Translate   4 years ago

দ্যা ডেথ অফ ফিক্সো গেমস



জাহিদ একটি নতুন গেমস পার্লার খুলেছে।সে ১২টা গেমস সেট এনেছে।সবগুলো গেমস সেটই খুব ভালো ছিলো কিন্তু তার মাঝে একটি গেমস সেট ছিলো।যেটা সবগুলো গেমস সেট থেকে আলাদা ছিলো।গেমস সেট গুলো যেদিন পার্লারে আনা হল...

"সব গুলো ঠিক মত সেট কর।কোথায় যেনো কোনো ত্রুটি না থাকে"

"জ্বী স্যার,আপনি যেভাবে বলবেন"

১২টা গেমসের মাঝে যে গেমসটি আলাদা ছিলো সে গেমসটা নাম ছিলো ফিক্সো।

"এই শুনো ফিক্সো গেমসটা পার্লারে সবার সামনে রাখবে"

"আচ্ছা স্যার।কিন্তু স্যার একটা কথা ছিলো"

"কী কথা"

"এই গেমসটার নাম ফিক্সো কেনো?"

"এই গেমসটা ফিক্সো নামের একজন লোক বানিয়েছে।তার তার নামানূসারে গেমসটির নাম ফিক্সো রাখা হয়েছে"।

ফিক্সো গেমসটি যেনো সবগুলো গেমস থেকে অন্যন্য ছিলো।পার্লার যেদিন থেকে চালু হয় সেদিন থেকে অনেক মানুষ সেখানে গেমস খেলতে আসে।প্রথম দিনে পার্লারটি সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে গেলো।সাফা ছিলো জাহিদের স্ত্রী।প্রথম দিনেই সাফার নজর কেড়ে নিলো ফিক্সো গেমসটি।

"জাহিদ,ঐ গেমসটির নাম কী?"

"ফিক্সো"।

"গেমসটা খুব ভালো লাগছে আমার।আমি খেলবো"

"আচ্ছা,চলো"

ফিক্সো গেমসটা সাফাকে কেমন যেনো আকৃষ্ট করছিলো।রাত ১টা বেজে গেলো।সবাই গেমস পার্লার থেকে চলে যাচ্ছে।কিন্তু সাফা কিছুতেই যেতে চাইলো না।সে আরো খেলতে চাইলো।এক পর্যায়ে জাহিদ রেগে গেলো।

"সাফা, এখন চল অনেক রাত হয়ে গেছে।"

"আমার না গেমসটা অনেক ভালো লাগছে।আরেকটু"।

"সাফা,পার্লার বন্ধ করে দিবো।আসো এখন "।

"আচ্ছা"।

পার্লার বন্ধ করে দিলো।সাফা আর জাহিদ বাসায় চলে গেলো।কিন্তু সাফার আকৃষ্ট যেনো কোনো ভাবেই কমছিলো না।সেদিন সাফা কেমন যেনো মন মরা হয়ে গেলো।জাহিদ প্রথমে বিষয়টা খেয়াল করেনি।রাতে যখন জাহিদ আর সাফা ঘুমাচ্ছিলো সাফা স্বপ্ন দেখছিলো কে যেনো কান্না করছিলো।কোনো মেয়ে কান্না করছিলো।হটাত কএ সে দেখলো যে সেই ফিক্সো গেমসটি একা একাই চলছে।কান্নার আওয়াজ সেই গেমসের ভিতর থেকে আসছিলো।সে দেখলো গেমসের ভেতর একটা ভয়ংকর চেহারা।সাফা চিৎকার করে উঠলো।

"কী হয়েছে তোমার।তুমি চিৎকার করলে কেন?"

"ঐ যে মেয়েটা।সে কাদছিলো"।

"কোন মেয়েটা ।তুমি স্বপ্ন দেখেছো"।

"ওহ”

“ঘুমিয়ে পড়ো”।

সকালে সাফা রান্না ঘরে নাস্তা বানাচ্ছিলো’

“সাফা আমার অনেক দেরি হয়ে গেছে।এবার আমাকে গেমস পার্লারে যেতে হবে।”

সাফা আনমনা হয়েছিলো।

“সাফা তুমি আমার কথা শুনতে পারছো”।

“হ্যা,হ্যা বল।”

“কি হয়েছে তোমার?কালকের থেকে দেখছি তুমি কেমন যেনো করছো”

“না কিছু না,আচ্ছা তুমি যাও”

জাহিদ চলে গেলো।বাসায় সাফা একা ছিলো।সে রান্না ঘরে কাজ করছিলো,ঠিক এমন সময় সে আবার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলো।

“কে কাদছে,কেউচকি আছে এখানে?”

