রোমান্টিক লাভ স্টোরি ❣️❣️


যারা যারা রোমান্টিক লাভ স্টোরি শুনতে চান বা পড়তে চান তারা কমেন্ট করুন।

.

ডায়েরির পাতায়

 

জীবনে এক নতুন মোরে পা দিতে চলেছি আমি। যদিও বারেবারে ঐ মোরের মাথা থেকে ফিরে এসেছি বারেবার, তবুও আবার ঐ মোরেই পা বাড়াতে যাচ্ছি। ভালবাসা, প্রেম। আমার জীবনে এসেছে বারেবারে। প্রতিবারেই হৃদয়ে দোলা দিয়ে গেছে। কিন্তু এবার ঘটনাটা একেবারেই বাতিক্রম। এমন একজনের প্রেমে পরেছি যাকে আমি দু চোখে দেখিইনি।শুধু তার লেখা পরে তার প্রতি আলাদা একটি আকর্ষণের জন্ম নিয়েছে আমার হৃদয়ে। আর এই আকর্ষণটা প্রেম। নিরভেজাল ভালবাসা। এর মধ্যে কোন খাঁদ নেই। নেই কোন প্রাপ্তির আসা। পুরুষ মানুষের নারিদের সৌন্দর্যের ওপর আলাদা আকর্ষণ থাকে,আমারও আছে তা আমি অস্বীকার করছি না। তবে এবার কোন ভৌতিক টানে নয়, সম্পূর্ণ অতি প্রাকিতিক ও অলৌকিক টানে আমি তার প্রতি দুর্বল হয়েচি। আমাদের যুগে মুখবই যার ইংরেজি করলে দারায় ফেছবুক, এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার তার শাথে পরিচয়। নিয়মিত কথা আদান প্রদান আর হাসি ঠাট্টার কিছু পত্রালাপ আমাদের দুজনকে দুজনার অতি কাছে নিয়ে এসেছে । তবে আমি তার সাথে কথা বলেছি মোবাইলে। তার কণ্ঠ সারাদিন আমার মনের মধ্যে বাজতে থাকে। তার না দেখা মুখ খানি সারাদিন আমার কল্পনার রাজ্যে ঘরাঘুরি করে। তার সাথে কথা বললে মনে হয় তাকে যেন সর্বশক্তিশালী আল্লাহ তাআলা আমার জন্য তৈরি করেছেন। মনে হয় আমার দেহ তো আমারি মাঝে পড়ে আছে। কিন্তু আমার আত্মা,আমার মন তার মাঝে। আমি তাকে অনুভব করি। আমি থাকি মেহেরপুরে, আর সে থাকে রংপুরে। মেহেরপুর থেকে কয়েকশো মাইল দূরে। আমরা কেউ কাউকে চিনিনা,তবুও দুজন দুজনাকে যেন ভিসন ভাবে চিনি।

কিছুদিন আগে একটা নাটক দেখেছিলাম, নাটকের নাম নীলপরি নিলাঞ্জনা। নাটক টি দেখে আমার ভীষণ ভাল লেগেছিল। ফেসবুকে দুজন ছেলেমেয়ে যোগাযোগ করে দেখা করার উদ্দেশে। কিন্তু ভুল্ক্রমে নায়কের সাথে যেই মেয়েটির দেখা হবার কথা তার সাথে দেখা না হয়ে দেখা হয় অন্ন একটি মেয়ের সাথে। তারপর তাদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় প্রেম।পরে যদিও তারা বুঝতে পারে ভুল করে অন্ন জনের সাথে দেখা হয়ে গেছে। তবুও তারা দুজন দুজন কে জীবন সাথী হিসেবে মেনে নেয়। আসলে এটায় হবার। কারন আল্লাহ যার সাথে যাকে লিখে রেখেছেন তার সাথেই তাকে মানায়। আর যখন দুটো মন জোড়ায় জোড়ায় মিলে যায় তখন তারা অনুভব করে স্বর্গীয় সুখ। নীলপরি নিলাঞ্জনা নাটক টা দেখার পর থেকে আমার মনে হত আমার জীবনেও ফেসবুক থেকে কোন একটি মেয়ের আগমন ঘটবে। আর ঘটলও তাই। কিন্তু আমরা এখনও দেখা করিনি। আমরা কেউ কাওকে চিনি না। তবুও আমরা দুজন দুজনাকে ভীষণ ভাবে চিনি।

