কখন কখন দুয়া কবুল হয়?


কখন কখন দুয়া কবুল হয়?

.

দুয়া কবুলের বিশেষ ক্ষেত্র-
রাসুল (সাঃ) বলেন- সিজদার সময় বান্দা তার রবের সর্বাধিক নিকটে পৌঁছে যায়। অতএব ঐ সময় তোমরা সাধ্যমত বেশি বেশি দুয়া কর। [মুসলিম, মিশকাতঃ ৮৯৪,অনুচ্ছেদ-১৪]

অপর হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেন- ফরজ সালাতের শেষ অংশে সালাম ফিরানোর আগে দুয়া অধিকরূপে কবুল হয়। [তিরমিজিঃ ৩৭৪৬, মিশকাতঃ ৯৬৮]

যেহেতু সালাতের শেষ অংশে দুয়া অধিকরূপে কবুল হয় তাই এই শেষাংশে আমাদের উচিৎ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস গুলো আল্লাহ্‌র নিকট থেকে চেয়ে নেয়া। আর আমাদের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো আল্লাহ্‌ তার রাসুলের (সাঃ) মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন।
রাসুল (সাঃ) বলেন- যখন তোমাদের মধ্যে কেউ সালাতে তাশাহুদ ও দুরুদ সম্পন্ন করবে তখন সে যেন চারটি জিনিস থেকে অবশ্যই আশ্রয় চায়, অতঃপর সে ইচ্ছামত দুয়া করবে। [মুসনাদে আহমাদ ২/২৩৫, আবু দাউদঃ ৯৩৮, নাসাঈঃ ১৩০৯]

সকলের সুবিধার্থে দুয়াটি উল্লেখ করা হল-
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন আজাবি জাহান্নাম, অয়াআউজু বিকা মিন আজাবিল কাব’র, অয়াআউজু বিকা মিন ফিতনাতিল মাসিহীদ দাজ্জাল, অয়াআউজু বিকা মিন ফিতনাতিল মাহয়্যা অয়াফিতনাতিল মা’মাত।
-হে আল্লাহ্‌! নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি জাহান্নামের আজাব থেকে, কবরের আজাব থেকে, দাজ্জালের ফিতনা থেকে ও জীবন-মৃত্যুর ফিতনা থেকে। [সহিহ মুসলিমঃ ৫৮৮]

একদা রাসুল (সাঃ) এক ব্যক্তিকে নামাজে দুয়া করতে শুনলেন- লোকটির মহান আল্লাহ্‌ গুণ-গান করল না, নাবীর উপর দুরুদও পড়ল না এবং দুয়া করল। নাবী (সাঃ) বললেন- সে এত তাড়াহুড়ো করল।
অতঃপর তাঁকে ডেকে সকলের উদ্দেশ্যে বললেন- “তোমাদের মধ্যে যে নামাজ পড়বে, সে যেন- তার রবের প্রশংসা বর্ণনার মাধ্যমে আরাম্ভ করে, অতঃপর আমার উপর দুরুদ পাঠ করে। তারপর নিজের ইচ্ছামত দুয়া করে। (আবু দাউদঃ ১৪৮১)

অন্য এক ব্যক্তিকে রাসুল (সাঃ) দেখলেন সে আল্লাহ্‌র গুণ-গান করল এবং নাবীর (সাঃ) উপর দুরুদও পড়ল, অতঃপর রাসুল (সাঃ) বললেন, ওহে নামাজী এবার দুয়া কর; কবুল হবে। (আবু দাউদঃ ১৪৮১)

তাই নফল সালাত শেষে দু’হাত তুলে ইচ্ছা মত দোয়া করা যায়। সালাত ছাড়াও যে কোন সময়ই দু হাত তুলে দুয়া করা যায়, বরণ সালাত ছাড়াও সব সময়ই দু’হাত তুলে দুয়া করা উচিৎ।

রাসুল (সাঃ) বলেন- আল্লাহ্‌ খুব লজ্জাশীল, তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যখন আল্লাহ্‌ নিকট দু হাত তুলে কিছু চায়। তখন সেটা যদি তার জন্য কল্যাণকর হয় তবে আল্লাহ্‌ তা তাকে দেন, আর যদি তা তার জন্য কল্যাণকর না হয় তবে আল্লাহ্‌ তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জা পান, ফলে তাকে কিছু না কিছু দিয়েই থাকেন। (আবু দাউদ)
তাই বুঝা গেল হাত তুলে দুয়া করা অতি লাভজনক, হাত তুলে দুয়া করলে কিছু না কিছু পাওয়া যাবেই।

নিজের জন্য দুয়া করার চেয়ে অপর মুসলিমের জন্য দুয়া করলে লাভ বেশি।
রাসুল (সাঃ) বলেন- কোন মুসলিম অপর মুসলিমের জন্য খাছ মনে দুয়া করলে দুয়া কবুল হয়। সেখানে একজন ফিরিশতা নিযুক্ত থাকেন। যখনই ঐ ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য দুয়া করে তক্ষণই ঐ ফিরিশতা “আমীন” “আমীন” বলেন। এবং বলেন- তোমার জন্যও অনুরূপ হোক। [মুসলিম, মিশকাতঃ ২২২৮, দোয়া অধ্যায়, অধ্যায়-৯]

উবাদা বিন সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) একথা বলতে শুনেছি, من استغفر للمؤمنين والمؤمنات كتب الله له بكل مؤمن ومؤمنة حسنة যে ব্যক্তি মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তাকে প্রতেক্য মুমিন পুরুষ ও নারীর বিনিময়ে একটি করে পূণ্য লিখে দেয়া হবে। (ত্বাবরানী, শাইখ আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেন, দ্র: সহীহুল জামে হা/১০৯৭০।

 

#CAHM17

987 Views

Comments