বিশ্ব ইজতেমা শুরু, লাখো মুসল্লির কণ্ঠে ‘আল্লাহু আকবার’


রাজধানীর উপকণ্ঠে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে চার দিনব্যাপী ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার

.

রাজধানীর উপকণ্ঠে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে চার দিনব্যাপী ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের ইজতেমা শুরু হয়। ইজতেমার ময়দানে দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি।

প্রথম পর্বে আজ পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক আমবয়ান পেশ করেন। পুরো ময়দানে বয়ান, জিকির, তালিম ও মাশোয়ারায় নিমগ্ন রয়েছেন মুসল্লিরা। মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা শুক্র ও শনিবার ইজতেমায় অংশ নেবেন এবং শনিবার বিকালে তারা ময়দান ত্যাগ করবেন। শনিবার তাদের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সা’দপন্থীরা আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। তার অনুসারীরা মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলামের নেতৃত্বে সোমবার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিবেন। এর মধ্য দিয়ে এবারের ইজতেমা কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির মুরব্বি মো. মাহফুজুর রহমান জানান, মাওলানা জিয়াউল হকের উর্দু মূল বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা নূরুর রহমান। আজ দুপুর দেড়টার দিকে ইজতেমা ময়দানে শুক্রবারের বৃহত্তর জুমার নামাজ আদায় করা হবে। এতে ইমামতি করবেন কাকরাইলের মাওলানা মো. জোবায়ের।

তিনি আরো জানান, পুরো ইজতেমার ময়দান ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য ৫০টি খিত্তায় (ভাগে) বিভক্ত করা হয়েছে। কোন খিত্তায় কোন জেলার মুসল্লিরা অবস্থান করবেন, তা নির্দেশ করে অস্থায়ী সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে মুসল্লিরা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন। মুসল্লিদের এই স্রোত শুক্রবারেও অব্যাহত আছে। শনিবারের প্রথম দফার আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিদের ঢল নামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে দেশের বৃহৎ এই ধর্মীয় জমায়েত উপলক্ষ্যে ইজতেমা এলাকা জুড়ে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সর্বত্র সিসি ক্যামেরা বাসানো হয়েছে। কোনো প্রকার গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সতর্কতা দিয়েছেন র‌্যাবের প্রধান।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবার পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ, র‍্যাব ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা সদস্যরা কয়েকটি স্তরে বিভক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিটি খিত্তায় সাদা পোশাকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, এবার সাদপন্থী ও যোবায়েরপন্থীদের মধ্যে বিরোধের জেরে ইজতেমার আগে বেশ কয়েকবার দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি উভয় পক্ষ ইজতেমার মাঠ দখল করতে সড়কে অবস্থান নিয়েছিলো। পরে তাদের মধ্যে সংগঠিত সংঘর্ষ ইজতেমার মাঠেও ছড়িয়ে পড়ে। দুপক্ষের এই বিরোধ মীমাংসায় দফায় দফায় বৈঠক করেন সরকারের কর্মকর্তারা। পরে প্রশাসনের নির্দেশনায় এবার ইজতেমা চার দিন করার মাধ্যমে বিরোধ নিরসন করা হয়।

426 Views

Comments