সাফা এভাবে হাটতে হাটতে ড্রইং রুমে গেলো।সেখানে টেবিলে একটা মেয়েকে দেখতে পেলো।

“কে তুমি?আর তুমি আমার বাসায় ঢুকলে কিভাবে?”

মেয়েটা তার মুখ দেখালো সাফাকে।মেয়েটার চোখ দুটো দিয়ে রক্ত পড়ছিলো।সাফা চিৎকার করে উঠলো আর অজ্ঞান হয়ে গেলো।সাফা যে মেয়েটাকে দেখেছিলো সেটা একটা মেয়ের আত্মা ছিলো।

“ডাক্তার সাফার কি হয়েছে?”

“তেমন কিছু হয়নি।কিন্তু মনে হচ্ছে কিছু দেখে ভয় পেয়েছে।তাই এমন হয়েছে।আমি কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে যাচ্ছি।এগুলো নিয়মিত তাকে খাওয়াবেন”।

“ধন্যবাদ আপনাকে”।

সাফাকে বেডরুমে একা রেখে জাহিদ ডাক্তারকে এগিয়ে দিতে গেলো।সাফা তখন আবার সেই মেয়েটার কান্না শুনতে পেলো।

“কে এখানে,কে তুমি?”

আত্মাটা তার বীভৎস চেহারা নিয়র সাফাকে ডাক দিলো।

“হা হা হা,আমি হলাম মায়া।এটা ডেথ অফ ফিক্সো গেমস।যেই এই গেমসটা খেলে সে আমার বশে চলে আসে।তুমি এখন আমার।”

“না………”

আত্মাটা সাফার শরীরে ঢুকে পড়ে।

“কাউকে ছাড়বো না আমি।এই গেমসটার জন্য আমাকে আর আমার স্বামীকে যারা মেরেছে তাদের কাউকে ছাড়ব না”।

সাফা গেমস পার্লারে গেলো।

“ক ব্যাপার সাফা তুমি হঠাত এখানে।”

“তুমি আর রাহুল মিলে আমাকে আর আমার স্বামীকে মেরেছিলে এই গেমসটার জ্ন্য।”

“মানে,কে তুমি”?

“আমি মিস্টার ফিক্সো স্যার এর স্ত্রী।”

“নাগ এটা হতে পারে না।আমি তোমাকে মেরে ফেলেছিলাম,তুমি ফিরে আসতে পারো না”।

“আমি ফিরে এসেছি।রাহুলকে তো অনেক আগেই আমি তার পাপের শাস্তি দিয়ে দিয়েছি।এবার তোর পালা।”

“না……কেউ বাচাও,বাচাও আমাকে”

“আজ এখানে তোকে কেউ বাচাবে না।তোদের মত লোভী মানুষের বেচে থাকার কোনো দরকার নেই”।

জাহিদ দৌড় দিলো।কিন্তু পার্লারের গেট একে একাই বন্ধ হয়ে গেলো

“দরজাটা কেউ খুলো।”

“সেদিন তুই কি আমাদের বাচতে দিয়েছিলি?”

“আমাকে ক্ষ্মা করে দাও।আমার ভুল হয়ে গেছে।”

মায়া জাহিদের গলায় একটা রশি বেধে দিলো।তারপর তাকে টানতে টানতে উপরে নিয়ে যায়।জাহিদ শ্বাস নিতে পারে না।এক পর্যায়ে সে মারা গেলো।

“আজ পাপের বিনাশ হয়েছে।আমি আমার প্রতিশোধ পূর্ন করেছি।”

মায়া সাফার দেহ ত্যাগ করে বের হয়ে যায়।

“আমি কোথায়?আমি গেমস পার্লারে কিভাবে এলাম।আ…… তুমি তো সেই মেয়েটা।তুমি আমাকে এখানে এনেছো।জাহিদ কোথায়?”

“মেরে দিয়েছি।”

“না…এটা হতে পারে না।কেনো মারলে ওকে?”

“এই যে ফিক্সো গেমস টা দেখছ,এটা আমার স্বামী ফিক্সো বানিয়েছে।এটা খুব উন্নত মানের গেমস।সারা বিশ্বে এমন গেমস নেই।তোমার স্বামীর লোভ ছিলো এই গেমসটির উপর।তাই তোমার স্বামী আমাকে আর ফিক্সোকে হত্যা করে এই গেমসটি চুরি করে।তাই আমি আমাদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছি।”

মায়া গেমসটির ভেতর ঢুকে পড়লো।সাফা তাকিয়ে দেখলো চোখের নিমিষেই গেমসটা কোথায় যেন হারিয়ে গেলো।লোভে পাপ,পাপে মৃত্যু।যে লোভ করবে তার ধ্বংস অনিবার্য।

image
  • Like
  • Love
  • HaHa
  • WoW
  • Sad
  • Angry