ভিবিন্ন ব্র্যান্ডের টিভির দাম যেনে নিন


বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে টেলিভিশন। কিন্তু পুরনো টিভি তো অনেক দিন চলল। এবার কি নতুন টিভি কেনার কথা ভাবছেন?

.

আপনার বাজেট নিতান্ত কম না হলে ৪-কে রেজ্যুলেশনের ডিজিটাল টিভি কিনুন। টিভির সঙ্গে যে কাগজপত্র দেওয়া থাকে সেটি পড়ে আপনি এই রেজ্যুলেশনের মাত্রা জানতে পারেন। ৮-কে রেজ্যুলেশনের টিভি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। এগুলোর দাম এখনো অনেক বেশি।

১২০ হার্জের কম রিফ্রেশ রেটের টিভি কিনবেন না। ইমেজ শো করানোর জন্য একটি মনিটর সেকেন্ডে কতবার রিফ্রেশ করে, তারপরিমাপকে রিফ্রেশ রেট বলে। প্রচলিত এলইডি-এলসিডি টিভির থেকে ও এলইডি একটু বেশি দামের হলেও এগুলো তুলনামূলকভাবে ভালো। আধুনিক প্রযুক্তির চিকন পর্দার টিভি কিনলে আলাদা সাউন্ডবার কেনার চেষ্টা করুন। চিকন পর্দার টিভিতে সাউন্ড মনের মতো পাওয়া যায় না।

 

এলসিডি, প্লাজমা নাকি এলইডি?
বাজারে থাকা এলসিডি, প্লাজমা ও এলইডি এ তিন প্রযুক্তির টেলিভিশনের মধ্যে এলসিডি দাম তুলনামূলকভাবে কম। প্রাথমিক ধারণার পর আপনাকে টিভি স্ক্রিন সম্পর্কে জানতে হবে। ভালো স্ক্রিন চিনতে ভুল করলে আপনার সব আয়োজন মাটি। সাশ্রয়ী বাজেট হলে উজ্জ্বল ও অত্যন্ত হালকা-পাতলা এ টেলিভিশনগুলো আপনার জন্য জুতসই হতে পারে। এলসিডি টেলিভিশনকে বলা হয় বিদ্যুত্ সাশ্রয়ী। তবে প্লাজমা ও এলইডি টেলিভিশনের তুলনায় এলসিডিতে ছবির মান খারাপ বা কম বাস্তব সম্পন্ন মনে হতে পারে। এদিকে, এলসিডির তুলনায় প্লাজমা টিভিতে স্বচ্ছ ও ঝকঝকে ছবি দেখা যায়। দ্রুতগতির খেলাধুলা উপভোগ করার জন্য প্লাজমা টিভির সবচেয়ে ভালো বলে ব্যবহারকারীরা মতামত দেন। তবে, প্লাজমা টেলিভিশনে বেশি বিদ্যুত্ খরচ হয়। এলইডি টিভির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, এই টেলিভিশন সবচেয়ে কম বিদ্যুত্ খরচ করে। লাইট এমিটিং ডায়োড বা এলইডি টিভিতে কনট্রাস্ট রেশিও উন্নত, কিন্তু এলইডি টিভির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে বর্তমানে এলইডি, এলসিডি ও প্লাজমা টিভি চেনার বিষয়টি কষ্টকর হতে পারে। এখন টিভি নির্মাতারা ‘এলইডি প্লাস’ ও ‘সুপার এলইডি’ নামেও টিভি বাজারজাত করছে। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, দুই লাখ বা তার বেশি দামের ভালো ব্র্যান্ডের টিভি না হলে ফুল-অ্যারি এলইডি বা সত্যিকারের এলইডি স্ক্রিনযুক্ত টিভি পাওয়ার নিশ্চয়তা কম। কম দামি টিভিতে এলইডি, এলসিডি বা প্লাজমার পার্থক্য বের করা কঠিন। এর মধ্যে প্লাজমা টিভিতে উন্নত কালো স্তর পাওয়া সম্ভব কিন্তু কোনো কারণে এই টিভিতে সমস্যা দেখা দিলে তা মেরামত করা কঠিন হবে। তাই এলসিডি বা এলইডির দিকে যাওয়ায় ভালো।

 

স্ক্রিনের আকার কোন আকারের টিভি কিনবেন?

