
Puja Kumari 6 yıl

well

 
 

সহজ এফিলিয়েট

ঘরে বসে সহজ আয়

ফেসবুক চালাতে পারলেই আয় করতে পারবেন

এখনি শুরু করুন