পানির রাসায়নিক সংকেত হল H2O: পানির একটি অণুতে দু'টি হাইড্রোজেন পরমাণু একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। পদার্থের তিনটি অবস্থাতেই পৃথিবীতে পানির অস্তিত্ব বিদ্যমান। পানিীয় বাষ্প ও মেঘ হিসেবে আকাশে, সমুদ্রের পানি হিসেবে মহাসাগরে, হিমশৈল হিসেবে মেরু অঞ্চলের মহাসাগরে, হিমবাহ ও নদী হিসেবে পর্বতে এবং ভূগর্ভে পানির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। 
 
মনে করা হয় বৃহদাকার গ্রহগুলির অভ্যন্তরে উচ্চ চাপ ও তাপমাত্রায়, পানি আয়নিত অবস্থায় থাকে। ওই অবস্থায় পানির অণুগুলি ভেঙ্গে গিয়ে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন আয়নের একটি মাধ্যম তৈরী করে। আরো বেশি চাপে অক্সিজেন কেলাসিত হয়ে গেলেও হাইড্রোজেন আয়নগুলি মুক্তভাবে অক্সিজেন আয়নের কেলাসের সজ্জার মধ্যে ভেসে বেড়ায়। এই বিশেষ অবস্থাকে পানির অতিআয়নিত অবস্থা বলে।[১৩] 
 
পানির মুখ্য ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মগুলি হল: 
 
স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় পানি তরল পদার্থ। পানি স্বাদ ও গন্ধহীন। পানি ও বরফের নিজস্ব বর্ণ সামান্য নীল হলেও, কম পরিমাণে উপস্থিত থাকলে উভয়ই বর্ণহীন মনে হয়। পানিীয় বাষ্পও বর্ণহীন, ফলে অদৃশ্য।[১৪] 
দৃশ্যমান তড়িচ্চুম্বকীয় বর্ণালীতে স্বচ্ছ হওয়ায় পানিতে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে, যা জলজ উদ্ভিদের জীবনধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও অতিবেগুনী এবং অবলোহিত রশ্মিসমূহের প্রায় সম্পূর্ণ অংশই পানিতে শোষিত হয়। 
অক্সিজেন পরমাণুর তড়িৎ-ঋণাত্মকতা হাইড্রোজেনের তুলনায় বেশি হওয়ায় তাতে সামান্য ঋণাত্মক তড়িৎআধান থাকে এবং হাইড্রোজেন পরমাণুগুলি সামান্য পরিমাণে ধনাত্মক তড়িৎধর্মী হয়। এরফলে পানির অণুতে একটি দ্বিমেরু ভ্রামকের সৃষ্টি হয়। এই ধর্মের জন্যে পানির অণুগুলি তার আকারের তুলনায় অস্বাভাবিক রকমের বেশি সংখ্যক আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধনী তৈরী করতে পারে। এইসব কারণে পানির অণুগুলির মধ্যে সংসক্তি বল অত্যন্ত দৃঢ় হয়। যে কারণে পানির পৃষ্ঠটান[১৫] এবং কৈশিকীয় বলের মান বেশি হয়। অত্যন্ত সরু নল (কৈশিকীয় নল) দ্বারা মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে পানির ওপরে উঠে যাওয়ার প্রবণতাকে কৈশিকীয় ক্রিয়া বলে। পানির এই ধর্মের জন্যেই মাটি থেকে পানি শোষণ করে বেঁচে থাকা উদ্ভিদেরা তা করতে পারে। 
পানির নিজস্ব দ্বিমেরু ভ্রামক থাকায় পানি প্রায় সব তড়িৎযোজী পদার্থকে দ্রবীভূত করতে পারে। এছাড়াও বহু সমযোজী পদার্থও পানিতে দ্রবীভূত হওয়ায় পানি রাসায়নিক পরীক্ষাগারে খুব ভালো দ্রাবক হিসেবে কাজ করে। একারণে পানিকে কখনো কখনো সর্বজনীন দ্রাবক বলা হয়ে থাকে। পানিতে দ্রবীভুত হয় এরকম কিছু পদার্থ হলঃ লবণ, চিনি, অম্ল, ক্ষারক, বেশ কিছু গ্যাস বিশেষত- অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড ইত্যাদি। এছাড়াও কিছু পদার্থ আছে যারা বিশেষ করে পানিতে দ্রবীভূত হয়না; যেমন- তেল, গ্রিজ ইত্যাদি।

				    				
				    				
				    				
				    				
				    				
				    				
Nuhin Al Fardin
Ellimina il commento
Sei sicuro di voler eliminare questo commento ?