#নোবেল_শান্তি 
আজকের যে 'ইথিওপিয়া' সেটাই হাবশা এবং আবিসিনিয়া। বেলাল রা. এখানকারই লোক ছিলেন। ইসলামের প্রতি প্রথম কূটনৈতিক সমর্থন জানিয়েছিল ইথিওপিয়ার শাসক। 
 
ইসলামের প্রথম হিজরতকারী দল ইথিওপিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেন, সেটাও নবী সা. এর নবুওয়্যাতের মাত্র ৪/৫ বছরের মাথায়। এমন এক সময়ে যখন এইরকম কিছু মুসলমানদের জন্য স্বস্তির ছিল। 
 
২১ মার্চ ১৯৭৫ সাল, আজ থেকে প্রায় ৪৪ বছর আগে, এই ইথোপিয়ান সম্রাজ্য দেশটির তদানীং বাম সরকারের সেনাবাহিনী ভেঙে দেয়। সম্রাটকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। আর যুবরাজও কিছুকাল পরে হত্যার শিকার হন। 
 
এর মধ্য দিয়ে ৩ হাজারের বেশিকাল ধরে চলে আসা ইথিওপিয়ান সম্রাজ্য সমাপ্তিতে পৌঁছায়। এখনও গণতান্ত্রিক ইথিওপিয়ায় মার্ক্স ও লেনিনবাদী আদর্শের জোট ক্ষমতায়। স্মর্তব্য বিপ্লবের নামে সেখানেও গণহত্যা হয়েছে এককালে। 
 
তবে সেই রাজতান্ত্রিক সম্রাটশাসিত ইথিওপিয়ার থেকে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, সেক্যুলার বামেদের ইথিওপিয়ায় আরও বেশি জুলুম আর নির্যাতনের শিকার মুসলমানরা। 
 
মুসলিমরা সম্রাট শাসিত ইথোপিয়ায় মুসলিম ফ্যামিলি ল' ও অন্যসব আইনের যে অবাধ ব্যবহারের সুযোগ পেত তা কেবল বাম সরকার বন্ধই করে নি। বরং দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জনগোষ্ঠীটি এক রকম জাতিগত নিপীড়ন আর নির্মূল প্রচেষ্টার শিকার কেবলমাত্র নিজেদের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে। 
 
যে ইথিওপিয়ার এত গভীর ও চমৎকার সাম্য ও ন্যায়ের ইতিহাস আছে, সে ইথিওপিয়ায় মুসলমান তরুণদের ক্ষুব্ধ স্লোগান এখন, “Call me terroist but I defend my religion.' 
 
‘আমাকে জঙ্গি বলো, তবুও আমি আমার ধর্মের পথেই’। সন্ত্রাসবাদের স্লোগান তুলে ইথোপিয়াতেও ইসলামের বিরদ্ধে লড়াই কতটা প্রকট তা থেকেই এটা আন্দাজ করা যায়। 
 
আজ সেই ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী নোবেল পেলেন। ইথিওপিয়ার ক্ষমতাসীন বামপন্থী ইপিআরডিএফ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী আবি আহমাদ আলীকে পুঁজিবাদী পশ্চিমা দুনিয়া কী করে নোবেল দিল ব্যাপারটা কিন্তু খুব সহজ সমীকরণের না। 
 
আবি আহমাদ আলী যেমন তার দলকে মার্ক্সিস্ট ধারা থেকে সংস্কারবাদী বামধারার দিকে পোক্ত অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছে তেমনি পশ্চিমা বিশ্বের ওয়ার অন টেরর প্রকল্পের অন্যতম আফ্রিকান মিত্র হয়ে উঠেছে। 
 
ওয়ার অন টেররের নামে মুসলিম নির্যাতনের যে প্রকল্প তাতে ইথিওপিয়ায় ওরোমো জনগোষ্ঠীর মুসলিমরাই প্রধান লক্ষ্য। ওরোমোরাই ইথিওপিয়ার সবচে' বড়ো নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী। ওরোমোদের ষাটভাগ মুসলিম আর বাকি ৪০ ভাগ খ্রিস্টান। 
 
সর্ববৃহৎ এই ইথিওপীয় গোষ্ঠীর মুসলিম চরিত্র মুছে দিয়ে সামগ্রিকভাবে খ্রিস্টান পরিচয়ে আবির্ভূত করার যে নয়া ক্রুসেড ইথিওপিয়ায় চলছে আবি আহমাদ আলী তাঁরই প্রধান বরকন্দাজ। 
 
সে নিজেও ওরোমো মুসলিম ছিল। ধর্ম বদল করে খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছে এবং খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারেও কাজ করে এমন বহুসংগঠনের দায়িত্বে সে রয়েছেন। 
 
আফ্রিকায় মসজিদগুলোকে দখল করে চার্চে রূপান্তরিত করা, মুসলমানদের উপর জাতিগত নিধন ও নির্যাতনের যে পশ্চিমা কলোনির ইতিহাস আবি আহমাদ সেই কলোনি শাসনেরই পোস্ট মডার্ন রূপ। 
 
এই 'ইথিওপিয়া' ইসলাম ও মুসলমানের প্রেক্ষিতে গণতন্ত্র, বামপন্থা, সেক্যুলারিজম, জঙ্গিবাদ, পশ্চিমা পিস তথা শান্তি প্রকল্প এবং সাম্প্রদায়িকতা এইসব টার্ম বুঝতে প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। 
 
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আবি আহমাদ আলীকে নিয়ে যারা পোস্ট দিচ্ছেন তারা প্রত্যেকেই তার প্রশংসা করছেন। কেউ কেউ তো তাকে মুসলিম দাবিও করছে (একটা জাতীয় দৈনিকও সেরকম লিখেছে।) 
 
এই শংসাবাচকতা থেকেই বুঝবেন পশ্চিমের প্রচারমাধ্যম আমাদের মনস্তত্ত্বকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে! 
. 
- Arju Ahmed
				    				
				    				
				    				
				    				
				    				
				    				
Miraj Howlader
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Jowel Das Provas
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
md jahidul islam shakil
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Shakil Ahmed Shuvo
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?