জ্ঞানী, আলেম বা বুদ্ধিজীবী হওয়ার একটা বিশাল দায়বদ্ধতা আছে। ঘুমন্ত বা বেহুশ মানুষ আর জাগরিত মানুষের দায়বব্ধতা এক হয় না। এক হয় না জাহান্নামের পথযাত্রী আর জান্নাতের পথযাত্রী। আলেম বা বুদ্ধিজীবীরা হলো জনগণের মাঝে সবচেয়ে জাগ্রত শ্রেণী। তাদের যোগ্যতা বলেই একটি দেশ সামনে এগুয়। ঘরের জাগ্রত মানুষগুলোর কাজ, ঘরে চোরদের চৌর্যকর্ম অসম্ভব করে তোলা। তেমনি একটি জাতির বিবেকমান মানুষ ও বুদ্ধিজীবীদের দায়িত্ব হলো, দুর্বৃত্তদের দুরাচারকে অসম্ভব করা। এ জিহাদের মূল দায়িত্বটি মূলতঃ তাদেরই। নবীজী (সাঃ) ও তার সাহাবাগণ সে জিহাদ আজীবন লড়েছেন। তাদের দায়িত্বহীনতায় যেটি ঘটে সেটি সততা বা মানবতার ভরাডুবি। তাই দেশে দুর্বৃত্তদের জয়জয়াকার দেখা এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়, বিবেকমান বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা সে দেশে কত নগন্য। ইসলামে জ্ঞানীদের মর্যাদা বহু উচ্চে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “সমগ্র সৃষ্টিকূলের মাঝে একমাত্র জ্ঞানীরাই আমাকে ভয় করে।” যে জ্ঞান সে ভয় সৃষ্টি করে না, বুঝতে হবে সে জ্ঞান প্রকৃত জ্ঞান নয়। এমন কুশিক্ষা ও কুজ্ঞান চোর-ডাকাত, সন্ত্রাসী-ব্যাভিচারী, দৃর্বৃত্ত রাজনীতিবিদ ও শাসকদেরও থাকে। সব খাদ্য-পানীয় পুষ্টি জোগায় না। খাদ্যপানীয়ের নামে বিষ পাণ হলে সেটি বরং মৃত্যকে অনিবার্য করে তোলে। তেমনি কুশিক্ষা ও কুজ্ঞানের ফলে মৃত্যু ঘটে মানবতার। অথচ সুশিক্ষা ও সুজ্ঞানের ফলটি বিশাল ও বিপ্লবাত্মক। সেটিই বাড়ায় মানুষের মানবিক গুণ। আনে চারিত্রিক বিপ্লব। সে জ্ঞান সাহসী করে সত্য ভাষণে ও মিথ্যার পরিহারে। তবে সেটি অর্জিত হয় শুধু কোরআনের পাঠে নয়, কোরআনী সত্যের আত্মীক অনুধাবনে। ফিরাউনের দরবারে যে তিনজন যাদুকর মৃত্যুকে অনিবার্য জেনেও হযরত মূসা (আঃ)এর দাওয়াত কবুল করেছিলেন -তারা সেটি করেছিলেন সে সত্যজ্ঞানের প্রবল বলে। সত্যের পক্ষে এমন সাক্ষ্যদান দুর্বৃত্তদের কাছে হত্যাযোগ্য অপরাধ। দুর্বৃত্তকবলিত দেশে সেটি সহজ নয়। দুর্বৃত্তদের দাবী, সাক্ষ্য বা ভোট দিতে হবে একমাত্র তাদের দল, নীতি ও রাজনীতির পক্ষে। গ্রহণযোগ্য নয়, সে নীতির কোনরূপ বিরুদ্ধাচারণ। সে অপরাধে ফিরাউনও সেদিন তিনজন যাদুকরকে হাত পা উল্টা দিক থেকে কেটে কেটে হত্যা করেছিল। নিষিদ্ধ করেছিল হযরত মূসা (আঃ)এর ইসলাম-প্রচার। এমন ফ্যাসীবাদ শুধু ফিরাউন, নমরুদ বা হিটলারের একার নয়। যুগে যুগে একই রূপ অভিন্ন বর্বরতা দেখিয়েছে সকল স্বৈরাচারি শাসকেরা। এমন স্বৈরাচারিরাই বাংলাদেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আইন করে নিষিদ্ধ করেছিল ইসলামের নামে সংগঠিত হওয়া বা শরিয়ত প্রতিষ্ঠার রাজনীতি। আল্লাহর বিধান শরিয়ত যে শ্রেষ্ঠ বিধান সে বিষয়ে জনতার সামনে সাক্ষ্যদানও তাদের কাছে অপরাধ। সেটিকে তারা বলছে মৌলবাদ। জিহাদ যে সমাজ বিপ্লবের আল্লাহর নির্দেশিত হাতিয়ার এবং নবীজী (সাঃ)র জীবনের বড় শিক্ষা সে সত্যটির পক্ষে কথা বলাটিও চরমপন্থি রূপে বর্নিত হচ্ছে। অথচ তারা নিজেরা সর্বশক্তি দিয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে মার্কসবাদ, সমাজবাদ, পুঁজিবাদ, সেকুলারিজম, জাতিয়তাবাদের পক্ষে। মতবাদের নামে গড়ে উঠা সেসব সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতাকে খাড়া করেছে আল্লাহ ও তাঁর শরিয়তি বিধানের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ রূপে॥
- ডক্টর ফিরোজ মাহাবুব কামাল এর ব্লগ থেকে
MD Zahidul Islam
حذف التعليق
هل أنت متاكد من حذف هذا التعليق ؟
MD Shamim Khan
حذف التعليق
هل أنت متاكد من حذف هذا التعليق ؟