প্যাগোডা


প্যাগোডা (Pagoda) বৌদ্ধদের উপাসনালয় অর্থাৎ বৌদ্ধ মন্দির হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও শাব্দিক অর্থে এটি হচ্ছে স্তরে স্তরে নির্মিত টাওয়ার জাতীয় ভবন।

.

এই ধরনের ভবন চীন, জাপান, কোরিয়া, নেপালসহ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু দেশে দেখা যায়। প্যাগোডাগুলো বৌদ্ধ মন্দির হিসেবে পরিচিতি লাভের মূল কারণ হচ্ছে বেশির ভাগ প্যাগোডাই নির্মিত হয়েছে বৌদ্ধ মন্দির হিসেবে। সাধারণত এগুলো বৌদ্ধ বিহারের কাছাকাছি নির্মিত হয়। আমাদের দেশে প্যাগোডা বলতে বৌদ্ধদের ধর্মীয় স্থাপনাকেই বোঝায়। আধুনিক প্যাগোডা হলো প্রাচীন স্তূপার একটি বিবর্তিত রূপ, অনেকটা সমাধি মন্দিরের মতো, যেখানে পবিত্র পুরানিদর্শন রাখা হতো। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে প্রচলিত স্তূপা থেকে প্যাগোডার উৎপত্তি। স্তূপা হলো একটি গম্বুজ আকৃতির স্মৃতিসৌধ, যেখানে একটি পবিত্র স্মারক সংরক্ষণ করা হতো।

বিশ্বের বৃহত্তম প্যাগোডাটি রয়েছে মুসলিমপ্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। এর নাম বোরোবুদুর। শৈলেন্দ্র রাজবংশের শাসনকালে খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে এটি নির্মিত হয়। ইন্দোনেশিয়ার মধ্য জাভার মাগেলাঙে অবস্থিত একটি মহাযান বৌদ্ধ মন্দির এটি। এই স্মারকস্থলে ৯টি সারিবদ্ধ মঞ্চ রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি বর্গাকার ও তিনটি গোলাকার। এগুলোর ওপরে একটি কেন্দ্রীয় গম্বুজ রয়েছে।  বোরোবুদুর মন্দিরে দুই হাজার ৬৭২টি খোদাইচিত্রের প্যানেল ও ৫০৪টি বুদ্ধমূর্তি রয়েছে। কেন্দ্রীয় গম্বুজটির চারদিকে ৭২টি বুদ্ধমূর্তি রয়েছে। প্রত্যেকটি মূর্তি একটি স্তূপের গায়ে ছিদ্রাকার গর্তে উপবিষ্ট অবস্থায় স্থাপিত।

আরেকটি উল্লখযোগ্য প্যাগোডা হচ্ছে জাপানের হ্যারি-জির প্যাগোডা। সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত এটি বিশ্বের প্রাচীনতম কাঠের একটি বিল্ডিং। এ ছাড়া আছে চীনের হাঙ্গজুয়ের প্যাগোডা, কাইফেংয়ে অবস্থিত আয়রন প্যাগোডা, জাপানের মাউন্ট হাগুরো প্যাগোডা প্রভৃতি। বাংলাদেশের বৌদ্ধ বিহার তথা প্যাগোডার মধ্যে বাংলাদেশ বৌদ্ধ মহাবিহার, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহার, মেরুল বাড্ডা বৌদ্ধ বিহার, কমলাপুরের ধর্মরাজিকা বৌদ্ধ বিহার কমপ্লেক্স, আশুলিয়া বৌদ্ধ মন্দির, মিরপুর ১০-এর শাক্যমুনি বৌদ্ধ মন্দির প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।            

Comments