ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে আরো যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখবেন
আউটসোর্সিং তালিকায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার আছে আমাদের দেশে। তাদের মধ্যে পাঁচ লাখ কাজ করেন মাসিক আয়ের ভিত্তিতে। এই ফ্রিল্যান্সারদের অধিকাংশ যদিও পুরুষ তবে নারী ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
বিজ্ঞাপন
আগ্রহ থাকলে যে কেউই জীবনের যেকোনো সময় ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারে। এটা ফ্রিল্যান্সিংয়ের অন্যতম ভালো একটা দিক। ইনকাম করা ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন সম্ভব হয়।
ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে নিজেকেই নিজের বস হতে হবে। দিনের ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে কখন কী করবেন ঠিক করে রাখতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে আরো যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখবেন:
#১. ফ্রিল্যান্সিং করে সফল হতে সময় লাগে
ফ্রিল্যান্সিং এক ধরনের স্বাধীন পেশা। যদি আয় করার জন্যে এই পেশা বেছে নিয়ে থাকেন, তাহলে প্রথম থেকে অনেক উপার্জন হবে এমন আশা রাখবেন না। আপনি কতটা দক্ষ ফ্রিল্যান্সার, সেটা অনেক কিছুর ওপরে নির্ভর করে। যেমন, টাইম ম্যানেজমেন্ট, ক্লায়েন্টদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ অথবা অর্থনৈতিক পরিকল্পনার উপরে নির্ভর করছে এই ক্যারিয়ারে আপনি কতটা সফল হবেন।
তাই যদি কাজে দক্ষ ও সৃজনশীলও থাকেন, ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলে আরো নতুন অনেক বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেখানেও সময় লাগবে। তাই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরুর থেকে অন্তত ৩ মাস সময় নিজের হাতে রাখুন। এই ৩ মাস পরিশ্রম করলেও কোনো ইনকামের আশা রাখবেন না। হয়তো আপনি প্রথম ৩ মাসের মধ্যেও আয় করে ফেলতে পারেন। তবে দীর্ঘমেয়াদে লক্ষ্য নির্ধারণ করলে এই ৩ মাস নিজের দক্ষতা বাড়াতে কাজে লাগান।
#২. আত্মনিয়ন্ত্রণ করার জন্যে নিজেকেই নিজের বস হতে হবে
ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিদিন কতটুকু শ্রম দিতে হয় সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুব কম। তাই নিজের তাগিদে অনেক শ্রম দেওয়ার ধৈর্য্য না থাকলে আপনার জন্য কোনো চাকরি করা ভালো। ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে বিভিন্ন দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে তখন আপনি সাধারণ চাকরির মতো অনেক সুবিধাই পাবেন না:
• ছুটি নেয়া
• ব্রেক নেয়া
• লাঞ্চের সময় ঠিক রাখা
• কখন কাজ বন্ধ রাখতে হবে, সেই সম্পর্কে নির্দেশনা পাওয়া
• মাসে কত টাকা আয় করছেন, সেই সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখা
এই বিষয়গুলির পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে আপনার।
#৩. মানসিক চাপের দিকে লক্ষ্য রাখুন
শুধুমাত্র স্ট্রেস বা মানসিক চাপের জন্যেই অনেকে ফ্রিল্যান্সিং ছেড়ে দেয়। কাজ করতে করতে কখন আপনি স্ট্রেসড হয়ে যাবেন, তা নিজেও বুঝতে পারবেন না। মানসিক চাপের কারণে আপনি আগের তুলনায় বদমেজাজী, ছটফটে বা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠতে পারেন। আর সাধারণত টাকাপয়সার ব্যাপারটাই বেশিরভাগ মানুষকে মানসিক চাপের মধ্যে রাখে।
তাই স্ট্রেস থেকে দূরে থাকতে আগে আপনাকে স্ট্রেসের অস্তিত্ব মেনে নিতে হবে। এরপরে আগামী কয়েক মাসের জন্য খরচের টাকা হাতে রাখতে হবে। আর বিশেষ করে প্রতিদিনের জন্যে একটা রুটিন ঠিক করে রাখতে হবে আপনাকে।
