সারাজীবন অনেক কষ্ট করে
প্রচুর নামাজ,রোজা, দান-সাদকাহ করলেন অথচ কবরে গিয়ে দেখলেন এর কোন প্রতিদানই পাচ্ছেন না, সব নস্ট হয়ে গেছে।দেখলেন আযাব ছাড়া আর কিছু জোটেনি।
কিয়ামতের ময়দানে দেখলেন আপনার নাম চিরস্থায়ী জাহান্নামি দের মধ্যে উঠে গেছে।
অবাক লাগছে?
হ্যা ভাই, এরকম হতে পারে তখন যখন আমাদের অজান্তেই আমাদের ঈমান নস্ট হয়ে যায়। একটি ফুটো বালতিতে কখনো পানি জমবে? তেমনিভাবে আমদের ঈমান নস্ট হয়ে গেলে আমরা কোন ভালোকাজের প্রতিদান পাবোনা বরং সারাজীবন জাহান্নামে থাকতে হবে। চুলন জেনে নেই ঈমান ভংগের কিছু কারন সম্পর্কে।
ঈমান ভঙ্গের অনেক কারন রয়েছে তবে উল্লেখযোগ্য কিছু কারন যেগুলো বর্তমানে প্রকট সেগুলো নিম্নরুপ:-
০১) আল্লার সাথে শরীক করা।
আল্লাহ ব্যাতিত কারো উপাসনা করা, আল্লাহ ব্যাতিত কোন নবী রাসূল বুজুর্গ কবরবাসী এদের কারো উপাসনা করা, এদের কারো মধ্যে আল্লাহর মতোই ক্ষমতা আছে, এরা আমার ভালো করার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখেন বলে বিশ্বাস করা ইত্যাদি।
একই ভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের উপর চুড়ান্ত ভরসা করা, মানত করা,আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম খাওয়া ইত্যাদিও এর অন্তর্ভুক্ত।
০২) আল্লাহ এবং বান্দার মাঝখানে এমন মাধ্যম স্থির করা যার উপর বান্দা ভরসা/তায়াক্কুল করে।
-এই বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহকে সরাসরি ডাকলে পাওয়া যাবেনা, মাধ্যম ধরতে হবে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি এদের কাছে যেতে মাধ্যম লাগে।
আল্লাহ যেরকম ভরসা শ্রদ্ধা ভক্তি পাওয়ার হকদার সেরকম শ্রদ্ধা ভরসা ভক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে করা। আল্লাহর কাছে নিজে দুয়া করা যাবেনা বা নিজে করলে কাজ হবেনা ভাবা।
০৩) মুশরিকদের এবং কাফেরদের(ইসলাম ব্যাতিত যেকোনো ধর্মের অনুসারী) কাফের মনে না করা অথবা তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষন করা অথবা তাদের কুফরী মতবাদকে সহীহ মনে করা। তারাও জান্নাতে যেতে পারে ভাবা, যেমন:- কেউ যদি বিশ্বাস করে মাদার তেরেসা ভালো কাজ করে মৃত্যুবরণ করেছে, সে মুসলিম না হলেও ভালো কাজের কারনে জান্নাতে যেতে পারে, এরকম বিশ্বাস কেউ পোষণ করলে সে কাফের হয়ে যাবে এবং তার ঈমান নস্ট হয়ে যাবে।
- সেক্যুলারিজম, কমিউনিজম ইত্যাদিকে ইসলামের থেকে উত্তম মনে করা, বা এগুলোকে জায়েজ বলে মনে করা। ইসলাম এযুগে অচল ভাবা। বা ইসলামের কিছু কিছু বিধান এযুগে অচল এরকম ভাবা।
-জেনা,ব্যাভিচার, মদপান চুরি,পিতামাতার সম্পত্তিতে নারীর অংশ, পরিপূর্ণ পর্দা, একাধিক বিয়ে, জিহাদ
ইত্যাদির জন্য ইসলামী শরীয়ত কতৃক নির্ধারিত বিধান কে অনুত্তম ভাবা, প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে এগুলোর প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্যের বদলে অন্তরে বিদ্ধেষ পোষণ করা, এরকম ভাবা যে আল্লাহ এগুলো না দিলেই ভালো করতেন (নাউজুবিল্লাহ)
