* তরবারি নয় ভালবাসার জোরে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।


* ইসলাম পরস্পরের প্রতি মহব্বত-ভালবাসা সৃষ্টির ধর্ম। তাই প্রেম-ভালবাসা বৈধ ও পুন্যর কাজ।

.

যৌন চাহিদা মানুষের প্রতি আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত। তাই যারা বিয়ে করতে পারেনি তাদের জন্য ভিন্ন উপায়ে যৌন চাহিদা পুরন করাটা দুষের কিছু নয়।
* ইসলাম পরস্পরের প্রতি মহব্বত-ভালবাসা সৃষ্টির ধর্ম। তাই প্রেম-ভালবাসা বৈধ ও পুন্যর কাজ।
* তরবারি নয় ভালবাসার জোরে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। তাই সামরিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন করা মুসলমানদের জন্য হারাম। অতএব, মুসলমানরা কোন অবস্থাতেই জিহাদের নামে কোন ধরনের আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিতে পারেনা।
উপরোক্ত কথাগুলো কোন নাস্তিক
বলেনি, এমনকি কোন আনাড়ি মুসলমানও
বলেনি। বরং কথাগুলো একজন জনপ্রিয়
বিজ্ঞ ইমাম মসজিদের মিম্বরে দাঁড়িয়ে
বলেছে। তবে এখন নয়…বহু আগে মিশরের
কায়রোয় অবস্থিত একটি বিখ্যাত মসজিদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন ৷
আসলে ঐ ইমাম মুসলমানই ছিলনা। সে ছিলো শত্রু পক্ষের গুপ্তচর। তার আসল নাম ডিওক। ইসলাম সম্পর্কে তার গভীর পড়াশুনা ছিলো। বেশ ধারণ করেছিল আলেমের। অসম্ভব সুন্দর ছিল তার বচন ভঙ্গি। তাই সে তখন খুব সহজেই কায়রোর বিখ্যাত মসজিদে ইমামতির চাকরি ভাগিয়ে নিয়েছিলো। অতঃপর সে কুরআন হাতে মসজিদের মিম্বরে দাঁড়িয়েই ইসলামে চরম ক্ষতি সাধন করে যাচ্ছিল। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করে মসজিদে বসেই সে সাধারণ মুসলমানদের ঈমান হরণ করছিল। অত্যান্ত সুকৌশলে সে মুসলিম জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছিল। অপূর্ব বচন
ভঙ্গির সুবাদে তার ভক্ত -মুরিদের সংখ্যা বাড়তে লাগলো। দুর-দুরান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল তার খ্যাতি।
১১৭০ সাল…মিশরে তখন সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবি (রহ.) এর শাসনকাল চলছিলো। তিনি একের পর এক অঞ্চল বিজয় করে যাচ্ছিলেন। সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুরা কিছুতেই তার সাথে পেরে উঠছিলনা। চোখের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল শত্রুদের। তারা কিছুতেই সালাউদ্দিনের অগ্রযাত্রা রোধ করতে সক্ষম হচ্ছিলনা।
অতঃপর, শত্রুরা গোপন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে
মুসলিমদের পরাজিত করার ছক কষল। তারা এ উদ্দেশ্যে মুসলিম সাম্রাজ্যে দু'দল উচ্চতর ট্রেনিং প্রাপ্ত গুপ্তচর পাঠালো। একদল নারী, অন্যদল পুরুষ।
নারীদের অস্ত্র ছিল যৌবন। তাদের কাজ ছিলো যৌবন দ্বারা মুসলিম তরুণদের নৈতিক অধঃপতনের দিকে ধাবিত করা, রাজ্যময় অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিয়ে মুসলিম জাতির চেতনা- ঐতিহ্য ধ্বংস করে দেয়া।
অন্যদিকে পুরুষ গুপ্তচরদের কাজ ছিলো মুসলিমদের ছদ্মবেশ ধারণ করে মুসলিম জাহানের মধ্যে বিভক্তি ও বিশৃঙ্খলা করা, ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করে সাধারণ মুসলমাদের ঈমান-আমল হরণ করা, মুসলিম জাতিকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে দিয়ে সংগ্রামী ও জাতীয় চেতনা ধ্বংস করে দেয়া।
এই ছিল শত্রুদের বিনা যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার নীল নকশা ৷
বেশ জোরে- শোরে চলছিল গুপ্তচরদের কার্যক্রম। অশ্লীলতা আর নৈতিক অধঃপতনে ডুবে যাচ্ছিলো মুসলিম সাম্রজ্য। বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পরছিলো পুরো জাহানে। হুমকির মুখে
ইসালামী শাসন।
কিন্তু তখন শাসন ক্ষমতায় ছিলেন সুদক্ষ শাসক সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবি (রহ.) তার সঙ্গী ছিলেন চৌকস গোয়েন্দা প্রধান আলীবিন
সুফিয়ান (রহ.)৷ তাদের চৌকস কর্মতৎপরতায়
তখন ধরা পড়েছিল গুপ্তচররা। বন্দি করা
হয়েছিল শত শত গুপ্তচরকে। এদেরই একজন
ইমাম রুপী ডিওক। সেই ডিওক স্বীকার
করেছিলো তারা মুসলিমদের মধ্যে এমন একদল মুনাফিক তৈরি করতে চায়, যারা কুরআন হাতে নিয়ে মসজিদের মিম্বরে বসেই ইসলামী চেতনা ধ্বংস করবে।
কিন্তু তখন সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবি
(রহ.) এমনি এক দক্ষ মুসলিম শাসক ছিলেন,
যিনি গুপ্তচরদের সমস্ত ষড়যন্ত্রের জালকে ছিন্ন-ভিন্ন করে মুসলিমদের জাতীয় চেতনাবোধ জাগ্রত করেছিলেন, সমস্ত কুসংস্কারকে সমুলে উৎখাত করে ছিলেন।
অতঃপর সমগ্র মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ব করে
বিশ্বজয়ে ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন ৷
সেই যুগ অনেক আগে পেরিয়ে গেলেও বন্ধ হয়ে যায়নি সেই ষড়যন্ত্র। তাই আজ আমাদের মুসলিম সমাজ বিজাতীয় নোংরা সংস্কৃতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। আমাদের যুবকরা ডুবে যাচ্ছে অশ্লীলতায়। চেতানাহীন হয়ে পড়েছে তারা। হয়তো হাজার হাজার ডিওক মিশে আছে
আমাদের সমাজে। যারা নানাবিধ শিরক-বিদআত তথা কুসংস্কার চালু করে মুসলিম জাতিকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে দিচ্ছে, মুসলিম
উম্মাহকে শত ভাগে খন্ড খন্ড করে দিচ্ছে, জিহাদের অপব্যাখ্যা করে মুসলিম জাতিকে সংগ্রাম বিমুখ করে অলস জাতি বানিয়ে দিচ্ছে।
আজ আমাদের একজন সালাহউদ্দিন আইয়ুবি প্রয়োজন ৷ ভীষণ প্রয়োজন। যিনি ডিওকদের সমস্ত ষড়যন্ত্রের জালকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দিবে। সমুলে উৎখাত করবে সমস্ত বেহায়পনা আর কুসংস্কারকে। কুসংস্কার মুক্ত করে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবে। জুলুমের হাত থেকে মুক্তি পাবে বিশ্বের সকল মুসলমান। অতঃপর বিশ্বের দরবারে আবারো আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো।
হে আল্লাহ!! আমাদেরকে আরেকজন সালাউদ্দিন আইয়ুবী দান করুন।(আমীন)

539 Views

Comments