বাবা
আজ বাসায় ফিরতে অনেক দেরি হয়ে গেল। বাসায় ঢুকতে মনে হল সবাই ঘুম, কিন্তু কিছুক্ষন আগে বাবা ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করলো কই আসিস, দেরি হবে। এই কাজটা সবসময় বাবাই করে থাকে। আজ কিন্তু রাতটা একটু বেশি করে ফেলছি, কলিং বেল দিতে ভয় হচ্ছিল, দেখলাম বাবা বসে আছে , বলল খেয়েনি, বললাম ইচ্ছা নাই। তারপর জোর করে টেবিলে বসালো তাই খেতে হল, অনেকক্ষন গল্প করে ঘুমাতে গেলাম। এখন ও অনেক রাত করে বাসায় ফিরি কেউ আমাকে আর বলে না কই বাবা? এখন অনেক রাত না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু সবসময় বাসায় ফিরে মনে পড়ে বাবার কথা।
আজ বাবা নেই ৫ টি বছর হল, এই দিনে আমার বাবা ২০১৪ সালে ১৫ জুন আমাদের ছেড়ে চলে যান না ফেরার দেশে । বাবা ছাড়া জীবন যে এমন হবে কখন ও ভাবিনি। আগে কোন কিছু হলে সাহস ছিল বাবা একটা পথ দেখাবে অথবা তার অবিজ্ঞ ঝুরি হতে কিছু গল্প শোনাবে। অনেক সময় বকা ও দিতেন। আমার একটু রাগ বেশি, কথায় কথায় রাগ করতাম, এখন ও এই রকম ই আমি কিন্তু অনেক তাই পরিবর্তন হয়েছে। অনেক কিছু নিয়ে অনেক সময় অযথা রাগা রাগি করতাম, অবিমান করে অনেক দিন কথা বলি নাই। আমি কিন্তু আগ বারিয়ে কথা বলতাম না। বাবাই কথা বলতো এসে। কেন যে এটা করতাম ...
নানা বিষয় বাবার সাথে আড্ডা হতো, দেশের নানা বিষয় অথাবা এলাকার নানা বিষয়, আড্ডা ছলে অনেক হাসা হাসি হতো, বাবা ছিলেন আমার বন্ধুর মতো । আমি বাসায় ফিরলে আমার রুমে আসতেন এসে কত না কথা । বাবা সাথে মায়ের মাজে মাজে কথা বন্ধ থাকতো সেই ক্ষেত্রে আমার মাধ্যমে কথা বলতেন বাবা মায়ের সাথে। বুজাতাম যখন তখন চুপ করে শুনতেন কথা গুলা। তারপর আস্থে আস্থে সব ঠিক হয়ে যেত। এখন আর অমন করে আড্ডা তা হয় না কারও সাথেই, অনেক বার চেষ্টা করছি সেই রকম আড্ডার, কিন্থু আড্ডার প্রান পাই না। বাবা সাথে আড্ডা টা খুব মিস করি।
বাবা কি পছন্দ করতো সে গুলা এখন খেতে গেলে খুব মনে পড়ে। আমেরিকান বার্গার অনার খুব পছন্দ ছিল। বাবার খুব খেতে পছন্দ করতেন। আর খাওয়ার স্টাইল ছিল অনেক মাজার। অনার খাওয়া দেখার মতো ছিল। সাধারণত ইলিশ মাছ খেতে খুব ভালবাসতেন , মাছের কাটা টা ছুটাতেন মাছটা পুরো মুখে দিয়ে পড়ে কাটা টা একবারে বের করতেন। আমি অনেক বার চেষ্টা করেছি হয়নি, এক বসায় অনেক খেতেন , এক কথায় ভোজন রসিক ছিলেন, আমি সব সময় এটা খুব এঞ্জয় করতাম।
বাবা মারা যান লিবারে রোগে , অনেকটা সময় কষ্ট করে। শেষ এর দিকে একদিন বসে কানো যেন বাবাকে কাছে গিয়ে বসলাম , বাবা তখন হাল্কা তন্দায় আমি ওনাকে ডাকলাম বাবা... বাবা... উনি উত্তর দিলেন একই সুরে বাবা... আবার বললাম বাবা বাবা... ও বাবা... অনেক বার এই কাজটা করলাম (আমার কেন যেন মনে হচ্ছিল এটাই শেষ বার বাবা শব্দ টা মুখে উচ্চারন করা, এবং মনে মনে আল্লাহ কে বলছিলাম টা যেন না হয়) ওটা আর হইয়নি ।
বাবা শব্ধটা যে পৃথিবী সবচেয়ে মধুর তা এখন বুছছি হারে হারে, কাউকে যে আপন করে এই শব্দটা বলা যায় না শত চেষ্টা করে ভিতর হতে আসে না কে জানতো । আমার এখন অনেক হিংসে হয় যাদের বাবা বেচে আছেন। আমার বাবা কেন বেচে নেই। পরোক্ষন বলি কত ভাগ্য বান তারা। আসলে আমরা দাত থাকতে দাতের মর্যাদা বুজি না। এটাই সমস্যা।
অনেক টা সময় বাবা ছাড়া ... আরও অনেক পথ যেতে হবে । অনেক দিন বাবা শব্দ টা উচ্চারন করা হয় না। আমি গাড়ী নিয়ে চলে যাই নিজ্জন এক নদীর পার, চিৎকার করে বাবা বলে ডাকি। অনেক চিৎকার ... বাবা বাবা ও বাবা... আমি কান পেতে শুনার জন্য অপেক্ষা করি জি বাবা। এটা হয়তো কোন দিন আর হবে না। অনন্তকাল অপেক্ষা করতে হবে সেটার জন্য।
ভাল থাকো অনেক ভাল...
Robiul Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Robiul Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Robiul Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Robiul Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Md Nazrul Islam
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Shahadat Hossain
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?