উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মহান নেতা মহাত্মা গান্ধী সর্বপ্রথম ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে হরতাল পালন করেছিলেন। তারপর থেকে এটি সাধারণত রাজনৈতিক বিরোধী দল কর্তৃক ক্ষমতাসীন দলের দুর্ণীতি, অবৈধ এবং বে-আইনি কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের একট মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে উন্নত দেশের এ আন্দোলনের সাথে আমাদের উপমহাদেশের দেগুলোর আন্দোলনের অনেক অমিল রয়েছে। উন্নত বিশ্বে হরতাল কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে পালন করলেও আমাদের দেশের সর্বত্র এটি পালিত। এ দিনে রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে। রাস্তায় কোনো যানবাহন চলে না। বেশির ভাগ লোক তাদের গন্তব্যে যেতে পারে না। রাস্তায় মিছিল বের হয়। যানবাহন চলাচল বন্ধ করার জন্য পিকটাররা রাস্তায় টায়ার পোড়য় এবং বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করে। এ নিয়ে প্রায়ই পিকেটারদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটে। মাঝে মাঝে বিরোধী দল এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের মধ্যে চলে হামলা ও পাল্টা হামলা। ফলে কিছু মানুষের অকালমৃত্যু ঘটে। এ ছাড়া হরতালের সময় পটকা এবং বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এভাবে হরতাল ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং জাতীয় জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না বলে তাদের পড়াশুনার মারাত্মক ক্ষতি হয়। অসুস্থ লোকজন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে পারে না। কল-কারখানাগুলোতে কাজ বন্ধ রাখতে হয়। দেশের উৎপাদন মানাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ফলে, দেশের অর্থনীতি চরমভাবে ভেঙে পড়ে। সর্বোপরি, হরতাল হচ্ছে দেশ-সমাজ তথা জাতির জন্য ধ্বংসাত্মক একটি বিষয়।