বউ এর সাথে অনেক দিন পর বের হইলাম.. আমি বের হইতেই চাচ্ছিলাম না, বউ আমাকে জোর করে ওয়াশ রুম থেকে বের করছে.. ভাবছিলাম গরম পানি দিয়ে আরো কিছুক্ষণ গোসল করবো...খুব আরাম লাগছিলো কিন্তু... জোর কইরা গোসল করতে ঢুকছি.. নতুন বউ ত তাই লজ্জায় কিছু কইতেও পারে না.. আমিও লজ্জায় কিছু কই না.. পরে নিজের বিবেক কে মাটি চাপা দিয়ে আমি গোসল করে বউ কে নিয়ে বের হইছি... ভাবছেন আমরা কই যাচ্ছি..? আরে ডাক্তার কাছে... সুখবর এর জন্য না.. গতকাল রাতে বাসি চটপটি খাইয়া পেট খারাপ হইছে আমার.. আমি গোসল করতে ঢুকে সেই জন্যই বের হইতে দেরী হইতেছিলো.. ঘটনা বুঝার চেষ্টা করেন... ইহা জাতীয় আবেগের প্রশ্ন.. বউ আমার চটপটির পাগল.. কিন্তু আমার পেটে যে চটপটি সয় না সেটা বুঝলাম রাতে বাসায় আসার পর... পেটে ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, শাইলা, রোকেয়া রোয়ানু, সুলতানা সব শুরু হইয়া গেছে... যেহেতু চটপটি মেয়েদের খাবার তাই আমার পেটেও ঘূর্ণিঝড় শুরু হইছে সব মেয়েদের নামে... অনেক কষ্টে পেট চাইপা ধইরা রিকশায় বসছি.. বউ কে বলছি তোমারে নিয়া মার্কেটে যামু চলো... খুশিতে আপনাদের ভাবী কপালে টিপ, চোখে কাজল, মশারী সিস্টেমের হাতা ব্লাউজ, সবুজ শাড়ি পইরা বের হইছে... ওর সাজগোছ করতে করতে প্রায় আধা ঘন্টা.. এর মধ্যে আমি দুই বার গোসলের নাম দিয়া ওয়াশ রুমে গেছি... এতো চাপা কষ্ট আর বেদনার মধ্যেও বউ এর রূপের প্রশংসা করতে ভুললাম না.. - বাবু কলিজা বউ আমার..? বউ মুখে শাড়ির আচল দিয়ে একটা লজ্জার ভেটকি দিয়া কইলো, বলেন.. আমি বললাম, তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগতেছে... শাড়িতে খুব মানাইছে.. মার্কেট গেলে এমন শাড়ি আরেক টা কিননা দিবো আজ.. সে বলে, যাহ আপনি পারেনও.. শুধু পাম দেয়.. পেটের ব্যথায় আমার চোখে পানি আইসা গেলো.. বউ আমার দিকে তাকাই ভাবলো আমি ওর কথায় কষ্ট পাইছি খুব... ও বলে, ওমা একি আপনি কাঁদছেন কেনো.. আমি ত এটা লজ্জা পাইয়া বলছি.. আচ্ছা সর্যি আর বলবো না...এইবার ত হাসেন... আমার পেট খারাপ এটা ওরে লজ্জায় কইতেও পারতেছি না, এর মধ্যে আবার হাসতে ও কয়.. দুনিয়ার সব শক্তি দিয়ে মুখে অনেক কষ্টে একটা ভেটকি দিয়া হাসি দিলাম... রিকশায় মন টা খুব আনচান করতেছে.. মন টাকে অন্যদিকে করায় অনেক চেষ্টা করলাম.. অন্য সময় শুধু সুন্দরী মেয়ে দেখি আজকে শুধু পাবলিক টয়লেট দেখতেছি... ওই যে কথায় বলে শরীর ভালো না থাকলে স্বর্গে গেলেও অস্বস্তি লাগে.. আমার হইছে ওই অবস্থা.. প্রথমে শাড়ির দোকানে গেলাম.. বউ শুধু একটার পর একটা শাড়ি দেখে.. আমি পাঙাশ মাছের মতো চেয়ারে কেচকি মাইরা বইসা রইছি.. নিজেরে খুব অসহায় লাগতেছে.. মনে মনে চটপটির মাম্মিকে ড্যাডি বলে গালি দিলাম.. একটা শাড়ি আমাকে দেখাই বউ বললো, - ওগো দেখো না এই শাড়িটা সুন্দর না...? - হ্যা অনেক সুন্দর.. নিয়া নেও.. দেরী কইরো না বেশি.. আমার আর সহ্য হচ্ছে না.. - কি হইছে তোমার..? শরীর খারাপ..? - না আসলে শাড়িটা বেশি সুন্দর ত, কিনার জন্য আমার তর সইছে না.. তাই বললাম... আমার পছন্দ হইছে শুনে বউ দামাদামি করতে লাগলো.. এই ফাঁকে আমি দোকানদার কে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই ওয়াশরুম কই আছে..? বউ কয়, 'আজকে না দুই বার গোসল করছ..এখানেও কি গোসল করবা নাকি..?' কথাটা শুইনা ইচ্ছে করছে ব্লু হোয়েল গেইম টা খেইল্লা মইরা যাই... আমি কিছু না বলে বউ কে মানিব্যাগ টা দিয়া দোকান থেকে বাহির হই গেলাম... কোন মতে দৌড়াই মার্কেটের নিচের তলায় আসি ওয়াশ রুমে গেলাম... ওয়াশরুমে প্রায় ৫ মিনিটের স্নায়ুযুদ্ধ যুদ্ধ শেষে বাহির হইয়া শাড়ির দোকানে আসলাম.. দেখি বউ এর হাতে ৪ টা শাড়ির প্যাকেট.. দুই জোড়া জুতার প্যাকেট.. আরেকটা প্যাকেটে গয়না... আমি ৫ মিনিট দেরীতে আসাতে এই অবস্থা... বউ আমাকে দেখে বললো.. - ওগো সবুজ শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে এগুলো কিনছি.. আমার পেটের চাপ মাথায় চইলা গেলো..ওর থেকে মানিব্যাগ টা হাতে নিয়া দেখি ৫০ পয়সার দুইটা কয়েন ছাড়া মানিব্যাগে আর কিছুই নাই.. পেট খারাপের জন্য ওষুধ কিনবো যে সেই টাকাও নাই... এর থেকে আমরা কি বুঝলাম, দুনিয়া উল্টাই যাক, মেয়েদের হাতে মানিব্যাগ দিবেন না... [কাল্পনিক গল্প]...