#৪. টাকাপয়সা সামলানোই সবচেয়ে বড় ব্যাপার
কাজে নামার আগে প্রতি মাসে মোটামুটি যত টাকা প্রয়োজন হয়, তা হিসাব করে রাখুন। এরপর প্রয়োজন মেটানোর জন্য কয়টা প্রোজেক্টের কাজ করতে হবে। টাকাপয়সা ম্যানেজের জন্য বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের অ্যাপ স্টোরে নানান ধরনের ফ্রি অ্যাপস রয়েছে। তবে অনেক ফ্রিল্যান্সারের মতে, কাগজ-কলমে হিসাব করাটাই সবচেয়ে কার্যকরী। এছাড়াও হিসাব করার জন্যে চাইলে আপনি মাইক্রোসফট এক্সেল এর স্প্রেডশিটও ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি কী কিনছেন বা কীসের পিছনে খরচ করতে যাচ্ছেন, সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করাটা তত গুরুত্বপূর্ণ না। বরং অপ্রত্যাশিত যেকোনো ধরনের খরচের জন্যে প্রস্তুত থাকাটাই আসল। অপ্রত্যাশিত ব্যয়ের মধ্যে কয়েকটা হতে পারে:
• ক্লায়েন্ট না পাওয়া
• হার্ডওয়্যার নষ্ট হয়ে যাওয়া
• পরিবারের কোনো জরুরি প্রয়োজন সামনে আসা
• ধার পরিশোধ করা
লিস্ট করতে থাকলে এই ধরনের কারণের অভাব হবে না। তাই জরুরি সময়ের কথা মাথায় রেখে সবসময়ই আর্থিক পরিকল্পনা ঠিক করে রাখুন।
#৫. ক্লায়েন্টদের কত চার্জ করবেন, সেটা কাজের পরিমাণের উপরে নির্ভর করে
ফ্রিল্যান্সাররা প্রথমদিকে সাধারণত যেই বিষয়টা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন তা হলো, কাজের জন্য কত টাকা পারিশ্রমিক চাইবো? ঘণ্টা অনুযায়ী, প্রজেক্ট অনুযায়ী নাকি কাজের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ক্লায়েন্টদের চার্জ করতে হবে, তা নিয়ে অনেকেই অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকেন। এই ধরনের সমস্যার সমাধানই নির্ভর করে মূলত একটা প্রশ্নের উত্তরের উপরে। সেটা হলো, বছরে কয়টা প্রজেক্টের কাজ করতে চান আপনি?
চাইলে নিজের পোর্টফোলিও ভালো করে বানাতে ছোটখাটো প্রচুর প্রজেক্টের কাজ করতে পারেন। আবার পার্সোনাল ব্র্যান্ড গড়ে তোলার জন্য কয়েক মাসে একটা বা দুইটা প্রজেক্টের কাজও চালাতে পারেন। অর্থাৎ, কাজ কতটুকু করছেন, তার উপরেই নির্ভর করছে আপনি ক্লায়েন্টদের কত চার্জ করবেন।
#৬. প্রথমে সফল মানুষদের অনুকরণ করুন
ফ্রিল্যান্সিং করা মানে একেবারে শুরু থেকে সবকিছু নিজেকেই করতে হবে, এমনটা না। এজন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করুন। আপনার কাজের ক্ষেত্র বা লাইফস্টাইলের পুরোটাই নিজের তৈরি করতে হবে না। আপনার আগেও প্রচুর ফ্রিল্যান্সার একই কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে তাদের দেখানো পথে হাঁটলে আপনার জীবন অনেকটাই সহজ হয়ে আসবে।
সফল ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে সাধারণ অনেক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করবেন। সেই বৈশিষ্ট্যগুলি নিজের মধ্যে আনার চেষ্টা করুন। আপনার কাজের ক্ষেত্রে যারা সেরা তাদের অভ্যাস, টেকনিক, শর্টকাট বা নিয়মনীতি অনুসরণ করুন। আসল কথাটা হলো, সফল মানুষেরা তাদের সফলতার সূত্র রেখে যায়। আপনাকে শুধু সূত্রটা খুঁজে বের করে অনুসরণ করতে হবে।
#৭. আগেই চাকরি ছাড়বেন না
ফ্রিল্যান্সিং করার কথা ভাবার সাথে সাথেই চাকরি ছেড়ে দেবেন না। বরং প্রাথমিক অবস্থায় চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করতে থাকুন। অবসর সময়ে কিংবা ছুটির দিনে ফ্রিল্যান্সিংয়ে দক্ষতা অর্জন করতে থাকুন। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন, ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে হলে জীবনে কী কী পরিবর্তন আনা লাগবে।
