এবার নাইকির জুতায় ‘আল্লাহ’ লেখা, মুসলিমদের ক্ষোভ


এবার নাইকির জুতায় ‘আল্লাহ’ লেখা, মুসলিমদের ক্ষোভ

.

যুক্তরাজ্যের কম্পানি মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার (এম অ্যান্ড এস) কম্পানির টয়লেট পেপারে ‘আল্লাহ লেখা রয়েছে’ এমন অভিযোগে কম্পানিটি বর্জনের দাবির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নাইকির জুতায় ‘আল্লাহ’ লেখার অভিযোগ উঠলো।

নাইকির নতুন একটি জুতোর লোগো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা আরবি অক্ষরে হুবহু ‘আল্লাহ’-এর মতো দেখাচ্ছে। এই ঘটনায় জুতোটি বাজার থেকে প্রত্যাহার করার জন্য বিশ্বের মুসলিমরা দাবি জানিয়েছেন। এ ঘটনাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে পিটিশন চালু করেছেন সাইগা নোরিন নামের এক নারী। পিটিশন চালুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ৬ হাজার ব্যক্তি এতে স্বাক্ষর করেছেন।

নাইকির যে জুতোর বিরুদ্ধে মুসলিমরা বিক্ষোভ করছেন সেটা সম্প্রতি বাজারে আসা ট্রেইনার মডেলের নাইকি এয়ার ম্যাক্স ২৭০। মুসলিম ক্রেতা সাইকা নোরিন জুতায় এই নকশাকে আরবি হরফে ‘আল্লাহ’ লেখা বলে মনে করেন। দ্রুতই তিনি অনলাইনে একটি পিটিশন চালু করেন। পিটিশনের দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের বাজার থেকে জুতোটি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

নোরিন অভিযোগ করেন, ইসলামের প্রতি নাইকির অবজ্ঞাসূচক মনোভাব রয়েছে। পিটিশনে তিনি উল্লেখ করেছেন, জুতোয় আল্লাহর নাম বসানোর ক্ষেত্রে নাইকির অনুমতি দেওয়া ভয়ানক ও অপমানজনক। এটা অবমাননাকর এবং মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত আক্রমণাত্মক এবং ইসলামকে অপমান।

নোরিন নামের ওই নারী লিখেছেন, ‘নাইকি তাদের নাইকি এয়ার ম্যাক্স ২৭০ জুতোর লোগোতে আরবি অক্ষর আল্লাহর মতো করে নকশা করেছে। এই জুতো দিয়ে নিশ্চিতভাবেই পদদলন, লাথি মারা, কাদা বা নোংরা বস্তুর সংস্পর্শে আসবে।’ যেসব মুসলিম তার সঙ্গে একমত তাদেরকে পিটিশনে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

১৫ হাজার স্বাক্ষরের লক্ষ্য নিয়ে চালু হওয়া পিটিশনটিতে ১২৫০০ জন স্বাক্ষর করেছেন। অনেকেই টুইটারে নাইকি’র বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনেছেন।

নোরিনের পিটিশনকে সমর্থন জানিয়ে এক ব্যক্তি লিখেছেন, কেন স্পষ্টভাবে আরবিতে আল্লাহ লেখা জুতো বিক্রি করছে নাইকি। এই জুতোর বিক্রি বন্ধ করুন। বিরক্তিকর ও অপমানজনক।

সচেতনভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে অপমানের অভিযোগ অস্বীকার করেছে নাইকি। তাদের দাবি, এই লোগো শুধু নাইকির এয়ার ম্যাক্স এর ট্রেডমার্ক। এটার কোনও ধর্মীয় তাৎপর্য নেই। নাইকির প্রতিনিধি বলেন, এটা এয়ার ম্যাক্সের ব্র্যান্ডকে তুলে ধরার জন্যই ব্যবহার করা হয়েছে। এর অন্য কোনও অর্থ বা প্রতীকী গুরুত্ব সচেতনভাবে তুলে ধরা হয়নি।

এর আগে  ১৯৯৭ সালে নাইকি’র এয়ার বেকিন নামে স্নিকারের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যুক্তি হিসেবে জানানো হয়, অত্যন্ত নিখুঁতভাবে লোগোর ডিজাইনটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যার কারণে লেখাটি এমন দেখাচ্ছে। পরে ওই জুতা বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। নোরিন পিটিশনে ওই ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, ওই সময় তাদের তৈরি এয়ার বেকিন মডেলের স্নিকারের লোগোতে ‘আল্লাহ’ শব্দটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। তখন তারা যুক্তি দিয়ে বলেছিল, ডিজাইনটা অত্যন্ত সুক্ষা করতেই ঘটনাক্রমে এমনটা হয়ে যেতে পারে। যদি তা-ই হয় তাহলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কেন হলো?’

Comments