স্বাধীনতা কারা চেয়েছিলেন, কারা এনেছিলেন, কারা স্বাধীনতা বুঝে নিয়েছেন


*** কোন ১ ইডিয়ট পোষ্টটাকে রিফ্রেশ করার শুরু করেছে ****

.


পুর্ব পাকিস্তানের কোন শ্রেণীর জনতা স্বাধীনতা চেয়েছিলেন? দরিদ্ররা স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। ফজলুল কাদের চৌধুরী, মোনায়েম খান, একে খান, সবুর খানরা ও ব্যুরোক্রেটরা পুর্ব পাকিস্তানে এতটা আরামে ছিলো যে, উহারা বাংগালীদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে, এরা পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার বিপক্ষে যুদ্ধ করেছে! 

মওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবর রহমান সাহেব মানুষকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, পুর্ব পাকিস্তানে যে পরিমাণ সম্পদ আছে, সব বাংগালী সুখে শান্তিতে থাকতে পারবেন; পশ্চিম পাকিস্তানের মিলিটারী, ধনকুবের ও অফিসারদের লাথি, থাপ্পড় খাবার দরকার নেই। 

মওলানা ভাসানী ও শেখ সাহবের সভাগুলোতে উপস্হিত লোকজনের কাপড়, বেশভুষা, পায়ের স্যান্ডাল, খালি পা দেখলে, স্বাধনতাকামীদের চিনতে ভুল হওয়ার কথা নয়: রেসকোর্সের ছবি দেখেন (রাজধানীর লোকজন), পল্টনের ছবি দেখেন, লালদীঘির ছবি দেখেন, পোলো-গ্রাউন্ডের ছবি দেখেন, খুলনার শিল্প এলাকার সভায় উপস্হি্তিদের চেহারা দেখেন, বুঝতে পারবেন, কারা এই দেশের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন!

১ নং সেক্টরের হেড কোয়ার্টার হরিণার ছবি কোথায় পেলে দেখবেন, কাহারা যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন ভলনটিয়ার হিসেবে! একজন ভালো চাকুরীজীবির ছেলেও ছিলো না সেখানে: সবগুলো গ্রামের কৃষকের ছেলে, দিনমুজুর, শ্রমিক, গ্রামের কলেজের ছাত্র। 

যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, সামান্য অবস্হাপন্ন লোকজন, চাকুরে, প্রশাসনের লোকজন, ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, সাংবাদিক, ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের হাবভাব ছিলো যে, যুদ্ধ করার দায়িত্ব তো গরীবদের। 

গরীবেরা অশিক্ষিত থাকে, অশিক্ষিতরা গরীব হয়; গরীবেরাই জাতিকে উদ্ধার করতে গেলো; তাও, আবার ভলনটিয়ার: নিজের লুংগি, নিজের পুরান শার্ট, খালি পা, কিংবা একজোড়া স্পন্জ; কোন বেতন নেই, খাবার নেই, থাকার ব্যবস্হা নেই, চিকিৎসা নেই; তাজুদ্দিন সাহবের সরকারের একটা দায়িত্ব ছিলো: কোথায়ও শুধু নামটা লিখে রাখা; সেটাও ঠিক মতো করতে পারেনি। যুদ্ধে কে কোথায় শহীদ হয়েছেন, তাজুদ্দিন সাহবেের লোকেরা সেটাও লিখে রাখতে পারেননি; কার ছেলে কোথায় শীদ হয়েছেন, কার স্বামী কোথায় প্রাণ হারায়েছেন সেটার হিসাবে রাখার লোকও পাওয়া যায়নি। 

যুদ্ধে জাতি জয়ী হয়েছেন; তাজুদ্দিন সাহেবের সরকারের বেংগল রেজিমেন্টের লোকদের চাকুরী রলো, ইপিআরদের চাকুরী রলো, পুলিশ, আনসারের চাকুরী রলো, তাজুদ্দিন সাহেবের চাকুরী রলো; শুধু বিনা-বেতনের ভলটিয়ারগুলোর চাকুরী রলো না; তাদেরকে খালি হাতে ফেরত আসতে হলো পোড়া ভিটায়; এই ছিলো বাংগালীর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আনার সৈনিকদের পাওনা।

373 Views

Comments