আজ দুপুর বেলা মন টা বড়ই খারাপ ছিল। কেন জানিনা নিপা কে ভালবেসে আমি আবার কোন ভুল করলাম নাতো? তার পেছনে একটা কারণ ছিল।সকাল এগারটায় যখন নিপাকে ফোন দেই তখন ওর সাথে কথা বলে আমার তেমন একটা ভাল লাগেনি। তখন ও হয়ত কোন কারনে অন্নমনস্ক চিল।আমার কথা গুলর থেকেও ওর হয়ত অন্ন কোন গুরুত্ত পূর্ণ কাজ ছিল। তাই হয়ত ও আমার সাথে তেমন একটা কথা বলেনি। যার ফলে সারে এগারটার সময় প্রাইভেট পরতে গিয়েও আমার মন তেমন একটা ভাল ছিল না। দুপুর একটায় যখন বাড়ি ফিরি আমার শরীর তখন ভীষণ ক্লান্ত হয়ে যায়। ক্লান্তি আর অবশাদ নেমে আসে দু চোখে। এক ঘন্তার জন্য মায়ের বিছানায় গরাগরি দিয়ে ২ টার দিকে ভাত খেয়ে আবার যখন বিছানায় শুয়ে চিন্তার দরজা খুলে দেই তখন প্রথম চিন্তা আসে আমার মনে যে আমি গত দুই দিনে একটা মেয়ের জন্য প্রায় ১০০ টাকারও বেশি মবাইলের পেছনে খরচ করেছি। তারপর আরও মনে হল যেদিন থেকে ওর সাথে আমার যোগাযোগ শুরু হয় সেদিন থেকে জানিনা কেন জানি আমার শরীর তাও খুব খারাপ যাচ্ছে। আর যে বিষয় টি আমার মনে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছিল সেটা হচ্ছে আমার ভবিষ্যৎ। নিপা আর আমি আমরা দুজনেই প্রায় সমবয়সী। মাত্র এক বসরের ছোট বড়। আমরা দুজনেই লেখা পরা করি।আমি শবে মাত্র ডিপ্লোমা ৩য় বর্ষের ছাত্র। এর পরেও আমাকে বি এস সি পরতে হবে। সেই জন্য আমাকে এখনো অন্তত ৬ বছর লেখা পড়ার পেছনে মনযোগী হতে হবে। তারপর আমার পরিবার, আমার পারিবারিক অবস্থাও খুব একটা ভাল না। আর সেই কথা আমার বুক ফুলিয়েও লক মুখে বলে বেরাতে ভাল লাগে না। এই রকম হাত টানটান অবস্থায় নিপার সাথে আমার সম্পর্ক তিকিয়ে রাখা খুব বেশি বিলাসিতা হয়ে যায়। তাছাড়া নিপা যদি কোন দিন আমার হয়েও যায় আর হবার পর ওর জীবনে আমার ভাবির মত দুঃখ নেমে আসবে না তার গ্যারান্টি আমি দিতে পারি না। ঐ মুহূর্তে আমার ইচ্ছা ছিল নিপাকে ভুলে যাওয়া। যাতে করে ও আর যাই হোক আমার সাথে জীবন কাটাতে এসে ওকে কোন দুঃখ কষ্টের শিকার না হতে হয়। সেই জন্য আমি সিদ্ধান্ত নেই যে ওকে আমার ফেসবুক একাউন্ত থেকে ব্লক করে দেব।অ যেহেতু আমার দুত মোবাইল নাম্বারই জানে, সেই জন্য দুটো নাম্বার থেকেই ওকে ব্ল্যাক লিস্ট এ ফেলে দেব। এবং আমি আমার তীক্ষ্ণ চিন্তা শক্তির ফলাফল স্বরূপ ঐ কাজ গুলো করেও ফেলি। কিন্তু....... শুধু কয়েক সেকেন্ডেই আমি জানি না আমার কি হয়েছিল। আমার ভেতরে সমস্ত অস্তিত্ব জুরে এক হাহাকারের সৃষ্টি হয়ে গেল। আমি যেন নিজেই নিজের চোখে অপরাধি হয়ে গেলাম। ঐ মুহূর্তে আমার মনের মধ্যে একটা কথাই বারবার বাজতে লাগল। আর সেটি হচ্ছে আমি বিনা অপরাধে মেয়েটিকে শাস্তি দিলাম। আমার তীক্ষ্ণ চিন্তা শক্তিকে ছাপিয়ে আমার বিবেক আমাকে তারনা দিতে লাগল।‘এ তুই কি করলি? মেয়েটি তকে বিশ্বাস করেছিল। তোকে বিশ্বাস করে ওর মোবাইল নাম্বার দিয়েছে তোকে। ও ওর সব লজ্জা কে ছাপিয়ে ওর মনের সব কথা বলেছে তোকে। ও তোকে বলেছিল তুমি যেন কখনও আমার বিশ্বাস কে ভেঙে দিও না, কিভাবে আমি পারলাম ওর বিনা দোষে শাস্তি দিতে?’আমি বারে বারে আমার বিবেক কত্রিক দংশিত হচ্ছিলাম। আরেকটি কথা আমার ঐ মুহূর্তে মনে পড়ে গেলো। কথাটি আমার মামি আমাকে বলেছিল। কোন প্রিয়জন যদি বিনা দোষে কোন মেয়ের দিলে আঘাত দেয়, তাহলে সেই আঘাতের চেয়ে বড় আঘাত পৃথিবীতে আর হতে পারে না। ঐ মুহূর্তে আমার মনে পরল আমার মায়ের কথা। আমার বাবা বিনা দোষে আমার মাকে কতই না কষ্ট দিয়েছিল, তবে আমি কি আমার বাবার মতই হলাম, যখন আমার তিব্র ইচ্ছা ছিল যে আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও সেই ভুল করব না যেই ভুল আমার বাবা করেছিল। আমার আর মনে হল আমি মৃত্যুর পড়ে হাশরের ময়দানে কি জবাব দেব আল্লাহর কাছে? এই চিন্তা গুলো আমার মন কে ছিন্ন ভিন্ন করে দিল।আর আমার মনের গভিরে অদেখা, অজানা আমার থেকে শত মাইল দূরে থাকা কাল্পনিক এক মুখের প্রতি আমার মনে হাজার গুন বেশি ভালবাসা সৃষ্ট হয়ে গেলো। সত্যি....এরই কি নাম প্রেম? এরই কি নাম ভালবাসা? ঐ মুহূর্তে আমি আমার ভুল বুঝতে পারি, আর সাথে সাথে নিপাকে পুনরায় আমার কন্টাক্ট এর আওতায় নিয়ে আসি।জানি না আমার এ সিদ্ধান্ত আমার জীবনে কি বিপদ দেকে নিয়ে আসবে। শুধু একটা কথায় আমি জানি, যত কষ্টই আসুক, আমি আমার দিক থেকে কখনও ঐ মেয়েটিকে কষ্ট পেতে দেব না। যদি কখনও ও দুঃখ পায়, তাহলে আমার মন আর আল্লাহই জানবেন আমি কততা দুঃখ পেলাম।

