.
তোতা বলল- হিন্দুস্তানে আমার জাত ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হইলে আমার বন্দিদশার কথা বলে জানতে চাইবেন- 'এ থেকে মুক্তির উপায় কী?'
.
সওদাগর মুচকি হেসে মনেমনে বললো - আমি না ছাড়লে আবার মুক্তি পাস্ ক্যামনে?'
.
কিন্তু মুখে তোতাকে ওয়াদা দিলো- জিজ্ঞেস করবে।
.
ব্যবসা-বাণিজ্য ও কেনাকাটা শেষ, সওদাগর নিজ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
.
কিন্তু তোতার ফরমায়েশের কথা গেলো ভুলে।
.
তাত্ক্ষনিক মনে হতেই সওদাগর দেখলো এক ঝাঁক তোতা মাথার উপর যাচ্ছে উড়ে । ওয়াদা রক্ষার্থে জানতে চাইলো- 'অমুক দেশে তোমাদের এক জাত ভাই খাঁচায় বন্দী , বাঁচার উপায় জানতে চেয়েছে তোমাদের কাছে।''
.
এমন কথা শুনেই একটা তোতা চট করে মাটিতে পড়ে গেলো মরে !
.
সওদাগর জিহ্ববায় ঠোঁট কেটে আক্ষেপ করলো পাখিটিকে বদ খবর দিয়ে হত্যা করেছে বলে।।
.
বিরস মনে সওদাগর ফিরলো বাড়ি। যার যার জিনিস তাকে দিলো। তোতারে দিলো ফাঁকি।
.
সওদাগর তোতার ঘরে যায় না। জাত ভাইরে হত্যা করেছে সেই লজ্জায়।
.
একদিন বেখেয়ালে ঢুকে পড়লো তোতার ঘরে।
.
সওদাগর থতমত করে কেটে পড়তে চাইলে ওয়াদার কথা স্বরণ করিয়ে দিলো।
.
সওদাগর খাইলো ধরা।
.
আমতা আমতা করে অবশেষে বললো সত্যি কথা ।
.
যেই না শুনলো, জাত ভাই উড়ন্ত অবস্থায় বন্দিদশার কথা শুনে হার্টব্লক করে মরেছে-তেমনি এই তোতাও ধপ করে পড়ে মরে গেলো।
.
ভাই-বেরাদার দূর হিন্দুস্থানে থেকে দুঃখের খবর শুনে হার্টব্লক হয়ে মারা গেছে- এমন খবরে কে-ই বা ঠিক থাকে।
.
সওদাগর আবার দুষলো নিজেকে ।
.
শোকাহত হয়ে মরা তোতাকে যেই না বাহিরে ফেললো- তোতা দিলো ফুড়ুত। বসলো গিয়ে ডালে।
.
সওদাগর হতভম্ব ! বলল-এইটা কী হলো?
.
তোতা বলল -হিন্দুস্থানে যে তোতা আমার দুঃখের সংবাদ শুনে মারা গেছে, সে আসলে মরে নাই। মরার ভান করে আমাকে খবর পাঠালো, আমিও যেন ভান করি। তবেই খাঁচা থেকে মুক্তি পাব।