২২ বছরে চ্যানেল আই


হৃদয়ে বাংলাদেশ এই স্লোগান নিয়ে ১৯৯৯ সালের ১ অক্টোবর বাংলা ভাষার প্রথম ডিজিটাল টেলিভিশন চ্যানেল, চ্যানেল আই এর জন্ম। দেখতে দেখতে চ্যানেলটি ২১ বছর পর্দাপন করেছে। আজ ‘চ্যানেল আই’ পথচলার ২২ বছরে যাত্রা শুরু করবে।

.

কোটি দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত চ্যানেল আইয়ের এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল প্রতিপাদ্য ‘২২-এ চ্যানেল আই, সামনে এগিয়ে যাই’।

চ্যানেল আই’র ২২ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে শুভেচ্ছাবাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, গণমাধ্যম জাতির বিবেক ও সমাজের দর্পণ। গণমাধ্যম সময়ের কথা বলে, অতীতের সাথে বর্তমানের যোগসূত্র স্থাপন করে এবং ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ে পথ দেখায়। 

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চ্যানেল আই’র দর্শক, কলাকুশলী, শুভানুধ্যায়ীসহ চ্যানেল আই পরিবারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, গণমাধ্যম জাতির বিবেক ও সমাজের দর্পণ। গণমাধ্যম সময়ের কথা বলে, অতীতের সাথে বর্তমানের যোগসূত্র স্থাপন করে এবং ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ে পথ দেখায়। গণমানুষের বঞ্চনা ও চাওয়া-পাওয়ার কথা তুলে ধরে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক। গণমাধ্যম সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের গঠনমূলক সমালোচনা, গণতন্ত্রকে শক্তিশালীকরণ, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনমত গঠনের মাধ্যমে সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনায় ইতিবাচক অবদান রাখে।

এদিকে প্রতি বছরের মতো এবারও চ্যানেল আইয়ের জন্মদিনে দেশের প্রধান সকল সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। শুভেচ্ছা বাণীতে চ্যানেল আই পরিবারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ।

ক্রোড়পত্রের জন্য বিশেষ একটি নিবন্ধ লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ।

এদিকে চ্যানেল আইয়ের ২১ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেছেন, বাইশ বছরে এসে আমাদের বলতে হচ্ছে- সামনে এগিয়ে যাই। অথচ বয়স যখন একুশ পার হলো তখন ভাবার কথা ছিল পেছনে ফিরে তাকানোর আর অবকাশ নেই। অসাধারণ গতি নিয়ে ছুট দেয়ার কথা ছিল। রঙিন পৃথিবীটা আরো বর্ণিল করে তোলার কথা ছিল।

এবার হঠাৎ করেই পৃথিবী পাল্টে ফেলল তার চেহারা। মানুষের হাতে অনেক কিছুই আর রইল না। গতি নেমে গেল। করোনার আক্রমণে স্তব্ধ হয়ে গেল সব। সমস্ত কিছু অচল অচল ভাব। এক অন্যরকম পৃথিবী। করোনার সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ। এমন সব জিনিস থেমে গেল বা আমরা থামাতে বাধ্য হলাম যা কেবল জুল ভার্নের সায়েন্স ফিকশন গল্প-উপন্যাসে সম্ভব। ভবিষ্যতে এই সময়কাল নিয়ে সাহিত্য সৃষ্টি হবে, চলচ্চিত্র হবে।

যা দেখে বা পড়ে মনে হবে এই রকম অবিশ্বাস্য সময়ও মানুষ পার করেছে। এই নিশ্চল স্থবির সময়েও যেটি চালু আছে সেটি হচ্ছে স্বপ্ন। যেটি এখনও গতিষ্মান সেটি হচ্ছে বিশ্বাসের শক্তি।

মানুষ সেই প্রাণী যে জানে জীবন মানে অবশ্যই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। একই সঙ্গে বেঁচে থাকার আনন্দ উপভোগ করাটাও সবচেয়ে বড় অর্জনের বিষয়। এই আনন্দের জন্য, বিশুদ্ধ আনন্দের জন্য যুদ্ধ করছে চ্যানেল আই। যত প্রতিকূলতাই আসুক, সময় যত কুয়াশাচ্ছন্নই হোক সদা সর্বদা আপনাদের সাথে নিয়ে বলব, সামনে এগিয়ে যাই।