নিপা অবশ্য আমার থেকে লেখাপড়ায় ছিনিয়োর। তার মানে ও এস এস সি পরিক্ষা দেয় ২০০৯ সালে আর আমি ২০১১ তে। লেখা পড়ার হিসাবে মাত্র ২ বসরের বড়। তবে বয়সে আমি ওর থেকে ১ বসর ৯ দিনের বড় । বয়সের দিক দিয়ে আমাদের সম্পর্কে কোন ঝামেলা হবে না। কিন্তু আজ ও আর আমি যখন জানতে পারলাম আমাদের লেখাপরার মদ্ধেকার পার্থক্য টা তখন থেকে আমার মন টা ভারি বিষণ্ণ হয়ে আছে। নিপার মন তাও অবশ্য একটু খারাপ। আমার থেকে একটু বেশিই খারাপ বোধ হয়, সেটা আমি জানি। নিপা হয়ত ভাবছে ওর থেকে আমি লেখা পরায় জুনিওর। ও আমার সাথে কিভাবে খাপ খাওয়াবে। ওর ধারনা আমাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক টা আসলে ঠিক যায় না। বাস্তবিক পক্ষে আমিও একই কথা ভাবছি। কিন্তু আমি ওর প্রতি যে অনুভুতিতে জরিয়ে পরেছি সেই অনুভুতির জগত থেকে কোন ভাবেই আমার এই বাস্তব চিন্তার পক্ষে সারা পাচ্ছি না। নিপারও মনে হয় আমারই মত অবস্থা। আল্লাহই জানেন কি লেখা আছে আমদের ভাগ্যে। আমাদের ভাগ্যে যাই লেখা থাকুক না কেন, আমি নিপাকে ছেরে দিতে পারব না। ওকে ভুলে জেতে পারব না। ওকে ছেড়ে দেয়া মানে নিজেকে মেরে ফেলা। ওকে হারিয়ে ফেলা মানে নিজেকে নিজের থেকে হারিয়ে ফেলা। আর আমি কিছুতেই নিজেকে নিজের থেকে হারিয়ে ফেলতে পারব না। ওর প্রতি আমার এই ভালবাসাকে আমি কিছুতেই মিথ্যে হয়ে জেতে দিতে পারব না। আমি আমার জীবনে অনেক মেয়েকে দেখেছি। অনেকের সাথেই মিশেছি। তারা অনেকেই সুন্দরি ছিল। তাদের সৌন্দর্য আমাকে আকৃষ্ট করতে পারলেও তারা কখনও আমার মনকে ছুয়ে যেতে পারেনি। কিন্তু নিপা ওর কথা সম্পুরন আলাদা। দেখিনি পর্যন্ত ওকে আমি....জানিনা কেমন ওর চেহারা, তারপরেও ওকে আমি ভালবাসি। এই ভালবাসা এমন ভালবাসা, জা কাউকে বঝান যাবে না। কিসের এত তান, আমি তাও বোঝাতে পারব না। শুধু জানি ও আমাকে বোঝে, আমার সুখ দুঃখ গুলো ও আমার থেকে ভাগাভাগি করে নেয়। ও আমার থেকে কয়েকশো মাইল দূরে থেকেও ও যেন আমার অনেক কাছে রয়েছে।

