সম্প্রতি সুযোগ হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন ‘প্রো রাইডার্স’ নামক একটি বাইকিং গ্রুপের সঙ্গে লটকন বাগান ঘুরতে যাওয়ার। ঢাকার অদূরেই আছে বিখ্যাত এক লটকন বাগান। একদিনেই সেখান থেকে ঘুরে আসা যাবে খুব সহজেই।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি লটকন আবাদ হয় নরসিংদী জেলার শিবপুর আর মরজাল উপজেলায়। গ্রামের রাস্তায় প্রবেশ করলেই রাস্তার ধারে নজরে পড়বে সারি সারি লটকন বাগান। এসব বাগান মালিকের অনুমতি নিয়ে আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন। আবার বাগান ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে খেতেও পারবেন।
অধিকাংশ বাগান মালিক যথেষ্ট আন্তরিক এবং তারা নিজেরাই যথেষ্ট আগ্রহের সঙ্গে দর্শনার্থীদের নিয়ে ঘুরে দেখান। লটকন কেনাবেচার জন্য হাট বসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরার মরজাল বাজার, সৃষ্টিগড় বাজার, শিবপুরের কামারটেক বাজার, চৈতন্য বাজার এবং গাবতলী বাজার।
হাইওয়ের দুইপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে বিকেল ৪টা নাগাদ মরজাল উপজেলার লটকন বাগানে গিয়ে পৌঁছায়। দীর্ঘ সময় মোটরসাইকেল চালানোর পর লটকন বাগানের সৌন্দর্য দেখে সবার ক্লান্তি উবে গেল। বাগানে চোখ পড়তেই দেখলাল, লটকন গাছগুলোর গোড়া থেকে শুরু করে শাখা-প্রশাখায় ঝুলে আছে হাজারো পাকা লটকন।

বাগান মালিকের সঙ্গে কথা বলে সবাই, গাছ থেকে লটকন ছিড়ে খাওয়া শুরু করি। লটকন বাগানো ঘোরাঘুরি শেষ করে সবাই গ্রামের মধ্যকার অতি মনরোম ও স্নিগ্ধ পরিবেশের মধ্যকার দারুণ এক রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ে এগিয়ে যাই আমরা। ফিরতি পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে কুঁড়েঘর রেষ্টুরেন্টে সবাই খাওয়া-দাওয়া করেছি। আর এভাবেই সমাপ্তি হয় ঢাকার অদূরে দারুণ একটি ভ্রমণ।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ট্রেন অথবা বাসে নরসিংদী যাওয়া যায়। রাজধানীর গুলিস্তান, সায়েদাবাদ কিংবা আব্দুল্লাহপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন বাসে কাচপুর কিংবা ডেমরা ব্রিজ পার হয়ে মরজাল বাসষ্ট্যান্ড নামতে হবে। মরজাল থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে আশেপাশের বাগানগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন।

রেলপথে আসতে হলে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে মহানগর এক্সপ্রেস কিংবা কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসে করে নরসিংদী নামতে পারবেন ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই। নরসিংদী ষ্টেশন থেকে ভেলানগর বাসষ্ট্যান্ড গিয়ে লেগুনা বা বাসে মরজাল বাসষ্ট্যান্ড নামতে হবে। সেখান থেকে অটোরিকশায় মরজাল ও ওয়ারি বটেশ্বর এলাকার লটকন বাগানগুল ঘুরে দেখতে পারবেন।
লটকন বাগান ভ্রমণে কিছু পরামর্শ
জৈষ্ঠ্য থেকে শ্রাবণ মাস অর্থাৎ মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত লটকন বাগান দেখার উপযুক্ত সময়।
বাগান মালিকের অনুমতি ছাড়া কোনো বাগেন ঢুকবেন না এবং ফল নষ্ট করবেন না।

মোটরবাইক কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গেলে সৃষ্টিগড় হয়ে চৈতন্য, কুন্ডপাড়া, নৌকা ঘাট এবং বেলাবোর লটকন বাগানগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন।
জুলাই এর পর থেকে লটকন বাগান তার সৌন্দর্য্য হারাতে শুরু করে তাই জুলাই এর পরে না যাওয়াই শ্রেয়।





