প্রাণের শহর নওগাঁ


নওগাঁ আমার প্রাণের জেলা নওগাঁ। এই জেলায় আমার জন্ম। এই জেলায় আমার ছোট থেকে বেড়ে উঠা। নওগাঁ জেলার কাছে আমি আজীব??

.

প্রাণের শহর নওগাঁ 

আমার প্রাণের জেলা নওগাঁ। এই জেলায় আমার জন্ম। এই জেলায় আমার ছোট থেকে বেড়ে উঠা। নওগাঁ জেলার কাছে আমি  আজীবন ঋণী হয়ে থাকব। হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে নওগাঁকে ভালবাসি। যখনই নওগাঁ থাকি মনে একধরণের প্রশান্তি কাজ করে।
 
রাজশাহী বিভাগের অন্যতম বড় জেলা নওগাঁ। আয়তন : ৩,৪৩৫.৬৭ বর্গকিলোমিটার। অবস্থান: ২৪°৩২´ থেকে ২৫°১৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৩´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। গঠিত : ১ মার্চ, ১৯৮৪। বিভাগ : রাজশাহী। পোস্ট কোড : ৬৫০০।

নওগাঁ শব্দর উৎপত্তি হয়েছে ‘নও’ (নতুন -ফরাসী শব্দ ) ও‘ গাঁ’ (গ্রাম ) শব্দ দু’টি হতে। এই শব্দ দু’টির অর্থ হলো নতুন গ্রাম। অসংখ্য ছোট ছোট নদীর লীলাক্ষেত্র এ অঞ্চল। আত্রাই নদী তীরবর্তী এলাকায় নদী বন্দর এলাকা ঘিরে নতুন যে গ্রাম গড়ে উঠে , কালক্রমে তা-ই নওগাঁ শহর এবং সর্বশেষ নওগাঁ জেলায় রুপান্তরিত হয়। নওগাঁ শহর ছিল রাজশাহী জেলার অন্তর্গত। কালক্রমে এ এলাকাটি গ্রাম থেকে থানা এবং থানা থেকে মহকুমায় রুপ নেয়। ১৯৮৪ এর ১ মার্চ- এ নওগাঁ মহকুমা ১১টি উপজেলা নিয়ে জেলা হিসেবে ঘোষিত হয়।বাংলাদেশ উত্তর -পশ্চিমভাগ বাংলাদেশ - ভারত আন্তর্জাতিক সীমা রেখা সংলগ্ন যে ভূখন্ডটি ১৯৮৪ খ্রিঃ এর ১ মার্চের পূর্ব পর্যন্ত অবিভক্ত রাজশাহী জেলার অধীন নওগাঁ মহকুমা হিসেবে গণ্য হ-তো, তা - ই এখন হয়েছে নওগাঁ জেলা। নওগাঁ প্রাচীন পুণ্ড্রবর্ধন ভূক্ত অঞ্চল ছিল। অন্য দিকে এটি আবার বরেন্দ্র ভূমিরও একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ । নওগাঁর অধিবাসীরা ছিল প্রাচীন পুণ্ড্র জাতির বংশধর। নৃতাত্ত্বিকদের মতে, পুন্ড্ররা বিশ্বামিত্রের বংশধর এবং বৈদিক যুগের মানুষ। মহাভারত্র পুণ্ড্রদের অন্ধ ঋষি দীর্ঘতমার ঔরষজাত বলি রাজার বংশধর বলে উলে­খ করা হয়েছে। আবার কারো মতে, বাংলার আদিম পাদদর বংশধর রুপে পুন্ড্রদের বলা হয়েছে। এদিক দিয়ে বিচার করলে নওগাঁ যে প্রাচীন জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল ছিল তা সহজেই বলা যায়।

নওগাঁর প্রাচীনতম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়

            

 

