ব্রাহ্মী শিলালিপি

Comments · 462 Views

ব্রাহ্মীলিপি ব্রাহ্মী রীতিতে উত্কীর্ণ একটি খণ্ডিত শিলালিপি।

শিলালিপি বাংলাদেশের বগুড়া জেলার মহাস্থানে পাওয়া গেছে। অনেকে এটাকে মহাস্থান ব্রাহ্মীলিপিও বলে থাকেন। এটি হচ্ছে বাংলার প্রাচীনতম লিপিতাত্ত্বিক দলিল। সাত লাইনের দলিল উত্কীর্ণ করা হয়েছে একটি গোলাকৃতি পাথরের ওপর, যার অংশবিশেষ ভেঙে গেছে। লেখমালার আঙ্গিক বিচারে শিলালিপিটিকে মৌর্য যুগের (আনুমানিক তৃতীয় খ্রিস্টপূর্বাব্দ) বলে ধরা হয়। শিলালিপিটির ভাষা মাগধী প্রভাবিত প্রাকৃত ভাষা।

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মহাস্থানের পুণ্ড্রনগরে তৎকালীন কর্তব্যরত মহামাত্রের (প্রধান রাজকর্মচারী) নিকট জারীকৃত জনৈক শাসকের একটি আদেশ এই ব্রাহ্মী শিলালিপিতে লিপিবদ্ধ করা হয়। এতে সংবঙ্গীয় নামে পরিচিত শহর শহরতলির অধিবাসীদের দুর্দশা দূর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিলালিপিতে চারটি প্রয়োজনীয় জিনিসের কথা বলা হয়েছে। যেমনতেল (তৈল), ডুম (গাছ), ধান্য (ধান) এবং দুই ধরনের ক্ষুদ্রাকৃতি মুদ্রা, যার নাম গণ্ডা। গণ্ডা হচ্ছে একটি গণনার একক। চার কড়িতে এক গণ্ডা।

ব্রাহ্মী শিলালিপিতে উল্লিখিত নির্দিষ্ট গোলাঘর প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীতে পূর্ণ করার নির্দেশ ছিল, যাতে জরুরি অবস্থা, যেমনবন্যা, অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে শস্য নষ্ট হলে তার মোকাবেলা করা যায়। শিলালিপির ঐতিহাসিক গুরুত্ব এখানে যে, এটি পুণ্ড্রবর্ধন অঞ্চলে মৌর্য শাসনের প্রাচীনতম সাক্ষ্য বহন করছে। শিলালিপি বাংলার যেকোনো অঞ্চলের মধ্যে প্রথম নগরায়ণের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়। এটি পুণ্ড্রবর্ধন অঞ্চলে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কড়ি প্রচলনের বিষয়েও সাক্ষ্য বহন করে। লিপি থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনগণের দুর্দশার কথা এবং দুর্গতদের সাহায্যের জন্য গৃহীত প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পর্কেও জানা যায়।

Comments

সহজ এফিলিয়েট

ঘরে বসে সহজ আয়

ফেসবুক চালাতে পারলেই আয় করতে পারবেন

এখনি শুরু করুন