আজ সাত দিন হল নিপার সাথে কোন কথা হয় না। ও ফোন দেয় না। আমি বারবার দেই কিন্তু ওর নাম্বারটা বন্ধ দেখায়। ও অবশ্য আমাকে বলেছিল কেন ওর নাম্বার টা বন্ধ থাকবে। ও আমাকে বলেছিল ও আরেকটা নতুন নাম্বার নিয়ে আমাকে ফোন দিবে। তারপর আমাদের কথা হবে। কারনটা আমি জানতে চাইলাম। ও বলেছিল সমস্যা আছে। পরে আমাকে নতুন সিম কার্ড কিনে জানাবে। আমিও আর জানতে চাইনি। ওর কথা ছিল এক দুই দিনের মধ্যে ও আমাকে ওর নতুন নাম্বারটা দিয়ে দেবে। কিন্তু আজ প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলো ওর কোন খজ নেই। সপ্তাহ দুই এক আগেকার কথা। সেদিন বিকেলে আমি আর আমার দুই বন্ধু আসাদ আর পিয়াস এক সাথে সরকারি কলেজ মাঠে বসলাম আড্ডা দেবার জন্য। আমি কিছু দিন যাবত খুব কর্ম বাস্ততার মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করছিলাম। সেদিন বিকেলে আমি ভীষণ ক্লান্ত ছিলাম। মনটাকে একটু শান্ত করবার জন্য বিকেলে বন্ধুদের সাথে মাঠে বসেছিলাম। ঐ মুহূর্তে নিপার সাথে প্রচণ্ড কথা বলতে ইচ্ছা করছিল। আসাদ আর পিয়াস ও জেকে বসল আমি নিপার সাথে কি কথা বলি টা শোনার জন্য। আর নিপার সাথে দুষ্টুমি করার জন্য ওরাও ব্যাক সাউন্ড করবে বলে ঠিক করল। আমি বারবার নিপার নাম্বারে কল দিচ্ছিলাম। কিন্তু ওর নাম্বার বিজি দেখাচ্ছিল। আমি এমনিতেই ভীষণ ক্লান্ত ছিলাম, তার ওপর নিপা আবার অন্য কারো সাথে অনেক সময় ধরে কথা বলছিল। তাতে আমার মন আরো খারাপ হয়ে গেলো। এর মধ্যে আসাদ আর পিয়াস আমাকে নানা ভাবে দুষ্টামি করার জন্য, আমাকে রাগানোর জন্য, নিপার সম্পর্কে নানা কথা বলতে লাগল। এতে আমি সেদিন নিপার প্রতি আরো বেশি অভিমানি হয়ে পরি। তারপরেও আমি নিপাকে ফোন দিই। নিপা এক সময় ফোন ধরে এবং আমার সাথে কথা বলে। আমি যখন নিপার সাথে কথা বলছিলাম তখন আসাদ আর পিয়াস আমার সাথে নানা ভাবে দুষ্টামি করছিল। জেটা নিপা শুনতে পায়, এবং ও বেশ অবাক হয় অথবা ওর মনে কিছু একটা হয় যেটা শুরুতেই একটা ঝামেলার শুরু করে। এর পরে ওরা ওদের দুষ্টামির মাত্রা আরও বারিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে ওরা মাকে বলে নিপার ছবির কথা। আমি নিপাকে বলি তুমি তোমার নতুন ছবি গুলা আমাকে কবে দিবা। নিপা আমাকে বলে, কিছুদিন পরে, কিন্তু আমি এত তারাহুরা কেন করছি সেটাও ও জানতে চায়। আমি ওকে সত্য টা বলি যে আমার বন্ধুরা দেখতে চায়। নিপা যদিও এর আগে আমাকে ওর একটা ছবি দিয়েছিল। তার পরেও আমার ওর থেকে আরও ছবি পাওয়ার আসা ছিল। এক পর্যায়ে নিপা আমাকে বলে আমি ওর ছবি আমার বন্ধুদের কেন দেখাব। আমি ওকে বলি যে, তোমার এর আগে দেয়া ছবিটাও তোঁ দেখিয়েছি। নিপা এতে একটু নারাজ হয়েছিল হয়ত। ও আমাকে বলেছিল আমি কেন আমার বুন্ধুদেরকে ওর ছবি দেখালা। এতে করে আমার মাথা গরম হয়ে যায়, আর আমি বেচারি নিপাকে বকা দেই। এটা ছিল আমার জীবনে প্রথম নিপাকে বকা দেয়া। আমি ওকে বলি যে আমি ওর সাথে আর কোন কথাই বলব না। তাই বলে আমি ফোনটা কেটে দেই, কিন্তু নিপা আমাকে কল দিতে থাকে। আমি তখন ভীষণ রেগে ছিলাম। আসাদ আর পিয়াস তাদের কৃতকর্মের জন্য ভীষণ লজ্জিত হল।

