বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতিপর্ব


বাংলা সাহিত্যে আর যা যা পড়তে হবে তাহলো- বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী, বাংলা সাহিত্যে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা,

.

ভূমিকা

বাংলা সাহিত্যে ভাল মার্কস পেতে চাইলে অবশ্যই সাহিত্যের খুঁটিনাটি বিষয় ভালভাবে পড়তে হবে। এ ব্যাপারে যে কথাটি না বললেই নয় তা হল বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণ একটু জটিল বিষয়। একটি ছোট্ট উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে। বাংলা সাহিত্যের তিনজন লেখক তাঁদের নাম লিখতেন এভাবে- মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, শহীদুল্লা কায়সার, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। এখানে শহীদুল্লাহ শব্দটিকে তিনভাবে লেখা হয়েছে। একটু সচেতনভাবে না পড়লে এই বানান গুলোতে ভুল হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভবনা বিরাজমান। এরকম বাংলায় এমন অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় আছে যা অনেক জটিল। কোনো শিক্ষার্থী যদি উচ্চ নম্বর পেতে চান তাহলে সঠিক তথ্যটি তাকে ভাল করেই জানতে হবে। তাই বাংলা পড়ার ক্ষেত্রে বা গ্রন্থ কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে হতে হবে আরো সতর্ক। আমি অনেক খেটেখুঁটে বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অতি যত্নসহকারে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করেছি যাতে আপনারা উপকৃত হতে পারেন। 

বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ

আজ হতে হাজার বছরেরও বেশিকাল আগে শুরু হয়েছিল বাংলা সাহিত্যের পথচলা। এই দীর্ঘ সময় সাহিত্যের গতি ও বৈশিষ্ট্য সমানতালে অগ্রসর হয়নি, হওয়ার কথাও নয়। নদী যেমন তার উৎস থেকে যাত্রা শুরু করে নানাভাবে গতি পরির্বতন করে তেমনি বাংলা সাহিত্য জন্মলগ্ন থেকে আধুনিককাল পর্যন্ত নানা পরির্বতনের মধ্য দিয়ে সামনে এগিয়ে চলেছে। ইতিহাস পাঠের সুবিধার্থে বাংলা সাহিত্যের এই যুগকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যুগগুলো হচ্ছে-(ক) প্রাচীন যুগ, (খ) মধ্যযুগ ও (গ) আধুনিক যুগ।

প্রাচীন যুগ

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, এ যুগের সময়সীমা ৯৫০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। যুগ সম্পর্কিত এই অভিমত দীনেশচন্দ্র সেন, সুকুমার সেন, গোপাল হালদার, মুহাম্মদ এনামুল হক প্রমুখ সমর্থন করেছেন। ড. মুহম্মদ শহীদু্ল্লাহর মতে, প্রাচীন যুগের সময়সীমা ৬৫০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তিনি এই মত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন বটে, কিন্ত প্রামাণিক তথ্য যথেষ্ট  মেলেনি। এর প্রধান সমস্যা হলো, প্রাচীন গ্রন্থ  চর্যা’র কোনো কবিই এতো প্রাচীন ছিলেন না। বাংলা সাহিত্যের নিদর্শন চর্যাপদ রচিত হয় এ যুগে।

চর্যাপদ

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শনের নাম চর্যাপদ বা চর্যাচর্যবিনিশ্চয় বা চর্যাগীতিকোষ বা চর্যাগীতি। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজদরবারের রয়েল লাইব্রেরী থেকে ১৯০৭ সালে এটি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ সালে (১৩২৩ বঙ্গাব্দ) কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে চর্যাপদ আধুনিক লিপিতে প্রকাশিত হয়। এর সম্পাদনা করেন মহা মহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। এর রচয়িতা বৌদ্ধ সহজিয়াগণ। চর্যাপদের বিষয়বস্তু বৌদ্ধ ধর্মের সাধন ভজনের তত্ত্ব। এটি একটি গানের সংকলন। চর্যাপদের সংখ্যা নিয়ে মতান্তর আছে। সুকুমার সেনের হিসেবে ৫১টি। মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে ৫০টি। চর্যাপদ ছিন্নাবস্থায় পাওয়া যাওয়ায় এই মতান্তরের সৃষ্টি। উদ্ধারকৃত পদের সংখ্যা ৪৬টি। চর্যাপদের কবির সংখ্যা নিয়েও মতভেদ আছে। সুকুমার সেনের মতে ২৪ জন। মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে ২৩ জন। সে বিচারে এক কথায় বলা চলে, চর্যাপদের কবির সংখ্যা ২৪ জন মতান্তরে ২৩ জন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেন কাহৃপা। তার অন্য নাম কৃষ্ণাচার্য। চর্যাপদের প্রধান কবি কাহৃপা ১৩টি পদ রচনা করেন। ১২টি পদ পাওয়া গেছে। আর ২য় সর্বোচ্চ পদ লিখেন কবি ভুসুকুপা (৮টি)। চর্যাপদে ২৪, ২৫, ও ৪৮তম পদ পাওয়া যায়নি। আর ২৩নং পদটি খন্ডিত আকারে পাওয়া গেছে। চর্যার পদগুলো সন্ধ্যা বা সান্ধ্য ভাষায় রচিত। চর্যাপদের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন কবি শবরপা। চর্যাপদ যখন প্রথম প্রকাশিত হয় তখন এর নাম ছিলো ‘হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষায় বৌদ্ধ গান ও দোহা।’ এটির বর্তমান বয়স প্রায় এক হাজার বছর। 

অন্ধকারযুগ

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ১২০১ সাল থেকে ১৩৫০ সাল পর্যন্ত সময় অন্ধকার যুগ হিসেবে পরিচিত। এই সময়ে বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য কোনো নিদর্শন পাওয়া যায়নি।

মধ্যযুগ

মধ্যযুগের সময়সীমা ১২০১-১৮০০। অন্ধকার যুগও মধ্যযুগের অন্তর্ভূক্ত।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

মধ্যযুগে রচিত বাংলা ভায়ার প্রথম কাব্যগ্রন্থ এটি। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দ) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং পুঁথিশালার অধ্যক্ষ বসন্তরঞ্জন রায় পশ্চিম বঙ্গের বাঁকড়া জেলার বনবিষ্ণুপরের কাছে কাকিল্যা গ্রামের এক গৃহস্থের গোয়ালঘর থেকে এটি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে(১৩২৩ বঙ্গাব্দ) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় পুঁথিটি “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। পুঁথিটির প্রথম দু’টি পাতা এবং শেষ পৃষ্ঠা Read More

 

মো: নজরুল ইসলাম

০১৭১৬-৩৮৬৯৫৮

 

Yorumlar