কত ইঞ্চি টিভি কিনবেন, সেটি নিয়েও অনেকে দ্বিধায় থাকেন। স্ক্রিনের সাইজ নির্ধারণ করতে হলে কত দূরত্বে বসে টিভি দেখবেন সেটি হিসাব করা দরকার। টেলিভিশন কেনার ক্ষেত্রে প্রথম যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে তা হচ্ছে, বাড়িতে কোথায় বসে টেলিভিশন দেখা হবে সেটি বিবেচনায় রাখা। টেলিভিশন ও দর্শকের বসার দূরত্ব অনুযায়ী টেলিভিশনের মাপ নির্বাচন করা উচিত। টিভি যত বড় হয় দেখতে তত সুবিধা। যদি টিভি দেখার দূরত্ব আট ফুট হয় তবে টেলিভিশনের মাপ হতে হবে কমপক্ষে ৩২ ইঞ্চি এবং সর্বোচ্চ ৬৫ ইঞ্চি। তবে বলা হয়, আপনি যত বেশি পিক্সেলের টিভি কিনবেন, ছবি তত ভালো।

এ সূত্র অনুযায়ী বাজেটের মধ্যে এ মাপের যেকোনো মডেল কিনতে পারেন। তবে, টিভি কেনার ক্ষেত্রে সূত্রের চেয়ে সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় বড় কথা।

 

স্মার্ট টিভি

মোবাইল যেমন স্মার্টফোন প্রযুক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে, ঠিক তেমনি টিভির ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। এখনকার দিনে তাই স্মার্ট টিভি কেনা বুদ্ধিমানের কাজ।

স্মার্টফোনের মতো স্মার্ট টিভিতে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে বিভিন্ন অ্যাপ, অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যায়। অধিকাংশ টিভিতে ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা যেমন নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও এবং ইউটিউবের বিশেষ অ্যাপ থাকে।

টিভি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো স্মার্ট টিভিতে আলাদা আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করে। স্মার্ট টিভি কেনার আগে দেখতে হবে ওয়াই-ফাই সুবিধা আছে কি না। যে টিভি ওয়াই-ফাই রেডি, তাতে ইন্টারনেট চালাতে পৃথক ডংগল লাগবে। স্মার্ট টিভি কেনার আগে আরও দেখে নিতে হবে এতে ইউএসবি পোর্ট সুবিধা আছে কি না। ইউএসবি পোর্ট থাকলেই যে এক্সটার্নাল হার্ডড্রাইভ বা পেনড্রাইভ সমর্থন করবে এমন নয়। স্মার্ট টিভি কেনার আগে তা পোর্টেবল হার্ডডিস্ক বা কোন ধরনের ডিজিটাল ফরম্যাট সমর্থন করে, তা অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে।

বাজারে এখন মানহীন টিভিতে সয়লাব, যা চোখের ক্ষতি করে। তাই কেনার আগে দেখতে হবে টিভিতে চোখের সুরক্ষাযুক্ত কাচ আছে কি না।


ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল ঠিক আছে?

