বনানীর অগ্নিকাণ্ড, সরকারের একটু সাদিচ্ছা রোধ করতে পারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান


ছবিঃ প্রথম আলো

.

বনানীর বহুতল ভবনে আগুন ও নিহতের ঘটনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো আমরা আসলে দুর্যোগ মোকাবেলায় কতটা অসহায় বা সক্ষম । দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে সেটা যে কোনো দেশে কিন্তু সেই দুর্ঘটনা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি ও তার কার্যকারিতা কতটুকু তা এইঘটনাই নয় কিছুদিন আগে চকবাজারের আগুনের ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে । বিমান বাহিনীর উদ্ধার কাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে ।প্রিয়জনদের এবং উৎসুক জনতার ঘটনাস্থলে ভিড় করার বিষয়টা স্বাভাবিক।উন্নত দেশ হলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে জায়গাটা এম্বুলেন্স ও ফায়ার ব্রিগেডের জন্য খোলা রাখতো এইক্ষেত্রে সেটা দরকার ছিল কিন্তু করতে না পারার দুটো কারণ
এক মানুষ নিজেরাও উদ্ধার কাজে শরিক হাতে চায়
দুই পুলিশের সেই জ্ঞানের ট্রেনিং ও চেষ্টার অভাব । 
এছাড়া উন্নত দেশে বহুতল ভবনে আগুন লাগলে তা নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের নিরাপদে বের হয়ে আসার নিয়মিত ট্রেনিং বাধ্যতামূলক যা আমাদের দেশে অনুসরণ করা হয় না ।মনে রাখতে হবে আগুন যাতে না লাগে তার ব্যাবস্থা ও সেই সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক থাকা দরকার এবং আগুন লেগে গেলে তা নেভানো বা নিরাপদে সেই জায়গা থেকে বের হওয়ার পথ ও ট্রেনিং বা প্রাকটিস আপনার জীবন বাঁচাতে পারে ।

 

আজকের বনানীর এফআর টাওয়ার অগ্নিকাণ্ড নিয়ে আল-জাজিরার প্রতিবেদন। 

সরকারের প্রতি অনুরোধ করবো ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে একটি পাবলিক তহবিল গঠনের অনুমতি দেওয়া হউক। আমরা দেশের সকল মানুষ সেই তহবিলে টাকা জমা করবো। যে যার সামর্থ্য অনুসারে ওই তহবিলে টাকা রাখবো, দেশের জনগণের টাকায় আগুন নেভানোর জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে। 

প্রতিটা অগ্নিকাণ্ডের সময় আমরা দেখছি এক এক জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী কিভাবে জীবন বাজি রেখে আগুনে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের কোন দোষ নেই, চেষ্টার কোন ত্রুটি নেই, শুধুমাত্র আধুনিক যন্ত্রাংশের অভাব রয়ে গেছে।
যমুনা টিভির প্রতিবেদনঃ ধোঁয়ার মধ্যে থেকে হাত নেড়ে বাঁচার আকুতি

১০/১২ কোটি টাকা দিয়ে রোবট সুফিয়াকে আনা হয়, হাজার কোটি টাকা খরচ করে স্যাটেলাইট উড়ানো হয় অথচ মাত্র ২২ তলা পর্যন্ত উঠবার সিঁড়ি নাই ফায়ার সার্ভিসের! ভবনের আগুনের থেকে প্রানে বাঁচতে অনেকেই উপর থেকে নীচে লাফ দিয়েছিলেন যাদের সবাই নিহত বা গুরুত্বর আহত হয়েছেন সামান্য প্রতিরক্ষা নেট অথবা ফোমের ব্যবস্থা থাকলেও অনেককে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হত। অনেকেই দেখলাম টেলিফোনের তার ধরে নামতে গিয়ে পড়ে মারা গিয়েছেন অথচ কমান্ডো বাহিনীর মাধ্যমে তাদের সহজেই উদ্ধার করা সম্ভব ছিল।
সময় টিভির নিউজঃ জীবন বাঁচাতে উঁচু ভবন থেকে লাফ দিচ্ছে দিশেহারা মানুষ

শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সময় আমাদের জরুরী লেন উপহার দিয়েছিল অথচ আজ জরুরী লেনের অভাবে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের উদ্ধারের জন্য পৌঁছুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকতে হয়েছে।

প্রতিবারই আগুন লাগে, মানুষ মারা যায়, আর ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন কখনো প্রকাশ পায় না আর প্রকাশ পেলেও তাদের পরামর্শ গ্রহন করা হয় না। রাজউকের উচিৎ বহুতল ভবনে নিয়মিত পরিদর্শন করা এবং তাদের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যেন ভবন কর্তৃপক্ষ ভবনগুলোতে কার্যকারী অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও ফায়ার এক্সিট রাখে। 


Comments