দাদাকে বললাম, 'দাদা তোমার বয়স কত? বললো ৯৬-৯৭ বছর!
বললাম আর কত বছর বাঁচতে চাও?
দাদা বললো, মৃত্যুকালে দাদার বাবার বয়স হয়েছিল ১৩০ বছর।এরপর আর কোন প্রশ্ন করার সাহস হলো না।
এবার বাড়ি থেকে ঢাকা আসার আগের দিনের ঘটনা। পাশে বসা ছিল দাদী।
দাদীকে দেখিয়ে দাদা বলল, ' ১৮ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলাম।
আজ প্রায় ১৮ বছর সংসার করতেছি তোর দাদীর সাথে।
৬ ছেলে ৬ মেয়ে ১ মেয়ে ২ বছর আগে মারা গেছে।বেঁচে আছে ১১ জন।
ছেলে মেয়ে হিসেবে মোট নাতি-নাতনি ৪০ জন সবাইকে নিয়ে অনেক ভালো আছি। তবে তোর দাদী কিন্তু আমার চেয়ে দুই বছরের বড়। কথা শেষ করে দাদা মুচকি মুচকি হাসে।
তালপাতার হাত পাখা দিয়ে বাতাস নিচ্ছিল দাদি।
হাতপাখা দিয়ে হালকা একটা খোঁচা দেয় দাদাকে। আমি তোমার বড় হলে আমার আগে তুমি বুড়া হইছো কেমনে?
দাদী দাদার দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে টিপে হাসেন দাদাও হাসেন আমি হা করে তাকিয়ে থাকি।
দেখি এগুলোই ভালোবাসা।সত্যিকারে ভালোবাসা।দাদার দিকে তাকালে প্রাইমারি স্কুল টা ভেসে ওঠে। স্যাঁতসেঁতে ধানী জমি এক পাশে মাটি ফেলে প্রথম প্রদিপ জেলে ছিলেন যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ।সে প্রতিষ্ঠানের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশ বিদেশ ।গ্রামের মসজিদ, আজান হয়, নামাজ হয়,দোয়া হয় দুই হাত তুলে মন প্রাণ খুলে, সেটারও প্রতিষ্ঠাতা। আম,জাম, কাঁঠাল, কলা কিংবা লেবু,নারকেল বাগান এর কথা মনে হয় মনে হয়।দাদা লাগানো গাছপালার হাজার হাজার কচিকাঁচা পাতাগুলো, প্রার্থনা করে প্রতিনিয়ত।মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা।উপরওয়ালার দয়া আর সবার দোয়া ও ভালবাসায় দাদার দীর্ঘ জীবনের কারণ। ১২ সন্তানের জননী, আমার দাদী চাচাতো - ফুফাতো মিলে আমরা চল্লিশটা ভাই বোন। দাদী আমাদের সবার শেকর, আগলে রেখেছেন আজও মায়া ছায়া আর মমতা দিয়ে। হাসি আনন্দ দিয়ে।
দাদা দাদী দীর্ঘ জীবন মধুর জীবন।