অন্যদিকে চ্যানেল আইয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে সম্পদনা পর্ষদ জানিয়েছেন, চ্যানেল আই’র ২২ বছরে পদার্পণের এ সময়ে আমাদের চোখের সামনে সেলুলয়েডের মতো ভেসে উঠছে আগের একুশটি জন্মদিন উদযাপন, যেখানে প্রথমে সিদ্ধেশ্বরীর সেই ছোট অফিস এবং পরে তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই’র চেতনা চত্বরে ছিল সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ। এভাবে গত দুই দশকে ১লা অক্টোবর তারিখটি বাংলাভাষী মানুষের মনের ক্যালেন্ডারে একটি উৎসবের দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে চ্যানেল আই’র জন্য মানুষের অন্তহীন ভালোবাসার কারণে। এবার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কিন্তু ভয়ঙ্কর এক ভাইরাসের কারণে উৎসবের সেই সম্মিলনী থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি, কিন্তু মানুষ যে শেষ পর্যন্ত অজেয় তার প্রমাণ হিসেবে প্রায় অনেকটা ঘরবন্দি জীবনের এ সময়ে এবারও জন্মদিনের উৎসব আয়োজন থাকছে যদিও সেটা শুধুই চ্যানেল আই’র পর্দায়।

আমাদেরকে ভালোবাসার মানুষদের সরাসরি এবার আমরা স্বাগত জানাতে পারছি না, কিন্তু শুভেচ্ছার কোনো কমতি নেই। নানা মাধ্যমে– সেই আগের আমলের মতো চিঠিতে, ই-মেইলে এবং এখনকার এ সময়ে ডিজিটাল যতো মাধ্যম আছে তার সবগুলোতেই মানুষ আমাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং জানাচ্ছেন। তাদের শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসায় আমরা আপ্লুত। ঠিক কী বলে আমাদের কোটি কোটি দর্শক এবং শুভানুধ্যায়ীদের কৃতজ্ঞতা জানাবো সেই ভাষা আমাদের জানা নেই। কবিগুরুর ভাষায় বলতে হয়: গ্রহণ করেছো যতো, ঋণী ততো করেছো আমায়। ২২ বছরে পদার্পণের এ সময়ে আমরা আমাদের দর্শক-শুভানুধ্যায়ীদের আরও একবার ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। চ্যানেল আই’র জন্মদিনে সকলকে শুভেচ্ছা, সকলের জন্য আমাদের অতল শ্রদ্ধা এবং অন্তহীন ভালোবাসা।

আমাদের এবারের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর মূল প্রতিপাদ্য: ‘২২-এ চ্যানেল আই, সামনে এগিয়ে যাই’। করোনা মহামারীর এ সময়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহসটা আরও বেশি দরকার। বাংলাদেশের মানুষের সেই সাহসটা ছিল এবং আছে। এ সাহসের কারণেই করোনার কামড়ের পরও বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। নতুন সেই যুদ্ধে সাহসের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছে চ্যানেল আই। মানুষের সমর্থন এবং সাহসে আমরা আরও এগিয়ে যাবো, সেই প্রতিজ্ঞা আমাদের আছে। যতো প্রতিকূলতাই আসুক, সময় যতো কুয়াশাচ্ছন্নই হোক– প্রিয় দর্শক, আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আপনাদের সমর্থনে সদা সর্বদা বলবো, সামনে এগিয়ে যাই।

উল্লেখ্য প্রতি বছর ১লা অক্টোবর জন্মদিনে মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় চ্যানেল আই চত্বর। করোনা মহামারির কারণে এ বছর সেই সম্মিলনী না থাকলেও উৎসব আয়োজনে আরও বর্ণিল হয়ে উঠেছে চ্যানেল আইয়ের পর্দা।

 
 
422 Visualizações

Comentários