সাহসী উদ্যোগের জন্য অভিনন্দন বাংলাদেশ সরকার।


ছবিঃ কালেক্টেড

.

সরকার সারাদেশে জি টিভি, জি বাংলা, জি বাংলা সিনেমা, জি সিনেমা ও জিং, জি অ্যাকশন, জি বলিউডসহ ZEE টিভি নেটওয়ার্কের সব টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। সাহসী উদ্যোগের জন্য অভিনন্দন বাংলাদেশ সরকার। 



দেশের হাজার কোটি টাকা পাচারের কথা বাদ দিলেও ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর অবাধ সম্প্রচার নানাভাবে প্রভাব ফেলছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়। বিশেষ করে এসব চ্যানেলের সিরিয়ালগুলো রাখছে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব। কারণ, উচ্চবিত্তের পরকীয়া, বহুবিবাহ, বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ, পারিবারিক বিরোধ প্রভৃতি এসব সিরিয়ালের মূল বিষয়বস্তু। যা কঠিন ব্যাধির মতোই মানসিকতায় আঘাত হানছে দেশীয় অনেক দর্শক তথা নারী দর্শকদের। এমনকি প্রচার চলতি একটি সিরিয়ালের একটি চরিত্রের নামে পোশাক এদেশের মার্কেটে আসার পর সেটি না পাওয়ায় ঘটেছে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এসব সিরিয়ালের প্রভাবে আমাদের দেশে ভয়াবহভাবে বাড়ছে পরকীয়া, বহুবিবাহ, বউ শাশুড়ি দন্ধ,মনোমালিন্য, সন্দেহ, ডিভোর্সসহ বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক ঘটনা। আর অনেকেই আসক্ত হয়ে পড়ছে হিন্দি ভাষায়। মোদ্দাকথায়, পুরো সমাজব্যবস্থাকে অস্থির করে তুলছে ভারতীয় চ্যানেলগুলোর এসব সিরিয়াল। এ কারণে দেশের সমাজব্যবস্থা পড়েছে হুমকির মুখে।

বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল দেখার জন্য টাকা দিতে হলেও পশ্চিমবঙ্গে ফ্রিও বাংলাদেশের কোনো চ্যানেলের সম্প্রচার করতে দেয়া হচ্ছে না। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের বাজারে আঘাতের ভয়ে বাংলাদেশী চ্যানেল সেখানে প্রচার করতে দিচ্ছে না। 
পৃথিবীর প্রায় সব দেশে বিদেশী চ্যানেল দেখানো হয় না। ভারতীয় চ্যানেলগুলো প্রতিবেশী চীন ও নেপালে নিষিদ্ধ ও পাকিস্তানে সীমিতভাবে প্রদর্শিত হয়ে থাকে। থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে তাদের নিজস্ব টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি, হাতে গোনা কয়েকটি চ্যানেল প্রদর্শনের অনুমতি রয়েছে। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশে বিদেশী চ্যানেল নিয়ন্ত্রিত। 

বাংলাদেশে অনেক ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ থাকলেও এ ব্যাপারে কেন কোন নিয়ন্ত্রণ নেই তা বোধগম্য নয়। ২০০৫ সালে তথ্য মন্ত্রণালয় আপত্তিজনক ১৩ টি পে-চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পরও অজ্ঞাত কারণে তা আবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বলা হয়ে থাকে, ক্যাবল-অপারেটরদের আন্দোলনের মুখে ঘোষিত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। জনমনে তখন ক্যাবল-অপারেটরদের শক্তির উৎস নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। তাদের মনে আরো প্রশ্ন জেগেছিল, কোন অদৃশ্য শক্তির নির্দেশে দেশের জন্য ইতিবাচক হওয়া সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। 

সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে, এখন সরকারের শক্তি বেশি না ক্যাবল-অপারেটরদের শক্তি বেশি তা দেখার জন্য আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। 

Comments