পরবর্তীতে ফ্রিল্যান্সিং করাটা নিজের লাইফস্টাইলের জন্যে উপযুক্ত মনে হলে পরে চাকরি ছাড়ুন। এছাড়াও কোনো চাকরি ছাড়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন, আপনার হাতে ২/১ মাস চলার মতো সঞ্চয় আছে কিনা।
ফ্রিল্যান্সিং করার আগে যা ভাববেন
এখন ফ্রিল্যান্সিং দারুণ আকর্ষণীয়। অনেকেই চাকরি না করে ফ্রিল্যান্সিং করার স্বপ্ন দেখেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ে একদিকে যেমন স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ থাকে তেমনি আয়ের পরিমাণও বেশি।
কাজের স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি কাজের স্থান ও সময়ের কোনো বাঁধাধরা নিয়ম থাকে না বলে অনেকেই এ পেশায় আসতে চান। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসার আগে এ ক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জগুলোও জানা থাকা জরুরি। একাকিত্ব, রাত জেগে কাজ করে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা, সামাজিক স্বীকৃতির আক্ষেপের মতো অনেক বিষয় এর সঙ্গে যুক্ত।
বেশির ভাগ ফ্রিল্যান্সার মনে করেন, অনেক সময় ক্লায়েন্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে হয় বলে ফ্রিল্যান্সারকে দিন-রাত পরিশ্রম করা লাগে। এ ছাড়া চাকরিতে নির্দিষ্ট বেতন থাকলেও ফ্রিল্যান্সিং কাজ সব সময় হাতে না–ও থাকতে পারে। কাজের জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা
করতে হয়। যাঁরা চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান, তাঁদের জন্য কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা জরুরি। জেনে নিন বিষয়গুলো:
একাকিত্বের সঙ্গী প্রয়োজন
মনে রাখবেন, ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে একাকী করে দেবে। আপনার জীবনযাপন অন্যদের চেয়ে আলাদা হয়ে যাবে। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হবে। রাতের বেলা জেগে কাজ করতে হবে। আপনার কাজে সহকর্মী না থাকায় নির্দিষ্ট সময় অফিসে যাওয়া লাগবে না। কাজের সময় তাই অফিসের পরিবেশ পাবেন না। তাত্ত্বিকভাবে এটা ভালো শোনালেও প্রকৃতপক্ষে আপনি একাকী হয়ে যাবেন। এই একাকিত্ব দূর করতে সাপোর্ট নেটওয়ার্ক থাকা জরুরি। এতে দিনের বেলা বা অন্য সময় গল্প-গুজব বা আড্ডা দিতে পারেন। তা না হলে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা জরুরি। কাজের সময় নির্ধারিত না থাকায় সকাল–বিকেল কাজ করা লাগতে পারে, এ কারণে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়।
নিজের অর্থের ব্যবস্থাপনা
যখন বড় কোম্পানিতে কাজ করেন, তখন অনেক জটিল অর্থনৈতিক বিষয় কোম্পানি ঠিক করে রাখে। বিশেষ করে বেতন ও ট্যাক্সের মতো বিষয়টি। যখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের মতো স্বাধীন কাজের সঙ্গে যুক্ত হবেন, তখন নিজের অর্থ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। সঠিক সময়ে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করার পাশাপাশি অর্থ জমানোর মতো বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া প্রয়োজন। চাকরি শেষে যেমন পেনশনের সুবিধা থাকে, তেমনি নিজের কাজের শেষ বছরান্তে যাতে অর্থ গচ্ছিত থাকে, সে বিষয়টিতে ফ্রিল্যান্সারকে গুরুত্ব দিতে হবে।
অসুস্থতার জন্য অর্থ সাশ্রয়
অসুস্থ হলে চাকরিতে ছুটি পাওয়া যায়। আপনার কাজের জন্য অসুস্থতাজনিত বিরতি বা বছর শেষে বেড়ানোর মতো সময় রাখবেন। একটা কথা মনে রাখবেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করলে তবে অর্থ পাবেন। যদি কাজ না করেন, তবে সে সময়গুলোতে আপনার অর্থ আসবে না। তাই ফ্রিল্যান্সিং বা স্ব–উদ্যোগে কাজ করার আগে থেকে অর্থ জমানোর অভ্যাস করা প্রয়োজন। অনেক সময় কাজ শুরু করার সময় হাতে অর্থ না–ও থাকতে পারে। কোন মাসে কত আয় করবেন, তারও কোনো বাঁধাধরা নিয়ম থাকে না। কোনো মাসে অনেক আয় আসতে পারে, আবার কোনো মাস একেবারে শূন্য যেতে পারে। তাই আয় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে একটা ভারসাম্য রাখা অবশ্যই উচিত। এ ছাড়া নিজের জন্য ছুটি রাখার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের দক্ষতা বাড়ান
