আমড়ার কত গুণ


দেশীয় ফলগুলোর মধ্যে আমড়া খুবই পরিচিত ফল। এটি সহজলভ্য এবং দামেও বেশ সস্তা।

.

আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় আমড়া ফল এবং আমড়াগাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ গাছের পাতা, ছাল, শিকড় ও বীজের নানা রকমের ঔষধি গুণ আছে। তাই একে প্রাকৃতিক ওষুধও বলা হয়ে থাকে।

পুষ্টিতথ্য

আমড়ার শতকরা ৬৫-৮৫ ভাগ জলীয় অংশ। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় থাকে ০.৬ গ্রাম আমিষ, ০.২ গ্রাম স্নেহ, ৮-১০.৫ গ্রাম সুক্রোজ বা শর্করা, ৬.৮ গ্রাম ভিটামিন-সি, ০.৭ গ্রাম আঁশ বা ফাইবার ও ৫.৭ গ্রাম ক্যালসিয়াম। সেই সঙ্গে ভিটামিন-এ, আয়রন ও নিয়াসিনও রয়েছে অল্প পরিমাণে।

স্বাস্থ্যতথ্য

এই ফল কম খাদ্যশক্তিসম্পন্ন এবং ভিটামিন-সি-এর উৎস হওয়ায় বেশি পরিমাণে খাওয়ায় বাধা নেই এবং এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

ডায়াবেটিস রোগে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে এটি কার্যকার।

ডায়রিয়াসহ পেটের অন্যান্য পীড়া নিরাময়ে আমড়া গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহৃত হয়।

আমড়া গাছের ছালে ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমণ প্রতিহত করার উপাদান রয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই বীজ উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ভিটামিন-সি বেশি থাকায় এই ফল সাধারণ সর্দি-কাশি নিরাময়ের জন্য উপকারী।

আমড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ক্যানসার নির্মূলে সাহায্য করে।

ঔষধিগুণ

আমড়াগাছের পাতা থেকে তৈরি চা জ্বর ও ব্যথা নিরাময় করে।

এ ছাড়া পাতা থেকে তৈরি চা হজমে সাহায্য করে।

আমড়ার পাতা ও শিকড় ঘা জনিত ক্ষত নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।

গাছের ছাল চর্মরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এই গাছের ফুল হৃদ্‌রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে।

আমড়ার পাতা কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।

হারবাল মেডিসিনে সন্তান ডেলিভারি হওয়ার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়কার ব্যথা প্রশমনে আমড়াগাছের পাতা এবং এর বাকল ব্যবহার করা হয়। সেই সঙ্গে শিশুর জন্ম-পরবর্তী জরায়ুর ও মূত্রনালির ইনফেকশন নিরময়ে আমড়া পাতা ও বাকলের ব্যবহার বহুল পরিচিত।

সতর্কতা

গর্ভবতী এবং যে মায়েরা গর্ভবতী হতে চান, তাদের এই ফল এবং গাছের বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত বলে ধারণা করা হয়। কারণ এতে গর্ভনিরোধক উপাদান রয়েছে।

ব্যবহার

কাঁচা অথবা পাকা আমড়া ফল হিসেবে খাওয়া যায়। এ ছাড়া আমড়া দিয়ে আচার ও জেলি তৈরি করেও খাওয়া যেতে পারে। অনেকে আমড়ার জুস তৈরি করে তার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেয়ে থাকে। চা তৈরি করতে চাইলে আমড়াগাছের পাতাকে আগে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিয়ে পরে গুঁড়ো করে ব্যবহার করতে হবে। আমড়াগাছের পাতাকে সেদ্ধ করে তরল অংশটুকুকে লোশন ও প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকে ব্যবহার করা যায়। 

337 Visualizações

Comentários