জেনে নিন থাইরয়েড রোগ হলে কি কি লক্ষণ দেখা দেয়


থাইরয়েডের সমস্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের সব কাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য থাইরয়েড হরমোনের অত্যন্ত বেশি ভূম?

.

থাইরয়েডের সমস্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের সব কাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য থাইরয়েড হরমোনের অত্যন্ত বেশি ভূমিকা রয়েছে। থাইরয়েড হরমোন বেড়ে গেলে একদিকে যেমন শরীর শুকিয়ে যায়, ঠিক তেমনি থাইরয়েড হরমোন যদি শরীরে কমে যায় তাহলে শরীর অনেক মোটা হয়ে যায়। অনেকে অনেক ডায়েট কন্ট্রোল করার পরও নিজেদের শরীরের ওজন কমাতে পারছেন না। তাদের উচিত তারা থাইরয়েড রোগে ভুগছেন কিনা তার জন্য দ্রুত পরীক্ষা করা। 

লক্ষণ জানা না থাকায় অধিকাংশ রোগী বুঝতে পারেন না তারা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসা-বিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, সমস্যার শুরুটা হয় যখন থাইরয়েড গ্রন্থির গোড়ায় ছোট একটি মাংসপিণ্ড বেড়ে ওঠে, যা হরমোনের স্বাভাবিক উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, রক্তচাপ অনিয়মিত হওয়া ইত্যাদি সাধারণ উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে আরো কিছু উপসর্গ আছে যা মানুষ জানেন না কিংবা গুরুত্ব দেন না।থাইরয়েডের সমস্যা হলে কি কি লক্ষণ দেখা যায় তা জেনে নিন। থাইরয়েডের সমস্যা হলে সমস্ত শরীরের কার্যকলাপ এই বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে।

অবসাদ: প্রতিদিনই যদি নিজেকে অবসাদগ্রস্ত মনে হয় তবে এর সঙ্গে থাইরয়েডের সম্পর্ক থাকতে পারে। স্বাভাবিকের চাইতে কম সক্রিয় থাইরয়েড বা ‘হাইপোথাইরয়ডিজম’ পর্যাপ্ত হরমোন উৎপাদনের পথে বাধা দেয়। ফলে কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় এবং অবসাদগ্রস্ত মনে হয়। এমনকি পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরেও এবং সারাদিন কোনো কাজ না করলেও নিজেকে ক্লান্ত মনে হয়।

হতাশা: থাইরয়েডে সংক্রমণ দেখা দিলে হরমোনের উৎপাদন বেড়েও যেতে পারে। এই হরমোনের তারতম্যের কারণে মন-মেজাজ এই ভালো তো এই খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায়। আর হতাশাগ্রস্ততার প্রথম উপসর্গই এটি। আক্রান্ত ব্যক্তির পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এই হরমোনের তারতম্য অস্বস্তি এবং মানসিক অশান্তিও তৈরি করতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য: মলত্যাগের অস্বস্তি বা কোষ্ঠকাঠিন্য মাঝেমধ্যে হওয়া স্বাভাবিক। তবে তা নিয়মিত হয়ে গেলে বুঝতে হবে থাইরয়েডেরও সেখানে প্রভাব আছে। থাইরয়েড গ্রন্থির প্রধান কাজ ‘মেটাবলিজম’ নিয়ন্ত্রণ করা, তাই সেখানে সমস্যা দেখা দিলে বিপাক পক্রিয়াতেও প্রভাব ফেলবে। হরমোন উৎপাদন কমে গেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। তাই দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগতে থাকলে থাইরয়েড পরীক্ষা করানো উচিত। 

ঘাম (Sweating disturbance): গরমে ঘাম যেমন স্বাভাবিক এবং উপকারী তেমনি ঠাণ্ডা পরিবেশে ঘাম হওয়া আশঙ্কাজনক। কর্মশক্তি নিয়ন্ত্রক হরমোন যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না তখন অস্বাভাবিক মাত্রায় এবং অস্বাভাবিক পরিবেশ ঘাম হতে পারে।

শুষ্ক ত্বক (Dry Skin): মানুষ ভেদে ত্বক এবং ত্বকের সমস্যার ধরন ভিন্ন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুষ্ক ত্বকের জন্য মানুষ ঋতু পরিবর্তনকেই দায়ী করে। তবে এখানেও থাইরয়েডের হাত আছে। কারো ক্ষেত্রে থাইরয়েডের সমস্যা হয়তো অতিরিক্ত ঘামের কারণ হতে পারে। আবার কারো ক্ষেত্রে ঘাম নিয়ন্ত্রণে সমস্যার কারণে ঘাম হওয়ার মাত্রা কমে যেতে পারে। ঘাম কম হওয়ার কারণে আর্দ্রতার অভাবেও শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

স্বাদ-গ্রন্থির সমস্যা (Altered Taste Sensation): খাবারের স্বাদ বোঝার ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করতে পারে থাইরয়েড। যে খাবারগুলো একসময় আপনার অত্যন্ত পছন্দ ছিল সেগুলোতে এখন আপনার অনাগ্রহ তৈরি হওয়ার পেছনে দায়ী হতে পারে থাইরয়েডের সমস্যা। এর ফলে কিছু হরমোন অতিমাত্রায় তৈরি হতে পারে যা খাওয়ার রুচি নষ্ট করে দেয়।অনেক মহিলা বার বার বাচ্চা নেবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও তাদের বাচ্চা হচ্ছে না। বাচ্চা না হবার পিছনে থাইরয়েড হরমোনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাচ্চা নেয়ার জন্য যেমন সঠিক সময়ে সহবাস করা জরুরি ঠিক তেমনি শরীরের সব হরমোন ঠিক থাকা অত্যন্ত দরকার। আপনার যদি থাইরয়েড হরমোন ঠিক থাকে তাহলে একদিকে আপনার শরীর যেমন সুস্থ সবল থাকবে ঠিক তেমনি আপনার শরীরের অন্যান্য অঙ্গ সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবে।

التعليقات