যাঁরা নতুন কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন, তাঁদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস বেশ কঠিন। কাজ পাওয়া এখন অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে যাঁরা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত ও যাঁদের অনেক কাজদাতা আছে, তাঁদের জন্য সুবিধাও বেড়েছে। তাই যাঁদের ক্লায়েন্ট কম ও যাঁরা কাজ খুঁজছেন, তাঁরা অনলাইনে দারুণ পোর্টফোলিও তৈরি করুন। এ ছাড়া শুরুতে কঠোর পরিশ্রম করুন। নিজের সম্মান ও দক্ষতা অর্জন করুন। ক্লায়েন্টকে আপনার কাজ দিয়ে, যোগাযোগ দক্ষতা দিয়ে মুগ্ধ করুন। পেশাদার আচরণ করুন। তবে সবার আগে প্রয়োজন নিজের দক্ষতাকে প্রমাণ করার। আপনি যে কাজে দক্ষ, তা ভালোভাবে চর্চা করুন। আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ খুঁজে নিয়ে তা সম্পন্ন করে ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ইতিবাচক ফিডব্যাক নিন। এটাই আপনার উন্নতির চাবিকাঠি। যখন আপনি সফল হতে শুরু করবেন, তখন কোন সুযোগটি আপনার জন্য অধিক জুতসই, তা নির্বাচন করতে ভুলবেন না।
কাজ করুন দক্ষতা অনুযায়ী
আপনার দক্ষতা কি ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপযোগী? অনেকেই না বুঝে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে চান। মনে রাখবেন, এটা দক্ষ ব্যক্তিদের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। এ ক্ষেত্রে সীমিত দক্ষতা নিয়ে টিকে থাকা কঠিন। আপনি কাজের ক্ষেত্র নষ্ট করলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাই কাজ না জেনে এ ক্ষেত্রে আসা উচিত হবে না। বাড়িতে বসে কাজ করার বিষয়টি আকর্ষণীয় হতে পারে। তবে এ কাজ শুরুর আগে এ ক্যারিয়ারে আসার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন। ফাইবার, আপওয়ার্কের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর কারণে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি, যেমন ডিজাইন, মিউজিক ও অডিওর পাশাপাশি প্রোগ্রামিং ও টেক খাতে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ব্যাপক কাজের সুযোগ রয়েছে। তবে এ খাতে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবার আগে আপনি কোন খাতে ভালো করবেন, সেটি ভাবুন।
প্রয়োজন নিজস্ব প্রণোদনা
আপনি কি স্ব–উদ্যোগী? আপনার নিজের কাজ ঠিক রাখতে মোটিভেশন বা প্রণোদনার প্রয়োজন হবে। অনেক সময় ফ্রিল্যান্সিং খাতে কাজ করতে এসে ফ্রিল্যান্সাররা হতাশ হন। এমন সময়ে নিজের দায়িত্ব নিজেকে নিতে হবে। ফ্রিল্যান্সার মানে নিজের ব্যবসা, নিজেই ব্যবস্থাপক, নিজেই হিসাবরক্ষক। নিজের সঙ্গে মিটিং করতে হবে। সময়সীমার মধ্যে কাজ করার তাড়া থাকতে হবে। ক্রেতার প্রত্যাশা পূরণের তাড়া থাকতে হবে। অর্থাৎ, সব সময় নিজেকে কাজের চাপ, যোগাযোগের মতো বিষয়ে তটস্থ থাকতে হবে। তবে অনেক সময় হাতে কাজ না থাকতে পারে, তখন হতাশ হলে চলবে না। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি কাজে ওঠানামা থাকে। নিজেকে মোটিভেশন দিতে হবে। নিজের কাজের প্রতি সদিচ্ছা ও আত্মনিয়োগ আপনাকে এগিয়ে রাখবে। নিজের কাজে শৃঙ্খলা থাকলে, স্বাধীন ও নমনীয় সময়ে কাজ করার সুবিধাও নিতে পারবেন।