পিচ্চির ভালবাসা


কলেজ থেকে বাসায় ফিরতেছি।
ইদানিং শীত পরতে শুরু করছে।এজন্য সূর্যের
তাপমাত্রাও কম।
এজন্য গা ছেড়েই হাটতেছি??

.

কলেজ থেকে বাসায় ফিরতেছি। ইদানিং শীত পরতে শুরু করছে।এজন্য সূর্যের তাপমাত্রাও কম। এজন্য গা ছেড়েই হাটতেছি। বাসায় ফেরার বেশি তাড়াহুড়া নেই। হঠাৎ পায়ের সামনে একটা খালি বোতল দেখতে পেলাম। হঠাৎ কেন জানি নিজেকে ফুটবলার হিসেবে প্রমান করতে মন চাইলো। এজন্য পুরাই স্টাইল ফুডাইয়া মারলাম সজোড়ে এক কিক। তাকাইয়া দেখলাম একটা জুতা উইড়া যাইতেছে। একিরে কিক মমারলাম বোতলে কিন্তু জুতা উড়ে ক্যান?!! নিচে তাকাইয়া দেখি বোতলের জায়গায় বোতল রয়ে গেছে মাঝখান থেকে আমার পায়ের সু খুলে উড়তেছে। কিকটাও ভাব নিয়া অনেক জোড়ে করছিলাম এজন্য জুতা অনেক উপরে উইঠা গেছে। আমি গান ধরলাম। " বোতল শটাইতে গিয়ে, পায়ের জুতা খুলে.... জুতা যায় উড়ে যায়....." অতঃপর..... -- আআআ তাকাইয়া দেখি এক মাইয়ার মাথায় গিয়া জুতা পরছে। মাইয়া সজোরে মাথা ডলতেছে আর আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাইয়া আছে। আমি একটু ভাব নিয়া বললাম...!! -- ওভাবে তাকাতে হয়না। তাকালে নজর লাগবে!!(আমি) -- আপনার দিকে নজর দিতে গেছে কে??আর এটা কি হলো??(মেয়েটা) -- আসলে অনেক জোড়ে বাতাস আসছিল তো। বাতাসে পায়ের জুতা খুলে নিয়ে গিয়েছিল। এজন্য এমনটা হয়েছিল আর কি।(আমি) -- ওই মিয়া ফাইজলামি করেন??জুতা কি লুঙ্গি নাকি যে বাতাসে উড়ে??(মেয়েটা) বাপরে মাইয়ার দেখি লুঙ্গি সম্পর্কে বেশ জ্ঞান আছে তারপর আর কোনো কথা না বলে জুতাটা হাতে নিয়ে ইতিউতি না তাকিয়ে সোজা দৌড়। দৌড়াতে গিয়ে বাসার কাছে এসে খেলাম ধাক্কা। কিন্তু আশেপাশে কিছুই তো দেখতেছি না।ধাক্কা খাইলাম কিসের সাথে??। হঠাৎ নিচে তাকাইলাম দেখি পাঁচ বছরের এক পিচ্চি মেয়ে বসে আছে। আমি কোলে নিয়ে দাড় করিয়ে দিলাম। একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম... -- বাবু ব্যাথা পেয়েছো??(আমি) -- ওই পোলা কি কইলি তুই??(পিচ্চি) -- (অবাক হয়ে) কই কি বললাম?? -- আমাকে বাবু বললি ক্যান?? আমি কি তোর জিএফ নাকি?? যে বাবু বলবি??(পিচ্চি) ওর কথা শুইনা আমি হাবলার মত হা কইরা দাড়াইয়া আছি। -- ওই। হা কইরা আছোস কেন? মুখ বন্ধ কর!! (পিচ্চি) আমি মুখটা বন্ধ করে বাসায় ঢুকতেছি আর ভাবতেছি.... কি যুগ মাইরি। একটা পিচ্চি মাইয়া প্রেম জিনিসটা বুঝে গেছে। আরও ভাবলাম এই পিচ্চি আবার এই এলাকায় কবে আমদানি হলো?? সম্ভবতো নতুন আসছে। পরক্ষনে মনে পরলো পিচ্চি নতুন না। আমি নিজেই তো এই এলাকায় নতুন আসছি। কি ভুলো মন আমার। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটা বড় ঘুম দিয়ে বিকেলে একটু ঘুরতে বের হলাম। হঠাৎ কেউ একজন পেছন থেকে ডাকলো। তাকিয়ে দেখি সকালের পিচ্চি। আল্লাহই জানে এখন আবার কোন পাকনামি করে। কাছে গেলাম। হাতে একটা টিকিটের মত ছোট সাইজের কাগজ ধরাই দিল। খুলে দেখি বড় করে লেখা "১৭" আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম... -- ১৭ মানে কি??(আমি) -- সিরিয়াল নাম্বার।(পিচ্চি) -- কিসের??(অবাক হয়ে) -- তুমি যে আমাকে প্রপোজ করছো।তার সিরিয়াল নাম্বার।(পিচ্চি) [এরে এটুকু একটা মেয়ে। ওর সিরিয়াল নাম্বার ১৭ হয়ে গেছে।] -- সেকি কখন প্রপোজ করলাম!!??(অবাক হয়ে) -- কেন সকালেই তো বাবু বললা।তুমি আমাকে লাভ না করলে কি আর বাবু বলে ডাকতা??(পিচ্চি) আমি টাসকি খাইয়া আবার হাবলার মত হা কইরা তাকাইয়া আছি। -- এই নাও আয়না...!!(পিচ্চি) -- কেন??(আমি) -- তুমি হা করে তাকাইয়া থাকলে এক্কেবারে হাবলার মত লাগে। সেইটা দেখানোর জন্য আয়না দিছি।(পিচ্চি) আমি লজ্জা পেয়ে মুখটা বন্ধ করে ফেলে বললাম..!! -- সবসময় আয়না সঙ্গে নিয়ে ঘুরো নাকি??(আমি) -- হ্যা।(পিচ্চি) -- কেন?? -- আরে বইলো না। দুইটা বাসা পর একটা বাসায় আমার বয়ফ্রেন্ড সিফাত থাকে।ও কখন সামনে পরে যায় তার ঠিক নাই। সামনে পরলেই আয়না দেখে চুল আর ফেসটা একটু ঠিক করে নেই।যাতে একটু কিউট লাগে বুঝলা?? অতঃপর আমি আবার হা.....পাঁচ বছরের পিচ্চি মাইয়ার নাকি বয়ফ্রেন্ড আছে!! আচ্ছা আমি কি বাসা চেন্জ করে ভুল করে মঙ্গল গ্রহে আইসা পরিনাই তো??? -- আয়নাটা কিন্তু এখনো তোমার হাতেই আছে!! (পিচ্চি) ওর কথাটা শুনে আমি তাড়াতাড়ি মুখ বন্ধ করে ফেললাম।আর মজা করে বললাম... -- আচ্ছা আমার সিরিয়ালটা কবে আসবে??(আমি) -- জানি না।তবে খুব তাড়াতাড়ি চেষ্টা করবো.! কারন তোমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।।(পিচ্চি) -- হাহা। থ্যাংস পিচ্চি!!(আমি) -- ওই আমি পিচ্চি না। আমার নাম সামিরা।(পিচ্চি) -- হাহা ওকে সামিরা। ভাবতাছি আসলেই পিচ্চি কথাটা ওর সাথে যায় না।যা পাকা মেয়ে। এরপর প্রায় এক সপ্তাহের মত কেটে গেছে। হঠাৎ.... -- কি ব্যাপার মি. শাওন কেমন আছো??(পিচ্চি) -- এইতো।তুমি কেমন আছো পিচ্চি?? -- এই তোমাকে বারন করছি না আমাকে পিচ্চি বলবা না।