একটি শিক্ষনীয় গল্পঃ
ইরাকের বিখ্যাত আলেম মালেক বিন দিনার।
একবার এক বিশাল মাহফিলে বক্তব্য দিতে দাড়াতেই এক শ্রোতা বলে উঠলেন,
আপনার বক্তব্য শুরু করার আগে একটা প্রশ্নের
উত্তর দিন ?
মালেক বিন দিনার প্রশ্ন করার অনুমতি দিলেন।
বয়স্ক শ্রোতা বললেন, আজ থেকে দশ বছর আগে আপনাকে মাতাল অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি,
আপনি সে অবস্থা থেকে কিভাবে ফিরে এলেন ?
এবং ওয়াজ করার জন্য এখানে এলেন ?
মালেক বিন দিনার কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রইলেন।
তারপর বললেন,ঠিক বলেছেন।আমিই সেই ব্যক্তি।
শুনুন তাহলে আমার কাহিনীঃ-
> এক কদরের রাতে মদের দোকান বন্ধ ছিল
দোকানীকে অনুরোধ করে এক বোতল মদ কিনলাম বাসায় খাবো বলে এই শর্তে।
বাসায় ঢুকলাম। ঢুকেই দেখি আমার স্ত্রী নামাজ
পড়ছে। আমি আমার ঘরে চলে গেলাম এবং
বোতলটা টেবিলে রাখলাম।আমার তিন বছরের শিশু মেয়েটা দৌড়ে এলো,টেবিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে মদের বোতল মাটিতে পরে ভেঙ্গে গেল।
অবুজ মেয়েটি খিলখিল করে হাসতে লাগল।
ভাঙ্গা বোতল ফেলে দিয়ে আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
সে রাতে আর মদ খাওয়া হলোনা।
পরের বছর আবার লাইলাতুল কদর এলো।
আমি আবার মদ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। বোতলটা টেবিলে রাখলাম।হঠাৎ বোতলটার দিকে
তাকাতেই কান্নায় বুক ফেটে গেল।
তিন মাস হলো আমার শিশু কন্যাটি মারা গেল।
বোতলটা বাইরে ফেলে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
স্বপ্নে দেখছি এক বিরাট সাপ আমায় তাড়া করছে। এতো বড় সাপ আমি জীবনেও দেখিনি।
আমি ভয়ে দৌড়াচ্ছি। এমন সময় এক দুর্বল বৃদ্ধকে দেখলাম। বৃদ্ধ বলল,
আমি খুব দূর্বল এবং ক্ষুধার্ত। এই সাপের সাথে
আমি পারবনা। তুমি এই পাহাড়ের ডানে উঠে যাও।
পাহাড়ে গিয়ে দেখি দাউদাউ আগুন জ্বলছে। আর পিছনে এগিয়ে আসছে সাপ।
বৃদ্ধের কথা মতো ডানে ছুটলাম।দেখলাম সুন্দর
একটা বাগান। বাচ্চারা খেলছে।
গেইটে দারোয়ান।দারোয়ান বললঃ-
বাচ্চারা দেখতো এই লোকটিকে ?
একে সাপটা খেয়ে ফেলবে নয়তো আগুনে ফেলে দিবে।দারোয়ানের কথায় বাচ্চারা ছুটে এলো।
তার মাঝে আমার মেয়েটাও আছে।
মেয়েটা আমার ডান হাত জড়িয়ে ধরে বাম হাতে থাপ্পর দিয়ে সাপটিকে দূরে ফেলে দিলো।
অমনেই সাপ চলে গেল। আমি অবাক হয়ে বললামঃ-
মা তুমি এতো ছোট ! আর এতো বড় সাপ তোমায় ভয় পায় ?
মেয়ে বললঃ আমি জান্নাতি মেয়ে। জাহান্নামের সাপ আমায় ভয় পায়।বাবা! ঐ সাপকে তুমি চিনতে পেরেছো ?
আমি বললামঃ না মা।
আমার মেয়ে বললঃ বাবা!! এতো তোমার নফস।
নফসকে তুমি এতো বেশি খাবার দিয়েছ যে সে
আজ এতো বড় এতো শক্তিশালী হয়েছে।
সে তোমাকে আজ জাহান্নাম পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে এসেছে।মেয়েকে বললামঃ
পথে এক দূর্বল বৃদ্ধ তোমাকে এখানে আসার পথ বলে দিয়েছে সে কে ?
মেয়ে বললঃ তাকেও চিননি ? সে তোমার রুহ।
তাকে তো কোন দিনও খেতে দাওনি। সে না খেয়ে এতোই দূর্বল হয়ে পড়েছে যে,কোন রকম বেচে আছে। আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
সেই দিন থেকে আমি আমার রুহকে খাদ্য দিয়ে যাচ্ছি আর নফসের খাদ্য একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছি। চোখ বন্ধ করলেই সেই ভয়াল রুপটি দেখতে পাই আর দেখি রুহকে। আহা! কতো
দূর্বল হাটতে পারেনা। ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন মালিক বিন দীনার।।
তাই আসুন, নিজের নফসকে হেফাজত করি।
নয়তো চিরস্থায়ী হবে জাহান্নাম। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তওফিক দান করুন। আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।
Sabuj Hasan
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Md Jahidul Islam Shakil
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Tushar Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Tushar Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Tushar Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Tushar Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
ফাতেমা আক্তার
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?