"মুহতারাম, নামাজ পড়ার সময় নামাজের সারির পেছন থেকে যদি বাচ্চাদের হাসির আওয়াজ না আসে, তবে পরবর্তী প্রজন্মের ব্যাপারে ভয় করুন"
.... এই কথাগুলো তুরস্কের মসজিদের দেওয়ালে লিখা থাকে। আমাদের দেশের মসজিদ গুলোর কথা একটু ভাবুন তো..
একজন বিত্তবান পিতা যখন মসজিদে আসার সময় তার বাচ্চাকে নিয়ে আসেন, তখন দেখা যায় সমাজের অন্যান্য লোকেরা ঐ বাচ্চাটির সাথে নানানভাবে ভাব জমানোর চেষ্টা করে। যেমনঃ আঙ্কেল কেমন আছো, তোমার জামাটি অনেক সুন্দর, মাশ আল্লাহ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগতেছে, দোয়া করি তুমি অনেক বড় হও, তোমার আম্মু আজ কি রান্না করেছে, নিয়মিত মসজিদে আসবা, কেউ কিছু বললে আমাকেই বলবা, আজকে আমার সাথেই বসো, তুমি অনেক ভালো ছেলে, দুষ্ট ছেলেদের সাথে মিশিওনা...ইত্যাদি। মূলত ছোট বাচ্চার সাথে কথাগুলো বলা হয় বাচ্চার বাবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। বাচ্চার বিত্তবান বাবার সাথে একটু ভাব জমানোর জন্যই।
হয়তো আশেপাশে আরোও অনেক গুলো বাচ্চা রয়েছে, যাদের বাবা বেকার, অথবা অন্যের কাজ করে দিনাতিপাত করে, দিনমজুর, অথবা বাচ্চাটি গরিব পরিবারের, অথবা এতিম। কিন্তু এই বাচ্চা গুলোকে তাদের মমতাময়ী মা অনেক আদরযত্ন করে, নানান উৎসাহ দিয়ে, সুন্দরভাবে পরিপাটি করেই মসজিদে পাঠিয়েছেন যেন বাচ্চাটি মসজিদে গিয়ে কিছু শিখতে পারে, যেন নামায পড়ার অভ্যাসটি ছোটকাল থেকেই গড়ে উঠে। অথচ সমাজের লোকগুলো এদেরকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে। কেউ বাচ্চা গুলোর প্রতি একটু উদারতার পরিচয় দিয়ে, নিয়মিত মসজিদে এসে নামায পড়ার প্রতি বাচ্চা গুলোকে উৎসাহ দিয়ে বাচ্চা গুলোর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়না। অথচ কেউ যদি এই বাচ্চাগুলোর সাথে একটু হাসি মুখে কথাবলে তখন তাদের ছোট্ট হৃদয় আনন্দে আপ্লুত হয়। আবার অনেক সময় মসজিদের ভিতরে এদের জায়গাও হয়না, মসজিদের বারান্দা এদের জন্য নির্ধারিত জায়গা।
কোনো বাচ্চা একটু শব্দ করলেই সাথে সাথে কতিপয় মুরব্বী এমন আচরণ করে যেন বাচ্চাগুলোকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করতে পারলেই উনাদের মনের ঝাল মিটবে! মুরব্বীদের এই ধরণের আচরণে বাচ্চাগুলো মসজিদে আসার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলে। অথচ প্রত্যেক কাতারে মুরব্বীদের পাশাপাশি বাচ্চাগুলোকেও যদি বসার সুযোগ করে দেওয়া হতো তাহলে তারা দুষ্টুমি করার সুযোগই পেতোনা, হুজুরের কথা গুলো মনযোগী হয়ে শুনতো! বাচ্চাগুলো একদিন বড় হয়, কিন্তু সমাজের এই মুরব্বিদের আচরণ গুলো তাদের স্মৃতিপটে অক্ষত থাকে।
প্লিজ সমাজের এই নোংরা বৈষম্য দূর করুন, আল্লাহকে ভয় করুণ। বাচ্চাদেরকে প্রিয় রাসূল(সঃ) অনেক বেশি ভালোবাসতেন, আমাদের উচিত এই বাচ্চাগুলোর প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা। মসজিদের প্রতি তাদেরকে আকৃষ্ট করে তোলা।

ANWAR HOSSAIN
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Habibullah Mullah
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Md. Mohin Uddin
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?