আমার নাম সামিরা।(পিচ্চি) -- ওহহহ সো সরি। -- ইটস ওকে। আর তোমার সাথে একটা কথা আছে!!(পিচ্চি) -- কি কথা!?? -- আমার ব্রেকআপ হয়ে গেছে সিফাতের সাথে। (পিচ্চি) -- এ্যা।ব্রেকআপ হইছ?? -- হ্যা!! এখন ভাবতেছি তোমাকে একসেপ্ট করে ফেলবো!!(পিচ্চি) -- এ্যা!! -- হ্যা।তোমার কোন আপত্তি নেইতো??(পিচ্চি) --এ্যা?? -- আচ্ছা এ্যা এ্যা করতে হবে না।কিছুদিন ভাবো। তারপর এন্চার দিয়ো।ততোদিনে যেন কোনো মেয়ের দিকে তাকাইতে না দেখি। তাহলে খবর আছে! বাই!(পিচ্চি) পিচ্চি চলে গেল।আর আমি আমি আবার হা করে দাড়িয়ে আছি। আমি ততোদিনে পাশের বাসার এক মেয়ের সাথে একটু লাইন মারা শুরু করছিলাম। সেটা পিচ্চি ক্যামনে জানি জেনে গেছিল। তারপর শুনতে পেলাম পিচ্চি ওই মেয়ের হাত কামড়ে দিয়েছে। আমি শুনে পুরাই টাসকি। এতটুকু মেয়ের কি ভালবাসার টান।হাহা তারপর হঠাৎ পিচ্চির সাথে দেখা। -- তুমি পাশের বাসার শোভা আপুর সাথে লাইন মারতেছ তাইনা??(পিচ্চি) -- মানে?? -- মানে বুঝো না তাই না?? তোমাকে বারন করছিলাম না।কোন মেয়ের দিকে তাকাবা না।কথা শুনো না কেন?? -- আমি টাসকি খেয়ে নির্বাক হয়ে গেছি। পিচ্চি কয় কি?? -- থাক আর কিছু বলতে হবে না।তুমি যদি ভালবাসতে না চাও।আমি তোমার পথের কাটা হবো না।ভালো থেক।(পিচ্চি) এটুকু বলে পিচ্চি হনহনিয়ে চলে গেল।আমি ঠিক আগের মতই.............. দুইদিন পর.... হঠাৎ দেখলাম পিচ্চি আর একটা ছেলে হাত ধরাধরি করে আসতেছে। আমাকে দেখেই ও একা এগিয়ে এসে বললো.. -- অবাক হচ্ছো তাই না?? কিন্তু এটাি বাস্তব।। জানো তো একটা কথা আছে। তুমি তাকেই গ্রহন করো ,যে তোমাকে ভালবাসে,তাকে নয় যাকে তুমি ভালবাসো। তাই ওকে গ্রহন করে ফেললাম।ভালো থেক।(পিচ্চি) এবার ওর কথা শুনে আমি বিশাল এত টাসকি খাইলাম। এমনিতেই টাসকি খাইতে খাইতে ষোল কলা পূর্ন হয়ে গেছে। আর সহ্য করতে পারলাম না। অজ্ঞান হয়ে গেলাম। জ্ঞান ফিরতে দেখি আমি ঘরে শুয়ে আছি। আর পিচ্চি পাশে বসে আছে। আমাকে তাকাতে দেখেই বললো..... -- তুমি এতটা ভালোবাসো আমাকে??আগে কেন বলোনি??বললে কি আর আমি ওই পোলারে একসেপ্ট করতাম??তুমিও আর কষ্ট পাইতা না। আচ্ছা এখন আর তোমাকে ছেড়ে যাবো না।বুঝলা। আর মন খারাপ করে না।(পিচ্চি) একটা বড়সড় টাসকি এখনো কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটা টাসকি। ফলাফলে আবার আমি অজ্ঞান....!!!! অতঃপর পিচ্চির কারনে বারবার টাসকি খাইতে খাইতে আজ আমি হার্টের রোগী [কাল্পনিক গল্প]...

1330 Views

Comments