টেলিভিশন দেখার সময় একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল বা বিভিন্ন কোণ থেকে টিভি দেখার সুবিধা-অসুবিধার বিষয়টি। অনেক টেলিভিশন ব্যবহারকারীর মতে, অনেক সময় পাশ থেকে টেলিভিশন দেখলে তা ঘোলা দেখায় বা ছবি ও রং কিছুটা বদলে যায়। এটা হয় ভিউয়িং অ্যাঙ্গেলের কারণেই। কেননা ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল কম হলে পাশ থেকে দেখার কারণে ছবির রং বদলে যাবে। আর ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল বেশি হলে আপনি যতই পাশে থেকে দেখুন না কেন, ছবির রঙের কোনো পরিবর্তন হবে না। তাই টেলিভিশন সেট কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে এর ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল পরীক্ষা করে নিন। কিছু টেলিভিশনে কেবল সামনাসামনি বসলেই তা ভালোভাবে দেখা যায়। পাশ থেকে দেখলে রঙের পরিবর্তন ঘটে। এ পরিবর্তন মূলত টুইস্টেড নেমাটিক, ভার্টিক্যাল অ্যালাইমেন্ট ও ইন-প্লেন সুইচিং (আইপিএস) প্যানেলের ওপর নির্ভর করে। তাই টেলিভিশন সেট কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে এর ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল পরীক্ষা করে নিন। অনেক সময় পাশ থেকে টেলিভিশন দেখলে তা ঘোলা দেখায় বা ছবি ও রং কিছুটা বদলে যায়। এটা হয় ভিউয়িং অ্যাঙ্গেলের কারণেই। এ ক্ষেত্রে ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল কম হলে পাশ থেকে দেখার কারণে ছবির রং বদলে যায়। আর ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল বেশি হলে আপনি যতই পাশ থেকে দেখুন না কেন, ছবির রঙের কোনো পরিবর্তন হবে না।

 

থ্রি-ডি টিভি কেমন

কয়েক বছর আগেও থ্রি-ডি টিভি ছিল বিস্ময়ের ব্যাপার। এটি বাজারে আসার আগে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর জনপ্রিয়তা ওইভাবে বাড়েনি। থ্রি-ডি কনটেন্ট সহজলভ্য নয়। এই টিভি দেখতে গেলে আলাদা চশমার ব্যবস্থা করতে হয়। অন্যথায় মাথাব্যথা কিংবা চোখের ক্ষতি হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এই টিভি এড়িয়ে যাওয়া ভালো।

কোন ব্র্যান্ডের টিভি কিনবেন

বাংলাদেশের বাজারে আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় বিভিন্ন কোম্পানির টিভি পাওয়া যায়। এর মধ্যে ওয়ালটন, স্যামসাং, ট্রান্সটেক, সনি, সিঙ্গার, প্যানাসনিক, এলজি, ইকো প্লাস, ভিশন, কনকা এবং মাইওয়ান বেশি জনপ্রিয়।


এখন কথা হচ্ছে, আসলেই আপনি কোন ব্র্যান্ডের টিভিটি বাড়িতে নেবেন?

এটি হচ্ছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনাকে আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। কোন টিভির বাজারদাম এ সময় কেমন চলছে, সেটি খোঁজ নিন। বিভিন্ন উৎসবের আগে কোনো মেগা ইভেন্টের আগে প্রায় সব কোম্পানি দামে ভালো ছাড় দেয়। এগুলো আপনি তাদের ওয়েবসাইটে কিংবা পত্রিকার বিজ্ঞাপণ থেকে জেনে নিতে পারেন। তারপর দেখবেন কোন টিভির ওয়ারেন্টি কিংবা গ্যারান্টি ভালো।

এগুলো দেখার পর শোরুমে গিয়ে টিভি চালিয়ে ছবি-শব্দ পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ছবি ও শব্দ থেকে টিভি সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যায়। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে আপনি ভিডিও দেখার চেষ্টা করবেন।

ভালো টিভির পর্দায় সাদা রঙে কোনো সবুজ আভা থাকে না। কালো রংটি বেশ পোক্ত দেখায়। ছবি কতটা উজ্জ্বল দেখাচ্ছে সেটি খেয়াল করুন।

শব্দ কত ক্লিয়ার সেটি বোঝার চেষ্টা করুন। বেজ কত গভীর সেটি অনুধাবন করুন। ভোকাল ওপেন এবং পরিষ্কার কি না, সেটি শুনুন। বক্সের ভেতর থেকে শব্দ বের হচ্ছে; নাকে নাকে যাচ্ছে কিংবা চিকন আসছে, এমন হলে সেটি বাদ দিন।


কম দামে ভাল মানের টিভি কিনতে চাইলে ক্লিক করতে পারেনঃ LED TV Price In Bangladesh Or Smart TV Price In Bangladesh

 

Comments