ওরা আমাকে বলল আমি যেন নিপার সাথে সব ঝামেলা মিটিয়ে ফেলি, আর ঝগড়া না করি। কিন্তু আমি তখন ওদের কথা বুঝতে চেষ্টা করিনি। আমি নিপার ফোন টা ধরে ওকে আবারও বিনা কারনে আরও কিছু করাকরা কথা শুনাই। ও কোন প্রতিবাদ করেছিলনা। শুধু একটা কথায় বলেছিল, তুমি আমাকে এভাবে কেন বলছ। আমি জানি না, আমি সেদিন ওভাবে ওকে কেন বলেছিলা। আমি জানিনা, ওকে কেন কষ্ট দিলাম। ওর পরেও ও আমার প্রতি রাগ করেনি। একটু অভিমানও করেছিল না। বরং ওকে বকা দিয়ে আমারি আরও মন খারাপ হয়েছিল। পরে সেদিন রাত ৮ টার দিকে বিবেকের তারনায় আর দংশনে থাকতে না পেরে ওকে আমি ফোন দেই। কথা বলি। ওকে আমি বোঝাতে সক্ষম হই কেন আমি রেগে যাই। ও সেদিন আমার দুঃখ গুলো আমার কথা গুলো বুঝেছিল। ওর প্রতি আমার ভালবাসা ও হয়ত অনুভব করতে পারে। ও হয়ত বুঝতে পারে আমার অনুভুতি গুলো। ও আমাকে বলেছিল ও আমাকে ফিল করতে পারে। তাহলে…….এখন……কেন ও আমার সাথে এমন করছে। আমি কষ্টে আছি ওর সাথে কথা না বলতে পেরে। ওকি টা বুঝতে পারছে না? আল্লাহই জানেন ও আমাকে ওর নতুন ফোন নাম্বার থেকে কবে ফোন করবে। আমি একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। আমি ওকে কখনও দেখিনি। আমি জানিনা ও সত্যি কেমন, কে ও, আদৌ ও আমাকে মন থেকে ভালবাসে কিনা। তবে আমার ঈশ্বর জানেন আমার মনে কি আছে। আমি ওকে কতটা ভালবাসি টা শুধু আমার আল্লাহই জানেন।