০৪) দ্বীনের যে কোন বিষয় নিয়ে বিদ্রুপ করা হাসি তামশা করা। যেমন :- কেউ দাড়ি রাখলে, সুন্নাতি লেবাস পড়লে, পরিপূর্ণ হিজাব পড়লে তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করা।
-"দাড়ি জংগল জংগল লাগে, বোরখার মধ্যে শয়তান থাকে ইত্যাদি বলা"
০৫) যাদু করা।কেউ যদি জাদু শিখতে যায় বা কাউকে যাদুর মাধ্যমে বশীকরন করতে চায় এবং যাদুর ধারেকাছে যায় তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে তার ঈমান নস্ট হয়ে যাবে।
০৬) মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফের মুশরিকদের পক্ষ নেয়া এবং সহযোগিতা করা। আপনার মুসলিম ভাই/ উম্মাহর বিরুদ্ধে যদি কোন কাফের মুশরিক ব্যাক্তি/শক্তি আক্রমণ করে এবং আপনি তাদের রক্ষার চেস্টা না করে কাফের মুশরিকদের পক্ষ নেন এবং সহযোগীতা করেন তাহলে আপনার ঈমান নস্ট হয়ে যাবে।
০৭) মুহাব্বত এবং ভালবাসার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা বা কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা।
০৮) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইসিস সালাম এর নিয়ে আসা বিধানের চেয়ে অন্য কোন বিধান পরিপূর্ন বা উত্তম মনে করা।
যেমন:-ইসলাম এর থেকে অন্য কোন বিধান যেমন:- গনতন্ত্র, সেক্যুলারিজম ইত্যাদিকে ইসলামী শরীয়ত এর থেকে উত্তম মনে করা বা কোন মুসলিম এর জন্য এগুলোতে বিশ্বাস করা, এগুলোর চর্চা করাকে এগুলোর প্রতিষ্ঠার পিছনে সময় ব্যয় করাকে বৈধ ভাবা।
০৯) আল্লাহর বিধান দিয়ে শাসনকার্য পরিচালনা না করা। এই বিশ্বাস রাখা যে, ধর্ম শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত জীবনের ক্ষেত্তে প্রযোজ্য, সামাজিক এবং রাস্ট্রিয় ক্ষেত্রে ইসলামি শরীয়ত এর বাহিরে চিন্তাভাবনা করা জায়েজ।
১০) আল্লাহ যা হারাম করেছেন তাকে হালাল ভাবা, যেমন নন মাহরাম দের সাথে কথা বলা, বেপর্দা চলা, কামনার দৃষ্টিতে কোন নারীর দিকে তাকানো, বিবাহবহির্ভূত রিলেশন, সুদ ঘুদ সহ যাবতীয় হারাম বিষয়ের কোন একটিকে হালাল বা বৈধ ভাবলে ঈমান নস্ট হয়ে যাবে।
১১. নামাজ পড়া লাগেন, রোজা রাখা লাগেনা, এগুলো না করলেও চলে এরকম ভাবা এবং নিজেকে শরীয়তের উর্দ্ধে ভাবা।
১২. আল্লাহ যেসবের উপর ঈমান আনতে বলেছেন, যেমন পরকাল জান্নাত জাহান্নাম ইত্যাদির কোন কিছুতে সামান্যতম সন্দেহ পোষণ করলে ঈমান নস্ট হয়ে যাবে।
পয়েন্ট গুলো মাথায় গেথে নিন এবং কাইন্ডলি পোস্টটা শেয়ার করুন, আশেপাশে আমাদের অনেক পরিচিতজনই এরকম বিশ্বাস নিয়ে ঘুরে বেড়ায় যেটা ভাবলে শিউরে ওঠা লাগে অথচ তারা নিজেদের মুসলিম ভাবে, ওদিকে ঈমান নস্ট করে বসে আছে তার খোজ নেই। জাযাকাল্লাহ।
Habibullah Mullah
Ellimina il commento
Sei sicuro di voler eliminare questo commento ?
Md Serajul Haque
Ellimina il commento
Sei sicuro di voler eliminare questo commento ?