অভিশপ্ত সেই দীঘি"
সে বহু বছর আগের কথা। একটা দীঘি ছিলো। কিন্তু দীঘিটা ঘুব আজব ছিলো। অনেক মানুষ মিলে এ দীঘিটা কেটেছে। তবে অদ্ভুত ব্যাপার এটাই ছিলো যে দীঘিতে কখনো পানি উঠতো না। দীঘিটা ছিলো একটা চরের মাঝে। সবাই অনেক চেষ্টা করেছিলো দীঘিতে পানি আনার। কিন্তু পারে নি। গ্রামবাসীরা খুব চিন্তিত হয়ে গেলো কেনো এই দীঘিতে পানি আসছে না।
"দীঘিতো কাটা হলো। কিন্তু চিন্তার বিষয় হচ্ছে যে দীঘিতে এখনো পানি উঠছে না কেনো।"
"হ্যা, সেটাই তো দেখছি।"
"দীঘিতে পানি না উঠলে তো আমাদের সব কষ্টই বৃথা।"
সবাই অনেক চেষ্টা করলো দীঘিতে পানি উঠানোর। কিন্তু দীঘিতে পানি উঠলো না। কি এমন ছিলো দীঘিতে যার কারনে দীঘিতে পানি উঠছিলো না।
"আমরা তো অনেক চেষ্টা করলাম তারপর ও দীঘিতে পানি উঠলো না।"
"আমার তো মনে হয় এ দীঘিতে কিছু আছে।"
" আজব তো কি থাকতে পারে।"
"জানি কিন্তু কিছু তো আছে। তা নাহলে দীঘিতে পানি উঠবে না কেনো।"
গ্রামবাসীদের কাছে বিষয়টি কেমন জানি হয়ে দাড়ালো। সবাই দীঘির বিষয়টা ভৌতিক ভাবে নিলো। অনেক দিন চেষ্টা করলো দীঘিতে পানি উঠানোর কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউ পারলো না। আস্তে আস্তে সবাই দীঘিটাকে অভিশপ্ত দীঘি মনে করতে লাগলো। একদিন বিকালে ঝিনু আর কানু দুই বোন দীঘির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। কতকটা সন্ধ্যা হয়ে গেছিলো তখন।
"ঝিনু তাড়াতাড়ি চল সামনেই সেই দীঘি।"
" হ্যা, চল দীঘিটা পাড় হতে পারলেই বাচি।"
"হ্যা চল তাড়াতাড়ি।"
"কানু দেখ দীঘিটা একবার।"
"চুপ থাক আর তাড়াতাড়ি চল।"
সবাই শুধু দীঘিটাকে ভয় পেতো। অনেক দিন হয়ে গেলো কারো কিছু হয় নি। শুধু অদ্ভুত ব্যাপার এটাই ছিলো যে শুধু দীঘিতে পানি উঠতো না। ধীরে ধীরে মানুষ দীঘিটাকে ভুলে যেতো লাগলো। হঠাৎ একদিন ভর দুপুরে একটা বুড়ি তার নাতিকে নিয়ে দীঘিতে নামলো। দীঘিটা সম্পূর্ণ শাক পাতায় ভরে গেছিলো।
"চল নাতিন তুই আর আমি দীঘি থেকে শাক টোকাইয়া নিয়া আসি।"
" চলো নানি।"
বুড়িটির নাকে নথ ছিলো। শাক টোকাইতে টোকাইতে বুড়ি দীঘির মাঝখানে চলে গেছিলো।
"নানি এবার চলো। অনেক রদ্দুর যে।"
"তুই উইঠা পর দীঘি থেকে আমি আসতাছি।"
বুড়ির নাতি দীঘি থেকে উঠে গেলো। কিন্তু বুড়ি উঠলো না। হঠাৎ করে দীঘিটাতে পানি উঠতে লাগলো একা একা। বুড়ি প্রথমে বুঝতে পারে নি বিষয়টা।
"নানি তাড়াতাড়ি উঠো দীঘি থেকে। দীঘিতে যে পানি উঠছে।"
বুড়ি দীঘি থেকে উঠতে পারলো না। নাতি চিৎকার করতে লাগলো। গ্রাম বাসীরা সবাই জড়ো হয়ে গেলো। সকলের চোখের সামনে দীঘিটা পানিতে ভোরে উঠলো। এবং নিমিষেই বুড়িটা যেনো সবার চোখের পলকে মাছ হয়ে গেলো। বিষয়টা দেখে সবাই আতংকিত হয়ে গেলো। দীঘিতে শুধু পানিই উঠে নি। তার সাথে দীঘিটা মাছে ভোরে গেলো। সবাই অনেক বার জাল ফেলে সেই বুড়ি মাছটাকে ধরার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু পারে নি। জেলেরা অনেক চেষ্টা করেছিলো সেই বুড়ি মাছকে ধরার কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু প্রতিবছর সেই একই দিনে সেই বুড়ি মাছটি দীঘি থেকে উঠে।অনেক ঢেউ উঠে সেদিন দীঘিতে।সেই বুড়ি মাছটির নাকে সেই নথটি দেখলেই সবাই বুঝতে পারে। কিন্তু সেই দীঘিতে কি এমন।আছে যার কারনে।এমন।ঘটনা ঘটলো।তারপর থেকে গ্রামবাসীরা দীঘিটাকে অভিশপ্ত দীঘি বলে আখ্যায়িত করলো।দীঘিটা কি সত্যিই অভিশপ্ত নাকি দীঘিটাতে এমন কিছু ছিলো যা সকলের জানার উর্ধে সেটা। হয়ত সে জায়গায় তাদের দীঘি কাটাই উচিত হয়নি।
shoeb ahmed
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?