প্রায় ছয় মাস হয়ে গেছে নিপার সাথে কোন যোগাযোগ নেয়। আমার মন আমাকে এই ছয়টা মাস নানা ভাবে শাসন করেছে। ওর ঠিকানাও জানিনা যে ওর সাথে গিয়ে দেখা করবো। বন্ধুদের কথা টা জানাতে সবাই বলতে লাগল, ও আমাকে ব্যবহার করে মজা নিয়েছে। কথা গুলা শুনে আমার গা জ্বালা দিয়ে উঠত। কিন্তু বন্ধুদের কিছু বলতাম না। শুধু নিরবে সব শুনতাম। কিন্তু মন থেকে মেনে নিতে পারতাম না। এখনও পারিনা। একটি ঘটনা বলে রাখি, এর আগে নিপা আর আমি যে ফেসবুক একাউন্ত থেকে চ্যাট করতাম সেটাতে আর করিনা। আমি ওকে একটা নতুন একাউন্ত খুলে দেই। তার নাম ছিল নীলপরি নিপা। নতুন একাউন্ত খুলে দেবার কারণ ছিল ওর এক কাজিন। ওকে ওর যে কাজিন ফেসবুক খুলে দিয়েছিল তার পাসওয়ার্ড আর ইমেইল আইডি তার কাছে ছিল। তাই সে যে কোন সময়ে নিপার আকাউন্ত এ ঢুকে আমার দেয়া ম্যাসেজ গুলো দেখত আর নিপাকে ব্ল্যাকমেইল করত। নিপা আমাকে ঘটনাটা জানায়, ফলে আমি ওকে নতুন একাউন্ত খুলে দেই। ও সেখান থেকেই তারপর আমার সাথে যোগাযোগ করত। রাত ১২ টার পর ও আর আমি যখন মোবাইলে কথা বলতাম তখন ওর ঐ ভাই ওকে ফোন করত আর বিরক্ত করত। পরে একদিন নিপা আমাকে বলল ওর ঐ ভাই নাকি ওর মানে নিপার বাবাকে সব বলে দিয়েছে। ফলে নিপার ফেসবুকে বসা বন্ধ হয়ে গেলো। কিন্তু মোবাইলে ও আমার সাথে যোগাযোগ রাখত। কিছুদিন আগে দেখি নিপা আমাকে হটাৎ ফেসবুকে একটা মেসেজ দিয়েছে আমি ওকে যে আইডি টা খুলে দিয়েছিলাম সেখান থেকে। ও লিখেছে “কেমন আছ তুমি” আমি ওকে জানালাম ওকে ছাড়া আমার যেমন থাকবার কথা তেমনই আছি। এর পর আমি ওকে অনুরোধ করলাম জাতে ও আমার সাথে যোগাযোগ করে। এর পর আবার এক মাসের বিরতি। এক মাস পরে সেদিন ও আমাকে আরেকটা মেসেজ দিয়েছে। সেখানে ও আমাকে লিখেছে,”আমার বিয়ে হয়ে গেছে” ।

 

শুভ্র নীল

Comments