বিশ্ব ইজতেমা


রাত পোহালেই ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা। ফজরের পর আম বয়ানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে মূল ইজতেমা।

.

মঙ্গলবার থেকে ইজতেমামুখী মানুষ। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বাড়ছে মুসল্লিদের ভিড়। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপক্ষো কর দলে দলে মানুষ ইজতেমা ময়দানে এসে উপস্থিত হচ্ছেন।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ফজরের পর আম বয়ান হবে। এরপর আলমি শুরার তিনদিন দেশ-বিদেশ থেকে আসা তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বিরা লাখ লাখ মুসল্লির উদ্দেশ্যে ঈমান ও আমলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নজমের সাথীদের উদ্দেশ্যে বয়ান পেশ করার সময় নির্ধারিত ছিল। ইজতেমা ময়দানে মুসল্লির উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় বয়ান পেশ সকালেই অনুষ্ঠিত হয়। নজমের সাথীদের উদ্দেশ্যে বয়ান করছেন মাওলানা রবিউল হক।

মাওলানা রবিউল হক সাথীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এত কষ্ট করে ময়দানে এসে যদি কেউ দুনিয়াবি কথা বলেন, তবে এটা হবে অনেক বড় গাফলতের কথা।’

তিনি ইজতেমায় অবস্থানকালে তিন দিনকে দুনিয়াবি কথায় না কাটিয়ে দ্বীনি চিন্তা ফিকিরে অতিবাহিত করার নসিহত পেশ করেন।

বিগত বছরগুলোতে ইজতেমার দিনই বেশিরভাগ তাবলিগের সাথী ময়দানে আসতেন। কিন্তু এবারের ইজতেমায় বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই তাবলিগের সাথীরা আসা শুরু করেন। যারা ময়দানে এসে উপস্থিত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশেই আগের পুরনো সাথী।

বছরব্যাপী দেশজুড়ে আলেম-ওলামাদের দাওয়াতি কাজের মেহনতে তাবলিগের দ্বীনি কাজে চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মনে করেন অনেকেই।

এখন পর্যন্ত যারা ময়দানে এসেছেন তারা সঙ্গে করে পলিথিন নিয়ে এসেছেন, যাতে বৃষ্টিতে তা ব্যবহার করতে পারেন। রান্না-বান্নায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যাপারেও তারা সচেতন।

ময়দানের প্রস্তুতি সম্পন্ন

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সহায়তায় পুরো ইজতেমার ময়দান এলইডি লাইট দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। ময়দানের মধ্যে যাতায়াতের পথগুলো মেরামত, পরিচ্ছন্নতা সবই সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

চিকিৎসাসেবা

ইজতেমা ময়দানের পাশে আগত মুসল্লিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে ক্যাম্পগুলোও উদ্বোধন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চলছে চিকিৎসাসেবা।

আইন-শৃঙ্খলা ও নজরদারি

পাঁচ স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সেবায় মোতায়েন আছে সাড়ে ৮ হাজার পুলিশ সদস্য। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ওয়াচ টাওয়ারের পাশাপাশি পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।

এছাড়া সারাদেশ থেকে আগত সব জেলার মানুষের জন্য খিত্তা নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের জন্য সার্বিক সুবিধা ও ব্যবস্থাসমৃদ্ধ আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে।

অতিরিক্ত মুসল্লি অংশগ্রহণের আশংকা থেকে ১৪টি অতিরিক্ত খিত্তা বাড়ানো হয়েছে। খালি রাখা হয়েছে বেশিকিছু খিত্তা। কোনো জেলার মানুষ কিংবা কোনো মাদরাসার ছাত্র বেশি হলে তাদের খালি খিত্তায় অবস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

রোববার (১২ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ১৭-১৯ জানুয়ারি।

Comments