নওগাঁ কে.ডি. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা নওগাঁ জেলায় অবস্থিত। ১৮৮৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এটি স্থাপিত হয়। এটি বাংলাদেশে স্থাপিত অন্যতম পুরনো বিদ্যালয়। বিগত কয়েক বছরের পাবলিক পরীক্ষাগুলোর ফলাফল অনুসারে এটি নওগাঁ জেলার শ্রেষ্ঠ এবং রাজশাহী বিভাগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত দুই শিফটে শিক্ষাদান করা হয়। নওগাঁ জেলায় একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ সর্বপ্রথম গ্রহণ করেন বাবু কৃষ্ণধন বাগচী, যিনি নওগাঁর তত্‍কালীন ডেপুটি কমিশনার এবং গাঁজা সমবায় সমিতির সুপারভাইজার ছিলেন। তার প্রচেষ্টায় কিছু জমিদার, কৃষক এবং বিত্তশালী ব্যক্তিবর্গ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। এটি ছিল নওগাঁ জেলায় প্রতিষ্ঠিত প্রথম উচ্চ বিদ্যালয়।উত্তরবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহকুমা শহর নওগাঁ। কৃষি সম্পদে সমৃদ্ধ ছিল বলেই বোধ হয় এই শহর জমিদার প্রধান স্থান হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। এ মহকুমার লোকদের মোটা ভাত কাপড়ের বিশেষ অভাব ছিলনা বলেই তারা লেখাপড়া শেখার তেমন তাগিদ অনুভব করেনি। স্থানীয় জমিদাররা তাদের সন্তানদের দেশে বিদেশে বড় বড় শহরে রেখে উচ্চ শিক্ষা লাভের ব্যবস্থা করেছিলেন। ফলে তারাও জনসাধারনের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারে উদাসীন ছিলেন। এমনই এক পরিস্থিতির মধ্যে নওগাঁ মহকুমা শহরে ১৮৮৪ খ্রীস্টাব্দে একটি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত হয়।এটিই পরবর্তীকালে কে. ডি. উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিতি পায়। এটিই ছিল নওগাঁ মহকুমার প্রথম উচ্চ বিদ্যালয়।

 

প্রতিষ্ঠা

নওগাঁয় এই বিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন নওগাঁর তদানীন্তন ডেপুটি কালেক্টর ও গাঁজা সোসাইটির সুপার ভাইজার বাবু কৃষ্ণধন বাগচী। তার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করেন মহকুমার জমিদার, বিত্তশালী লোক ও কৃষকগন। সেসময় যাঁরা ১০০.০০ টাকা পর্যন্ত দান করেছেন তাদের নাম বিদ্যালয়ের মূল অফিস গৃহের দেয়ালে স্থাপিত পাথরের ফলকে লেখা রয়েছে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এর নামকরণ নিয়ে বিতন্ডা দেখা দেয়। তবে এর নামকরণ করা হয় বাবু কৃষ্ণধন বাগচীর নামেই (K = Krishna D = Dhwan)। পরবর্তিতে এই নামের কোন পরিবর্তন সাধন করা সম্ভব হয়নি। ১৯৬০ সালে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধীনে বিদ্যালয়টিকে একটি মালটি-লেটার্যাল স্কুল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার ১২২০০০.০০ টাকা মঞ্জুর করে। ফলে নতুন ব্যবস্থানুযায়ী বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক এবং কৃষি বিভাগের পড়াশোনা চালু হয়। ১৯৭০ খ্রীষ্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি তারিখ থেকে কে. ডি. স্কুল সরকারি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে।

১৯৮৪ সালে নওগাঁ জেলা ঘোষণা হবার পর কেডি স্কুলকে জেলা স্কুল নামকরণের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়। তখনকার কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে অনেক ভেবে চিন্তে এ প্রস্তাবকে বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দেন। কারণ কেডি স্কুল জেলা স্কুলে পরিণত হলে বাবু কৃষ্ণ ধনের অবদান হারিয়ে যাবে চিরতরে। তাছাড়া যদি এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়া হয় তবে ন্ওগাঁ ইউনাইটেড স্কুল সরকারীকরণের মাধ্যমে জেলা স্কুলে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এতে করে নওগাঁয় আরেকটি সরকারী স্কুল হবে। মূলত তখনকার কর্তৃপক্ষের সুবিবেচনাসুলভ সিদ্ধান্তের ফলেই কেডি স্কুল তার স্ব নামে বহাল থাকে।

 

বিগত কয়েক বছরের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এস.এস.সি পরীক্ষায় নওগাঁ কে.ডি. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ফলাফল,

বছরমোট পরীক্ষার্থীএ+এ-বিসিডিমোট উত্তীর্ণপাসের হারজিপিএ ৫ প্রাপ্তির হারঅবস্থান (রাজশাহী বোর্ডে)
২০১৪    ২০৭১৯৩১০--২০৭১০০%৯৩.২৪%চতুর্থ

Comments